সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে গুম করার অভিযোগে করা মামলার আবেদনটি উত্তরা পশ্চিম থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে ভুক্তভোগী আইনজীবী মো. সোহেল রানা আদালতে মামলার আবেদন করেন। এসময় আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ ছাড়াও অজ্ঞাত ২৫ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সোহেল রানা ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বন্ধু আশরাফুল ইসলাম রিংকুর সাথে উত্তরার ৫ নং সেক্টরের ১ নং রোডে স্মাইর গ্যালারির সামনে অবস্থান করছিলেন। রাত ৮ টা থেকে সাড়ে ৮ টার দিকে একজন হাতে স্মার্টডিভাইসসহ এসে পরিচয় জানতে চান। তিনি পরিচয় দেন। পরে তাদের দুইজনকে জরুরি কথা আছে বলে একটি গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। গাড়িতে র্যাবের পোশাক পরিহিত দুইজনকে এবং আরও ১০/১১ জন বন্দুকধারিকে দেখতে পান। গাড়ি ওঠার সাথে সাথে তাদের চোখ বেঁধে ফেলা হয়। হাতে হ্যান্ডকাপ পড়ানো হয়। সোহেল রানাকে গাড়িতেই বৈদ্যুতিক শক দিতে থাকে। আত্মচিৎকার যেন বাইরে না যায় এজন্য উচ্চ ভলিউমে ডিজে টাইপের গান চালিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর রিংকুকে অজ্ঞাত নামে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।
ঘন্টাখানেক পর সোহেল রানা বুঝতে পারেন তাকে কোনো এক বিল্ডিংয়ের আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে গেছে। এসময় তারা খালেদা জিয়াকে নিয়ে গালিগালাজ করতে থাকেন। সেখানে গিয়েও তাকে শক দিতে থাকে। দুই ঘন্টা পর ৩/৪ জন এসে তাকে ঝুলিয়ে মারতে থাকে। এতে জ্ঞান হারান তিনি। জ্ঞান ফিরলে তাকে আবার নির্যাতন করা হয়। তার নির্দেশে নির্বাচন কমিশনে আগুন দেয়া হয়েছে কি না জানতে চান। তাকে আবারও শক দেয়া হয় এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এভাবে তার ওপর নির্যাতন করা হয়। তাকে নামাজ পড়তেও বাঁধা দেয়া হতো। পিঠমোরা দিয়ে হাতকরা অবস্থায় তাকে বেঁধে রাখা হতো। ৬ জুন ৭ থেকে ৮ ঘন্টার দূরত্বে তাকেসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাই। ১৩ আগস্ট ভোর ৩ থেকে ৪ টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তাকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। তখনো তার হাত ও চোখ বাঁধা ছিলো। পরে তিনি লোকজনের কাছে জানতে পারেন, তিনি রাজশাহীর গোদাগাড়িতে আছেন। বাদী মুক্ত হয়ে জানতে পারেন, শেখ হাসিনার হুকুমে অন্যান্য আসামিরা দেশে এক নায়কতন্ত্র ও স্বৈরাচার শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য দেশে গুমের নামে অপহরণ এবং বিনা বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং তিনি নিজেই নিপীড়নের শিকার।