সামনেই মহারাষ্ট্রের নির্বাচন! তার আগে মাত্র কয়েকমাস আগে সিন্ধুদুর্গে নবনির্মিত শিবাজি মূর্তির ভেঙে পড়ার ঘটনায় ফুঁসছে রাজ্যের বিরোধী জোট। যদিও এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদি। কিন্তু তাতেও কমেনি অশান্তির আঁচ। রাজ্য জুড়ে চলছে প্রতিবাদ। উঠছে মোদি সরকারের পদত্যাগের দাবি। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার।
ছত্রপতি শিবাজী মূর্তি ভেঙে পড়ার প্রতিবাদে মোদিকে হুংকার ছুঁড়লেন উদ্ধব ঠাকরে। সিন্ধুদুর্গে শিবাজি মূর্তির পতনকে মোদি সরকারের পতন হিসেবেই দেখছে বিরোধীরা। শিবাজি মূর্তি ভেঙে পড়ার প্রতিবাদে বিরোধী দলগুলি গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার দিকে মিছিল করার সময়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা উদ্ধব ঠাকরে সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে মহারাষ্ট্রের জনগণ তাদের কখনই ক্ষমা করবে না। উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, আমরা এখানে জড়ো হয়েছি এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে ভারত থেকে উৎখাত করার জন্য।
বিক্ষোভ নিয়ে কী বলছে বিজেপি?
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ধরনের প্রতিবাদ রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র কেশব উপাধ্যায়।
কি নিয়ে বিরোধ?
মাত্র আট মাস আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে মূর্তিটি উন্মোচন করেছিলেন, সেই মূর্তিকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক কোন্দল। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে শিবাজী মূর্তি ভেঙে পড়ার ঘটনায় ক্ষমা চাওয়ার পরে, কংগ্রেস বলেছে, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ভুল স্বীকার করেছেন, তাই মহারাষ্ট্র সরকারের পদত্যাগ করার সময় এসেছে।
মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মূর্তি পতনের ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে-
বিরোধীরা ক্রমাগত মোদি ও বিজেপিকে কোণঠাসা করছে। এই প্রেক্ষাপটে শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ সঞ্জয় রাউতও মুম্বাইয়ে মিডিয়ার সাথে কথা বলার সময় মোদি সরকারকে নিশানা করেছেন। তিনি দাবি করেন, মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সবকিছুর মাস্টারমাইন্ড। গোটা দেশ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এটা জানে, তাই তাকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, শুধু ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমেই কি বিষয়টির সমাধান হবে? এই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। সঞ্জয় রাউত আরও বলেন, মাত্র সাত মাসের মধ্যে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মূর্তি ভেঙে পড়ল, তাই আমাদের কি চুপ থাকা উচিত? আমরা আজ শিবাজি মহারাজের সম্মানে প্রতিবাদ করতে যাচ্ছি। রাউত বলেন, দেবেন্দ্র ফড়নবীশ, মহারাষ্ট্রের খলনায়ক।
ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের মূর্তি ভেঙে পড়ার ঘটনায় এমভিএ-র প্রতিবাদের প্রতিক্রিয়ায় মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ, বলেছেন যে আজ যে আন্দোলন হচ্ছে তা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক আন্দোলন এবং তারা কখনও ছত্রপতি শিবাজি মহারাজকে সম্মান করেননি। লাল কেল্লা থেকে নেহেরু এবং ইন্দিরা গান্ধীর একটি ভাষণেও ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের কথা উল্লেখ করেন নি। পণ্ডিত নেহেরু তার ‘ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া’ বইতে ছত্রপতি মহারাজকেও অপমান করেছেন। কংগ্রেস এবং মহা বিকাশ আঘাড়ি তার জন্য ক্ষমা চাইবে?
কী বলেছেন মোদি?
মূর্তি ভেঙ্গে পড়ায় মোদি বলেছেন, ‘ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ শুধু একটা নাম নয়। তিনি শুধু রাজা নন, তিনি আমাদের ঈশ্বর। আমি তার পায়ে মাথা ঠেকিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে চাই। যারা ছত্রপতি শিবাজি মহারাজকে আরাধ্য বলে মনে করেন, তাদের কাছেও আমি মাথা নত করে ক্ষমা চাইছি। তাদের ভাবাবেগ কতটা আহত হয়েছে, সেটা আমি বুঝি।’