ঢাকা ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ভূমি অফিস যেন ঘুষের হাট, টাকা ছাড়া মেলে না সেবা

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ২নং চরাদি ইউনিয়নের ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া মিলছে না সেবা। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান নিজেই কাজের ধরন ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী ঘুষের হার নির্ধারণ করে থাকেন।

সরেজমিন দেখা যায়, চরাদি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান চরাদি গ্রামের সেবাগ্রহীতা লতিফ হাওলাদার থেকে প্রকাশ্যে ১ হাজার ৮০০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করছেন এবং ওই টাকা নিজের পকেটে রাখছেন। এরপর তিনি সেবাগ্রহীতাকে বলছেন, আপনি চলে যান। আরও ৩ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে এলে কাজ হয়ে যাবে।

ঘুষের লেনদেনের বিষয়টি কালবেলা জানতে চাইলে ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান কিছুটা বিচলিত হয়ে বলেন, জমির কর হিসাবে ১ হাজার ৮০০ টাকা নিয়েছি। তার কাছে আরও ৩ হাজার ২০০ টাকা বকেয়া রয়েছে।

১ হাজার ৮০০ টাকা কেন অগ্রিম নিলেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাকি টাকা পরে দেবে; তাই টাকা রাখা হয়েছে। ঘুষের টাকা গ্রহণের একটি ভিডিও দেখিয়ে টাকার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে চুপ হয়ে যান।

আরও জানা গেছে, খাজনার দাখিলের জন্য (ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ) সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করলেও রসিদ দেওয়া হয় সরকারি হিসাবে। এসবের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এ ভূমি সহকারী কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নাম খারিজের বেলায় সরকারি নির্ধারিত ফি ১ হাজার ১৫০ টাকা হলেও অতিরিক্ত হিসাবে আট থেকে ১০ হাজার টাকা এমনকি ব্যক্তিভেদে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন ওই কর্মকর্তা। দাবিকৃত ঘুষের অর্থ দিতে অস্বীকার করলে নানা তালবাহানা করে জমির মালিকদের হয়রানি করেন তিনি।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এম ইশমাম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চরাদি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে অবশ্যই ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

ভূমি অফিস যেন ঘুষের হাট, টাকা ছাড়া মেলে না সেবা

আপডেট সময় ১১:২০:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ২নং চরাদি ইউনিয়নের ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া মিলছে না সেবা। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান নিজেই কাজের ধরন ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী ঘুষের হার নির্ধারণ করে থাকেন।

সরেজমিন দেখা যায়, চরাদি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান চরাদি গ্রামের সেবাগ্রহীতা লতিফ হাওলাদার থেকে প্রকাশ্যে ১ হাজার ৮০০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করছেন এবং ওই টাকা নিজের পকেটে রাখছেন। এরপর তিনি সেবাগ্রহীতাকে বলছেন, আপনি চলে যান। আরও ৩ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে এলে কাজ হয়ে যাবে।

ঘুষের লেনদেনের বিষয়টি কালবেলা জানতে চাইলে ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান কিছুটা বিচলিত হয়ে বলেন, জমির কর হিসাবে ১ হাজার ৮০০ টাকা নিয়েছি। তার কাছে আরও ৩ হাজার ২০০ টাকা বকেয়া রয়েছে।

১ হাজার ৮০০ টাকা কেন অগ্রিম নিলেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাকি টাকা পরে দেবে; তাই টাকা রাখা হয়েছে। ঘুষের টাকা গ্রহণের একটি ভিডিও দেখিয়ে টাকার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে চুপ হয়ে যান।

আরও জানা গেছে, খাজনার দাখিলের জন্য (ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ) সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করলেও রসিদ দেওয়া হয় সরকারি হিসাবে। এসবের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এ ভূমি সহকারী কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নাম খারিজের বেলায় সরকারি নির্ধারিত ফি ১ হাজার ১৫০ টাকা হলেও অতিরিক্ত হিসাবে আট থেকে ১০ হাজার টাকা এমনকি ব্যক্তিভেদে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন ওই কর্মকর্তা। দাবিকৃত ঘুষের অর্থ দিতে অস্বীকার করলে নানা তালবাহানা করে জমির মালিকদের হয়রানি করেন তিনি।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এম ইশমাম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চরাদি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে অবশ্যই ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।