ফিলিস্তিনের গাজা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী সেখানকার স্কুল ও হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এতে বহু নারী, শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে ইসরাইলের দাবি, হাসামের কম্যান্ড সেন্টারকে টার্গেট করা হয়েছিল।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুটি স্কুলে ইসরাইলের সেনা আক্রমণ করেছে। এর ফলে ২৫ জন মারা গেছেন। তার মধ্যে অধিকাংশ নারী ও শিশু।
ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ও হামাসের মিডিয়ার বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, হাসান সালেমা ও আল-নাসের এলাকার এই আক্রমণে কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। দুটি জায়গাতেই উদ্বাস্তু মানুষরা ছিলেন বলে তাদের দাবি।
ইসরাইলের সেনা এই আক্রমণের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেছে, ওই জায়গাগুলি সন্ত্রাসবাদীরা ব্যবহার করছিল।
তাদের দাবি, দুটি স্কুল ছিল যেখানে হামাস তাদের সদস্যদের লুকিয়ে রেখেছিল। এখানেই ছিল তাদের কম্যান্ড সেন্টার। হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
তবে ইসরাইলি বাহিনী যে দাবি করেছে সেটা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসপাতাল চত্বরে ইসরাইলের হামলায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
তারা জানিয়েছেন, আল-আকসা হাসপাতাল চত্বরে তাঁবুতে উদ্বাস্তু মানুষরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানেই আক্রমণ করেছে ইসরাইল। এর ফলে আগুন ধরে যায়।
ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ জন আহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাদের দাবি, একজন সন্ত্রাসীকে টার্গেট করা হয়েছিল। প্রাথমিক আক্রমণের পর সেখানে বিস্ফোরণ হয়। তা থেকে বোঝা যাচ্ছে, ওখানে বিস্ফোরক রাখা ছিল।
গত জুন মাসে মানবাধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘের অফিস থেকে বলা হয়েছিল, ইসরাইল হাসপাতালগুলিকে টার্গেট করেছে। এটা যুদ্ধ-আইনের বিরোধী।
ইসরাইলের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০টি সন্ত্রাসবাদী টার্গেটে তারা আক্রমণ চালিয়েছে।
এদিকে বৈরুত থেকে দূতাবাস কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাজ্য। নিরাপত্তা পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা যাতে নিরাপদে ফিরতে পারেন, সে জন্য সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী ও কূটনীতিকদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেবাননে থাকা দেশের সব নাগরিককে অবিলম্বে ব্রিটেনে ফিরে আসার অনুরোধ করেছেন।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাজানি রোববার জানিয়েছেন, জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিকে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন এমন কোনো কাজ না করে, যাতে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ে।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশকে অনুরোধ করছি, আলোচনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, এমন কোনো কাজ যেন তারা না করেন।
মন্ত্রীরা দাবি করেছেন, ইসরাইল ও গাজার মধ্যে অবিলম্বে শান্তিচুক্তি সই হোক এবং বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হোক।