ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

পার্শ্ববর্তী দেশ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে: হাসনাত আবদুল্লাহ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আমরা দেখেছি ফেনীতে বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেখেন আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে রয়েছি। যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের সহায়তা করার কথা, সেখানে তারা নানাভাবে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে আহবান জানাব, আপনারা যে ব্যারিকেডটি খুলে দিয়ে বাংলাদেশে পানি প্রবেশ করতে দিলেন, অন্যদিকে দেখেছি তিস্তাতে পানি সংকটে সেখানে চাষাবাদ করা যায় না। আমাদের যখন পানির প্রয়োজন আপনারা তখন পানি দিচ্ছেন না। আর যখন পানির প্রয়োজন নেই আপনারা বেড়িবাঁধগুলো খুলে দিয়ে বন্যায় বাংলাদেশের মানুষকে সংকটের মধ্যে ফেলেন। সুতরাং যারা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সংস্কারকে বাধা দিতে চায় তাদেরকে আমরা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই। দেশের মানুষের প্রতি আহবান বন্যা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ান। একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের জন্য শুধুমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সব সিদ্ধান্ত একার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।

বুধবার ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও বাংলাদেশের দ্বিতীয় জন্মে আপনারা যদি আমাদের যথাযথ রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সময় না দিয়ে গত ১৬ বছরের ব্যর্থতার দায় ভার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আপনারা আমাদের এক ধরনের ব্ল্যাকমেইল করেন, আমরা মনে করব, রাষ্ট্র পুনর্গঠনে আমাদের সহায়তা না করে বরং ষড়যন্ত্র করছেন। আপনারা ব্যক্তিপর্যায় থেকে, গোষ্ঠী পর্যায় থেকে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সব কর্তৃপক্ষকে আমরা আহবান জানাব, রাষ্ট্র সংস্কারে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিন। সময় দেওয়ার পরে আপনাদের যে দাবিগুলো রয়েছে সেগুরো অ্যাকাডেমিক অ্যাপ্রোচ করেন। আমরা সেগুলো নিয়ে নিজেরা কথা বলব।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত ভূমি অফিস, বিআরটিএ, ওয়াসাসহ এ জাতীয় কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করার আগে আহবান করছি এখনো সময় রয়েছে আপনারা লাইনে ফিরে আসুন। আপনারা জনকল্যাণের জন্য কাজ করুন। আপনারা যদি এই দুর্নীতির শৃঙ্খল আরও বৃদ্ধি করেন, তাহলে বঙ্গভবনের মতো, সংসদ ভবনের মতো পরিণতির জন্য প্রস্তুত হোন। কাস্টমসে যারা রয়েছেন, আমরা মনে করি, ঘুস খেয়ে কখনো রাষ্ট্র সংস্কার করা যায় না। আপনারা রাষ্ট্র সংস্কারে সহযোগী হোন। কোনো সরকারি অফিসে কেউ যদি ঘুষ চায়, তাকে ঘুষি মারুন। নয়তোবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করুন।

হাসনাত বলেন, ঘুষ-অনিয়মের জন্য সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বিগত সরকারের আমলে শাস্তি হতো তিরস্কার কিংবা ওএসডি। এগুলো কোনো শাস্তি নয়। আমরা চাই, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে। পদচ্যুত করা হবে। প্রয়োজনে বিদ্যমান যে আইনি কাঠামো রয়েছে, সেখানে সেই ব্যবস্থা করবে। যা করা প্রয়োজন তা করে ঘুষের যে বাণিজ্য রয়েছে, দুর্নীতির যে আখড়া রয়েছে সেটিকে ছাত্র-নাগরিক সমূলে উৎপাটন করবে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বাজারগুলোতে দ্রব্যমূল্যের দাম কমে গিয়েছিল; কিন্তু আমরা এখন দেখছি একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আন্ডারে আবার সেই সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। আমরা এ সিন্ডিকেটকে সতর্ক করে দিতে চাই, আপনারা যদি জনমুখী কোনো সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সিন্ডিকেট কিংবা মাফিয়াতন্ত্র তৈরি করে বাজার ব্যবস্থাপনায় কোনো অসন্তুষ্টি তৈরি করেন তাহলে ছাত্র-জনতা যেভাবে শেখ হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়েছিল, ঠিক একইভাবে সিন্ডিকেটগুলোর সমূলে উৎপাটন করা হবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

পার্শ্ববর্তী দেশ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে: হাসনাত আবদুল্লাহ

আপডেট সময় ০১:১৫:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আমরা দেখেছি ফেনীতে বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেখেন আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে রয়েছি। যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের সহায়তা করার কথা, সেখানে তারা নানাভাবে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে আহবান জানাব, আপনারা যে ব্যারিকেডটি খুলে দিয়ে বাংলাদেশে পানি প্রবেশ করতে দিলেন, অন্যদিকে দেখেছি তিস্তাতে পানি সংকটে সেখানে চাষাবাদ করা যায় না। আমাদের যখন পানির প্রয়োজন আপনারা তখন পানি দিচ্ছেন না। আর যখন পানির প্রয়োজন নেই আপনারা বেড়িবাঁধগুলো খুলে দিয়ে বন্যায় বাংলাদেশের মানুষকে সংকটের মধ্যে ফেলেন। সুতরাং যারা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সংস্কারকে বাধা দিতে চায় তাদেরকে আমরা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই। দেশের মানুষের প্রতি আহবান বন্যা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ান। একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের জন্য শুধুমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সব সিদ্ধান্ত একার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।

বুধবার ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও বাংলাদেশের দ্বিতীয় জন্মে আপনারা যদি আমাদের যথাযথ রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সময় না দিয়ে গত ১৬ বছরের ব্যর্থতার দায় ভার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আপনারা আমাদের এক ধরনের ব্ল্যাকমেইল করেন, আমরা মনে করব, রাষ্ট্র পুনর্গঠনে আমাদের সহায়তা না করে বরং ষড়যন্ত্র করছেন। আপনারা ব্যক্তিপর্যায় থেকে, গোষ্ঠী পর্যায় থেকে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সব কর্তৃপক্ষকে আমরা আহবান জানাব, রাষ্ট্র সংস্কারে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিন। সময় দেওয়ার পরে আপনাদের যে দাবিগুলো রয়েছে সেগুরো অ্যাকাডেমিক অ্যাপ্রোচ করেন। আমরা সেগুলো নিয়ে নিজেরা কথা বলব।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত ভূমি অফিস, বিআরটিএ, ওয়াসাসহ এ জাতীয় কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করার আগে আহবান করছি এখনো সময় রয়েছে আপনারা লাইনে ফিরে আসুন। আপনারা জনকল্যাণের জন্য কাজ করুন। আপনারা যদি এই দুর্নীতির শৃঙ্খল আরও বৃদ্ধি করেন, তাহলে বঙ্গভবনের মতো, সংসদ ভবনের মতো পরিণতির জন্য প্রস্তুত হোন। কাস্টমসে যারা রয়েছেন, আমরা মনে করি, ঘুস খেয়ে কখনো রাষ্ট্র সংস্কার করা যায় না। আপনারা রাষ্ট্র সংস্কারে সহযোগী হোন। কোনো সরকারি অফিসে কেউ যদি ঘুষ চায়, তাকে ঘুষি মারুন। নয়তোবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করুন।

হাসনাত বলেন, ঘুষ-অনিয়মের জন্য সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বিগত সরকারের আমলে শাস্তি হতো তিরস্কার কিংবা ওএসডি। এগুলো কোনো শাস্তি নয়। আমরা চাই, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে। পদচ্যুত করা হবে। প্রয়োজনে বিদ্যমান যে আইনি কাঠামো রয়েছে, সেখানে সেই ব্যবস্থা করবে। যা করা প্রয়োজন তা করে ঘুষের যে বাণিজ্য রয়েছে, দুর্নীতির যে আখড়া রয়েছে সেটিকে ছাত্র-নাগরিক সমূলে উৎপাটন করবে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বাজারগুলোতে দ্রব্যমূল্যের দাম কমে গিয়েছিল; কিন্তু আমরা এখন দেখছি একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আন্ডারে আবার সেই সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। আমরা এ সিন্ডিকেটকে সতর্ক করে দিতে চাই, আপনারা যদি জনমুখী কোনো সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সিন্ডিকেট কিংবা মাফিয়াতন্ত্র তৈরি করে বাজার ব্যবস্থাপনায় কোনো অসন্তুষ্টি তৈরি করেন তাহলে ছাত্র-জনতা যেভাবে শেখ হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়েছিল, ঠিক একইভাবে সিন্ডিকেটগুলোর সমূলে উৎপাটন করা হবে।