ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনতার উল্লাস দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শহীদুল

ম্প্রতি জিএম পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন শহীদুল ইসলাম (জয়নাল)। তার পদোন্নতিতে পরিবারে ছিল খুশির আবহ। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত বিজয় ঘটে গতকাল (সোমবার)।

সেই বিজয়কে কেন্দ্র করে জনতার বাঁধভাঙা উল্লাস দেখার জন্য বাসার বাইরে গিয়ে দেখতে পান যাত্রাবাড়ী থানার চারপাশে বিক্ষুব্ধ লোকজনের ভিড়। থানার ছাদে অস্ত্র হাতে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এ দৃশ্য দেখার পর কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর তলপেট ও উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কে পড়ে যান শহীদুল। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শহিদুল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বাসিন্দা। শহীদুল ইসলাম উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের মাদারীনগর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার তার স্বজনেরা চোখের জলে শেষ বিদায় জানান।

শহীদুল ইসলামের বড় ছেলে রাজধানী তিতুমীর কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী একেএম লতিফুল ইসলাম বলেন, তারা যাত্রাবাড়ীতে থাকেন। গতকাল (সোমবার) তার বাবা বাসায় বসে টিভিতে সেনাপ্রধানের ভাষণ শুনেন। ভাষণ শেষ হলে জনতার উল্লাস দেখার জন্য তার বাবা বাসার বাইরে যান। পরে এক অপরিচিত ব্যক্তি ফোন করে তার বাবা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানান। তারা দ্রুত বাইরে গিয়ে যাত্রাবাড়ীর আল করিম হাসপাতালে গিয়ে গুলিবিদ্ধ বাবাকে স্ট্রেচারে দেখতে পান। সেখানকার চিকিৎসকরা বাবাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন কিন্তু বাইরে রাস্তাঘাট ছাত্র-জনতার দখলে থাকায় সংকটাপন্ন বাবাকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার বাবা মারা যান।

লতিফুল ইসলাম আরও বলেন, তার বাবা যখন গুলিবিদ্ধ হন তখন উচ্ছৃঙ্খল জনতা যাত্রাবাড়ী থানা আক্রমণ করে। থানার ভেতরে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। ভবনের ছাদে পুলিশকে অস্ত্র হাতে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ওই সময় তার বাবা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার ধারণা পুলিশের প্রাণঘাতী বুলেট তার বাবার জীবন কেড়ে নিয়েছে। বাবার অনুপস্থিতিতে তাদের গোছানো সংসার তছনছ হয়ে গেছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জনতার উল্লাস দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শহীদুল

আপডেট সময় ১১:৩০:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

ম্প্রতি জিএম পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন শহীদুল ইসলাম (জয়নাল)। তার পদোন্নতিতে পরিবারে ছিল খুশির আবহ। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত বিজয় ঘটে গতকাল (সোমবার)।

সেই বিজয়কে কেন্দ্র করে জনতার বাঁধভাঙা উল্লাস দেখার জন্য বাসার বাইরে গিয়ে দেখতে পান যাত্রাবাড়ী থানার চারপাশে বিক্ষুব্ধ লোকজনের ভিড়। থানার ছাদে অস্ত্র হাতে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এ দৃশ্য দেখার পর কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর তলপেট ও উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কে পড়ে যান শহীদুল। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শহিদুল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বাসিন্দা। শহীদুল ইসলাম উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের মাদারীনগর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার তার স্বজনেরা চোখের জলে শেষ বিদায় জানান।

শহীদুল ইসলামের বড় ছেলে রাজধানী তিতুমীর কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী একেএম লতিফুল ইসলাম বলেন, তারা যাত্রাবাড়ীতে থাকেন। গতকাল (সোমবার) তার বাবা বাসায় বসে টিভিতে সেনাপ্রধানের ভাষণ শুনেন। ভাষণ শেষ হলে জনতার উল্লাস দেখার জন্য তার বাবা বাসার বাইরে যান। পরে এক অপরিচিত ব্যক্তি ফোন করে তার বাবা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানান। তারা দ্রুত বাইরে গিয়ে যাত্রাবাড়ীর আল করিম হাসপাতালে গিয়ে গুলিবিদ্ধ বাবাকে স্ট্রেচারে দেখতে পান। সেখানকার চিকিৎসকরা বাবাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন কিন্তু বাইরে রাস্তাঘাট ছাত্র-জনতার দখলে থাকায় সংকটাপন্ন বাবাকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার বাবা মারা যান।

লতিফুল ইসলাম আরও বলেন, তার বাবা যখন গুলিবিদ্ধ হন তখন উচ্ছৃঙ্খল জনতা যাত্রাবাড়ী থানা আক্রমণ করে। থানার ভেতরে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। ভবনের ছাদে পুলিশকে অস্ত্র হাতে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ওই সময় তার বাবা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার ধারণা পুলিশের প্রাণঘাতী বুলেট তার বাবার জীবন কেড়ে নিয়েছে। বাবার অনুপস্থিতিতে তাদের গোছানো সংসার তছনছ হয়ে গেছে।