ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

‘গৃহবধূকে হত্যা’, মরদেহ পৌঁছে দিতে এসে স্বামী-শাশুড়ি আটক

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি। বুধবার সকালে উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম থেকে তাদের আটক করে কাশিয়ানী থানা পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন- স্বামী রায়হান পারভেজ (৩২) ও শাশুড়ি আবেদা খাতুন (৫৫)। তাদের বাড়ি খুলনা জেলার রুপসা থানার আইচগাতি গ্রামে।

মৃত গৃহবধূ সাবিকুন্নাহার ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে।

মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে সাবিকুন্নাহারের ছোট ভাই সোহাগকে তার স্বামী রায়হান পারভেজ ফোন করে জানান সাবিকুন্নাহার অজ্ঞান হয়ে গেছেন। খবর পেয়ে সাবিকুন্নাহারের বড় ভাই ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে সাবিকুন্নাহার মারা গেছেন। মরদেহ নিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। দুপুর ২টার দিকে সাবিকুন্নাহারের মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাবিকুন্নাহারের বাবার বাড়ি কাশিয়ানীর শংকরপাশায় এসে পৌঁছান। চলে লাশের দাফন-কাফনের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তার স্বজনরা।

এতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে মরদেহের সঙ্গে আসা লোকজনকে আটক করেন তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাদের দেওয়া হয়। পরে বুধবার সকালে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

মৃতের মা রিজিয়া বেগম জানান, দেড় বছর আগে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সাবিকুন্নাহারের স্বামী রায়হান পারভেজ একটি কোম্পানিতে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কর্মরত। সাবিকুন্নাহার তার স্বামী ও পাঁচ মাস বয়সি একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে ওখানে ভাড়া বাসায় থাকতেন। প্রায়ই ঝগড়া হতো, টাকা-পয়সা চেয়ে সাবিকুন্নাহারকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সাবিকুন্নাহারকে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে মেয়ে জামাই ও তার পরিবারের লোকজন। তার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মৃতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

‘গৃহবধূকে হত্যা’, মরদেহ পৌঁছে দিতে এসে স্বামী-শাশুড়ি আটক

আপডেট সময় ১০:৫৫:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি। বুধবার সকালে উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম থেকে তাদের আটক করে কাশিয়ানী থানা পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন- স্বামী রায়হান পারভেজ (৩২) ও শাশুড়ি আবেদা খাতুন (৫৫)। তাদের বাড়ি খুলনা জেলার রুপসা থানার আইচগাতি গ্রামে।

মৃত গৃহবধূ সাবিকুন্নাহার ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে।

মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে সাবিকুন্নাহারের ছোট ভাই সোহাগকে তার স্বামী রায়হান পারভেজ ফোন করে জানান সাবিকুন্নাহার অজ্ঞান হয়ে গেছেন। খবর পেয়ে সাবিকুন্নাহারের বড় ভাই ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে সাবিকুন্নাহার মারা গেছেন। মরদেহ নিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। দুপুর ২টার দিকে সাবিকুন্নাহারের মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাবিকুন্নাহারের বাবার বাড়ি কাশিয়ানীর শংকরপাশায় এসে পৌঁছান। চলে লাশের দাফন-কাফনের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তার স্বজনরা।

এতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে মরদেহের সঙ্গে আসা লোকজনকে আটক করেন তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাদের দেওয়া হয়। পরে বুধবার সকালে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

মৃতের মা রিজিয়া বেগম জানান, দেড় বছর আগে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সাবিকুন্নাহারের স্বামী রায়হান পারভেজ একটি কোম্পানিতে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কর্মরত। সাবিকুন্নাহার তার স্বামী ও পাঁচ মাস বয়সি একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে ওখানে ভাড়া বাসায় থাকতেন। প্রায়ই ঝগড়া হতো, টাকা-পয়সা চেয়ে সাবিকুন্নাহারকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সাবিকুন্নাহারকে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে মেয়ে জামাই ও তার পরিবারের লোকজন। তার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মৃতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।