রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হলো ‘রুশ গুপ্তচর’ তিমি হলদিমির। নরওয়ের সমুদ্র সৈকতে তিমিটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার নৌবাহিনী প্রশিক্ষণ দিয়ে এই তিমিটিকে ‘গুপ্তচর’ হিসাবে ব্যবহার করেছিল। হলদিমির নামক তিমির মৃত্যুর আসল কারণ এখনো জানা যায়নি। প্রক্রিয়াটি বর্তমানে তদন্তাধীন। তবে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছে মৃত্যুর আগে তিমিটি সুস্থ ছিল। ফলে হঠাৎই এমন মৃত্যুতে গভীরভাবে বাঁধছে রহস্যের দানা। রোববার এনডিটিভির প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।
বিশাল আকৃতির হলদিমির নামে তিমিটি ১৪ ফুট লম্বা ও ওজন ২ হাজার ৭০০ পাউন্ড। তিমিটি দেখতে কিছুটা অন্যরকম। শরীর পুরোপুরিভাবে সাদা। বেলুগা প্রজাতির এই তিমিটি প্রথমে প্রকাশ্যে এসেছিল ২০১৯ সালে। ওই সময় থেকে ধারণা করা হয়, এটি রুশ নৌবাহিনীর একটি গুপ্তচর তিমি। কারণ তিমিটির গলায় মানুষের তৈরি বর্ম লাগানো ছিল। সে বছর নরওয়ের মৎস্য বিভাগ তিমিটিকে ধরে ফেলে। তখন তিমিটির গায়ে লাগানো বর্ম ও অ্যাকশন ক্যামেরাটি খুলে ফেলা হয়। তিমিটির গায়ে মোড়ানো একটি প্লাস্টিকে লেখা ছিল ‘ইকুইপমেন্ট সেন্ট পিটার্সবার্গ।’
ওই সময় নরওয়ের মৎস্য বিভাগ জানিয়েছিল, এ তিমিটি হয়তো খাঁচা থেকে পালিয়ে গেছে এবং এটিকে রাশিয়ার নৌ বাহিনী প্রশিক্ষণ দিয়েছে। কারণ তিমিটি মানুষের কাছাকাছি আসছিল। রাশিয়া এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না করায় রহস্য আরও ঘণীভূত হয়েছে। এটি গুপ্তচর তিমি নাকি সাধারণ তিমি, তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা ছিল। নরওয়ের ‘হল’ এবং রাশিয়ার ‘ভ্লাদিমির’-এই দুই শব্দ এক সঙ্গে করে তিমিটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘হলদিমির’। এ ধরনের তিমি সুমেরু অঞ্চলের সমুদ্রেই দেখা যায়। কিন্তু হলদিমির কী করে মানুষের কাছাকাছি এলো, তা এক রহস্য। গত বছরেও অসলোতে দেখা গিয়েছিল হলদিমিরকে।
নরওয়ে প্রশাসন নাগরিকদের অনুরোধ করেছিল, হলদিমিরের কাছাকাছি তারা যেন না যান। নরওয়ের মৎস্য দফতরের কর্মকর্তাদের সন্দেহ, যেহেতু অসলো ফিয়র্ডে মানুষের যাতায়াত চলে, তাই কেউ বা কারা হলদিমির কোনো ক্ষতি করে থাকতে পারেন। যদিও বিষয়টি স্পষ্ট নয়। হঠাৎ করে তার মৃত্যুতে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। নরওয়ের মেরিন মাইন্ডের প্রতিষ্ঠাতা সেবাস্তিয়ান স্ট্যান্ড নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘হলদিমির মৃত্যু হৃদয়বিদারক। সে নরওয়ের হাজার হাজার মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে।’