ঢাকা ০৪:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাদপন্থি মুখপাত্র মুয়াজ বিন নূর ৩ দিনের রিমান্ডে জামালপুরের সিনিয়র সাংবাদিক,মর্মান্তিক রোড এক্সিডেন্টে মৃত্যু হয়। উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো চুনারুঘাট অনলাইন প্রেসক্লাবের বার্ষিক বনভোজন বাউফলে সড়ক দুর্ঘটনায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিহত মাদক ব্যবসায়ীর থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার উপহার গ্রহণের ছবি ভাইরাল গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি আলোচনা সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সংঘর্ষ, হতাহত ১৫ ধামরাইয়ে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষ, স্বামী-স্ত্রী নিহত নিষিদ্ধ এলাকায় বাজছে গাড়ির হর্ন, নেই দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল ঘিরে এখনও চাঁদাবাজির তান্ডব চালাচ্ছে শেখ হাসিনার আস্থাভাজন গোলাম মোস্তফা 

কপ-২৭ ও বাংলাদেশের প্রত্যাশা

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগেরও বিষয়—জলবায়ু পরিবর্তন, নেট জিরো, বৈশ্বিক উন্নয়ন। এই ঘোরতর বিপদ ঠেকাতে পৃথিবীর মানুষ আজ মরিয়া। পরিতাপের বিষয়, এই বিপর্যয় সৃষ্টিকারী শিল্পোন্নত দেশগুলো আসন্ন এই বিপদ নিয়ে নিস্পৃহ ও উদাসীন।

এই প্রেক্ষাপটে মিসরের শারম-আল-শেখে ৬ নভেম্বর২০২২ থেকে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহব্যাপী জাতিসংঘের ২৭তম জলবায়ু সম্মেলন / ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস’ (‘কপ-২৭’)। এবারের সম্মেলনে ১৯০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য।

২০২১ সালে গ্লাসগোতে (স্কটল্যান্ড) অনুষ্ঠিত ‘কপ-২৬’-কে অনেকে ব্যর্থ বলে অভিহিত করেছিলেন। আবার কেউ কেউ একে কিছুটা হলেও সফল বলেছিলেন। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডেভ রে ‘কপ-২৬’ মূল্যায়নে বলেছিলেনজলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে দেখলে একে সফল বলতে হয়। আর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার তাৎক্ষণিক সফলতার বিচারে ‘কপ-২৬’-কে ব্যর্থই বলা যায়।”

রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষই বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ (ন্যাটো থেকে ইউক্রেনকে সরবরাহকৃত) নিক্ষেপ করছে। ফলে পূর্ব ইউরোপের যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে একদিকে যেমন মৃত্যুধ্বংসপরিবেশ সংকট ও উদ্বাস্তু সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছেঅন্যদিকে এই যুদ্ধ কেন্দ্র করে পৃথিবীব্যাপী খাদ্যসংকট ও অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে।

যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে পৃথিবীব্যাপী এই যুদ্ধজনিত পরিবেশ সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে। অনেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে মোড় নিয়ে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।

আশঙ্কা করা হচ্ছেযুদ্ধ প্রলম্বিত হলে পৃথিবীব্যাপী এই যুদ্ধজনিত পরিবেশ সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে। অনেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে মোড় নিয়ে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। তা যদি হয়তাহলে সেই যুদ্ধ মানবসভ্যতা তথা পৃথিবীর জন্য এক চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে। মৃত্যু আর ধ্বংসের ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে ভূপৃষ্ঠে। ধরিত্রী হবে বিষাক্ত এক গ্রহযার জল-স্থল আর অন্তরীক্ষ বহুকালব্যাপী জীবনের জন্য সহায়ক হবে না।

এই যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে জ্বালানি সংকট। এই সংকট মোকাবিলার জন্য অনেক দেশ আবার উচ্চ দূষণকারী (যেমন—কয়লা) জ্বালানি উৎসর দিকে ঝুঁকে পড়েছে। আসন্ন শীত মোকাবিলার জন্য গাছ কেটে কাঠ মজুদ করা হচ্ছে। এই বাস্তবতায় ‘কপ-২৭’-এ প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রচেষ্টা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াবে।

১ সেপ্টেম্বর ২০২২, এলসিভিয়ার গ্রুপের জার্নাল ‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছেএই যুদ্ধের (রাশিয়া-ইউক্রেন) ফলে মারাত্মক বায়ুদূষণ ঘটছে। নির্গত হচ্ছে গ্রিনহাউস গ্যাস।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক অভিঘাত এখনই বাংলাদেশে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে।

বাংলাদেশ যদিও আবহমান কাল থেকে ঘূর্ণিঝড়জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করে এগিয়ে চলছেএই বছরের শুরুর দিকেব্যাপক বন্যা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা বাস্তুচ্যুত ও ধ্বংস করেছিল। সম্পদ ও ফসলের ক্ষতি করেছিল।

উপকূলীয় অঞ্চলে যেমন লবণাক্ততাতেমনই উত্তরাঞ্চলে বাড়ছে খরার প্রকোপ। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলার মানুষ। বৃষ্টি ও বন্যার চিরায়ত চরিত্রঋতু চক্র প্রভৃতি পরিবর্তন হওয়ার ফলে কৃষি ও অকৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

এই অবস্থায় বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনা অতীব জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি এখন আমাদের জন্য একটি বাঁচা-মরার বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সেসব দেশের মানুষের জন্য যারা প্রতিনিয়ত চরম আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করছে। কপ-২৭-এর আগে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বিশ্ব নেতাদের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।

যেমন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো এবং স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ টেকসই শক্তির ওপর জোর দেওয়াসাংস্কৃতিক ও সামাজিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাজলবায়ু পরিবর্তনের সব উদ্যোগে নারীর সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নের দিকে মনোনিবেশ করাক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবিকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বন ও বৃক্ষ সংরক্ষণজলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সব পরিকল্পনায় স্থানীয় জ্ঞানের ব্যবহার এবং ভুক্তভোগী শনাক্তকরণে স্থানীয় সম্পৃক্ততামৌলিক মানবাধিকারের ন্যায় মৌলিক জলবায়ু অধিকার প্রণয়ন;

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক অভিঘাত এখনই বাংলাদেশে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে।

জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং পরিবেশের পরিকল্পিত ধ্বংসকে ‘ইকোসাইড’ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিজলবায়ু পরিবর্তনের তথ্যপরিসংখ্যান ও সমীক্ষার ফলাফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং সরকারকে শক্তিশালী করা এবং দূষণকারী বহুজাতিক কোম্পানির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রভৃতি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনার উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে উন্নত বা সম্পদশালী দেশগুলো এই ব্যাপারে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। আবার উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনেকেই অভিযোজন করতে পারে না সম্পদের অপর্যাপ্ততার কারণে।

কখনোবা অভিযোজন করার পরও ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতির শিকার দেশগুলোর অভিযোজনের জন্য এর আগে অ্যাডাপটেশন ফান্ডগ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড ইত্যাদি নামে তহবিল দিতে চেয়েছিল জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত সম্পদশালী দেশগুলোর জোট।

ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুত অর্থের খুব সামান্যই দিয়েছে বিভিন্ন জলবায়ু তহবিলে। ফলে প্রান্তিক জাতি/দেশ সমূহ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা করার জন্য লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড নামক আলাদা তহবিল চেয়ে আসছে উন্নত দেশগুলোর কাছে।

উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েও ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর জলবায়ু অর্থায়নে ১০০ বিলিয়ন ডলার দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও জলবায়ু তহবিল উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘নতুন’তবে যাচাই-বাছাই ছাড়াই উন্নয়ন সহায়তার সঙ্গে জলবায়ু অর্থের সমন্বয় করে বিগত দুই বছরে মাত্র ৮৩.৩ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করা হয়েছে। যার মধ্যে সর্বাধিক ২০ বিলিয়ন জলবায়ু তহবিল।

অন্যদিকেক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রতিশ্রুত প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন বরাদ্দ এখন আর পর্যাপ্ত নয়। এই অবস্থায় ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক জলবায়ু তহবিলের প্রয়োজন হবে ১৪০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার। তাই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান অভিযোজন এবং প্রশমনের চাহিদা মেটাতে অর্থায়নের জন্য নতুন সম্মিলিত লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর দ্বারা প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করতে রাজি করাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো একত্রে সোচ্চার হতে হবে। ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের এই চুক্তিকে বাস্তবে পরিণত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে।’ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতির মুখে পড়া উন্নয়নশীল দেশগুলো ধনী দেশগুলোর কাছে যে ক্ষতিপূরণ চাইছেবিষয়টি আলোচ্য সূচিতে রাখতে সম্মত হয়েছেন কপ প্রতিনিধিরা।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলার মানুষ। বৃষ্টি ও বন্যার চিরায়ত চরিত্র, ঋতু চক্র প্রভৃতি পরিবর্তন হওয়ার ফলে কৃষি ও অকৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফাইন্যান্সিংয়ের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর মতামতের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করলে জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা করা সহজ হবে। উদাহরণস্বরূপকৃষকদের জন্য বিরূপ আবহাওয়ার ক্ষতি মোকাবিলায় শস্য বিমাদুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণজীবিকা পুনরুদ্ধারক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ সহায়তা ইত্যাদি সবই সম্ভব হবে লস অ্যান্ড ড্যামেজের ফান্ড থেকে।

এমনকি এই লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসন এবং নতুন জীবিকা অনুসন্ধানে সহায়তা করা যাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এবারের সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মহল তাকিয়ে আছেসেগুলো হলো—

১. উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি (লস ও ড্যামেজ) পূরণে অর্থায়নের ব্যবস্থা তৈরি করা;

২. অভিযোজনের (বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে পরিচালিত) জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি করা;

৩. জাতীয়ভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা জোরদার করা;

৪. ২০০৯ সালে ধনী দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জলবায়ু কার্যক্রমে বছরে প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদান নিশ্চিত করা;

৫. গ্লাসগো (কপ-২৬) চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ পৃথিবীর নানা জায়গায় চলমান সব সশস্ত্র সংঘর্ষ বন্ধের ব্যাপারে ‘কপ-২৭’ থেকে জোর আহবান জানানোর বিষয়টি প্রত্যাশা করা যেতে পারে। (কালের কণ্ঠ৬ নভেম্বর২০২২)

বাংলাদেশের জনগণ যারা জলবায়ু–সংকটে ভুগছেনতারা এই সংকটের জন্য দায়ী নন। আমাদের জোরালোভাবেই প্রশ্ন তোলা উচিতউন্নত দেশগুলোর বারবার জলবায়ু–ন্যায্যতা অস্বীকার করার নৈতিক দিকটিকে নিয়েও। তারপরও আমরা আশাবাদী যে ২৭তম জলবায়ু সম্মেলন বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় কার্যকর একটি আলাদা তহবিল সৃষ্টির বিষয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে। আমরা ‘কপ-২৭’-এর সফলতা কামনা করি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাদপন্থি মুখপাত্র মুয়াজ বিন নূর ৩ দিনের রিমান্ডে

কপ-২৭ ও বাংলাদেশের প্রত্যাশা

আপডেট সময় ০১:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ নভেম্বর ২০২২

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগেরও বিষয়—জলবায়ু পরিবর্তন, নেট জিরো, বৈশ্বিক উন্নয়ন। এই ঘোরতর বিপদ ঠেকাতে পৃথিবীর মানুষ আজ মরিয়া। পরিতাপের বিষয়, এই বিপর্যয় সৃষ্টিকারী শিল্পোন্নত দেশগুলো আসন্ন এই বিপদ নিয়ে নিস্পৃহ ও উদাসীন।

এই প্রেক্ষাপটে মিসরের শারম-আল-শেখে ৬ নভেম্বর২০২২ থেকে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহব্যাপী জাতিসংঘের ২৭তম জলবায়ু সম্মেলন / ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস’ (‘কপ-২৭’)। এবারের সম্মেলনে ১৯০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য।

২০২১ সালে গ্লাসগোতে (স্কটল্যান্ড) অনুষ্ঠিত ‘কপ-২৬’-কে অনেকে ব্যর্থ বলে অভিহিত করেছিলেন। আবার কেউ কেউ একে কিছুটা হলেও সফল বলেছিলেন। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডেভ রে ‘কপ-২৬’ মূল্যায়নে বলেছিলেনজলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে দেখলে একে সফল বলতে হয়। আর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার তাৎক্ষণিক সফলতার বিচারে ‘কপ-২৬’-কে ব্যর্থই বলা যায়।”

রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষই বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ (ন্যাটো থেকে ইউক্রেনকে সরবরাহকৃত) নিক্ষেপ করছে। ফলে পূর্ব ইউরোপের যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে একদিকে যেমন মৃত্যুধ্বংসপরিবেশ সংকট ও উদ্বাস্তু সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছেঅন্যদিকে এই যুদ্ধ কেন্দ্র করে পৃথিবীব্যাপী খাদ্যসংকট ও অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে।

যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে পৃথিবীব্যাপী এই যুদ্ধজনিত পরিবেশ সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে। অনেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে মোড় নিয়ে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।

আশঙ্কা করা হচ্ছেযুদ্ধ প্রলম্বিত হলে পৃথিবীব্যাপী এই যুদ্ধজনিত পরিবেশ সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে। অনেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে মোড় নিয়ে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। তা যদি হয়তাহলে সেই যুদ্ধ মানবসভ্যতা তথা পৃথিবীর জন্য এক চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে। মৃত্যু আর ধ্বংসের ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে ভূপৃষ্ঠে। ধরিত্রী হবে বিষাক্ত এক গ্রহযার জল-স্থল আর অন্তরীক্ষ বহুকালব্যাপী জীবনের জন্য সহায়ক হবে না।

এই যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে জ্বালানি সংকট। এই সংকট মোকাবিলার জন্য অনেক দেশ আবার উচ্চ দূষণকারী (যেমন—কয়লা) জ্বালানি উৎসর দিকে ঝুঁকে পড়েছে। আসন্ন শীত মোকাবিলার জন্য গাছ কেটে কাঠ মজুদ করা হচ্ছে। এই বাস্তবতায় ‘কপ-২৭’-এ প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রচেষ্টা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াবে।

১ সেপ্টেম্বর ২০২২, এলসিভিয়ার গ্রুপের জার্নাল ‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছেএই যুদ্ধের (রাশিয়া-ইউক্রেন) ফলে মারাত্মক বায়ুদূষণ ঘটছে। নির্গত হচ্ছে গ্রিনহাউস গ্যাস।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক অভিঘাত এখনই বাংলাদেশে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে।

বাংলাদেশ যদিও আবহমান কাল থেকে ঘূর্ণিঝড়জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করে এগিয়ে চলছেএই বছরের শুরুর দিকেব্যাপক বন্যা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা বাস্তুচ্যুত ও ধ্বংস করেছিল। সম্পদ ও ফসলের ক্ষতি করেছিল।

উপকূলীয় অঞ্চলে যেমন লবণাক্ততাতেমনই উত্তরাঞ্চলে বাড়ছে খরার প্রকোপ। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলার মানুষ। বৃষ্টি ও বন্যার চিরায়ত চরিত্রঋতু চক্র প্রভৃতি পরিবর্তন হওয়ার ফলে কৃষি ও অকৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

এই অবস্থায় বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনা অতীব জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি এখন আমাদের জন্য একটি বাঁচা-মরার বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সেসব দেশের মানুষের জন্য যারা প্রতিনিয়ত চরম আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করছে। কপ-২৭-এর আগে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বিশ্ব নেতাদের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।

যেমন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো এবং স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ টেকসই শক্তির ওপর জোর দেওয়াসাংস্কৃতিক ও সামাজিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাজলবায়ু পরিবর্তনের সব উদ্যোগে নারীর সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নের দিকে মনোনিবেশ করাক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবিকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বন ও বৃক্ষ সংরক্ষণজলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সব পরিকল্পনায় স্থানীয় জ্ঞানের ব্যবহার এবং ভুক্তভোগী শনাক্তকরণে স্থানীয় সম্পৃক্ততামৌলিক মানবাধিকারের ন্যায় মৌলিক জলবায়ু অধিকার প্রণয়ন;

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক অভিঘাত এখনই বাংলাদেশে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। দিন দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে।

জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং পরিবেশের পরিকল্পিত ধ্বংসকে ‘ইকোসাইড’ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিজলবায়ু পরিবর্তনের তথ্যপরিসংখ্যান ও সমীক্ষার ফলাফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং সরকারকে শক্তিশালী করা এবং দূষণকারী বহুজাতিক কোম্পানির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রভৃতি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনার উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে উন্নত বা সম্পদশালী দেশগুলো এই ব্যাপারে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। আবার উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনেকেই অভিযোজন করতে পারে না সম্পদের অপর্যাপ্ততার কারণে।

কখনোবা অভিযোজন করার পরও ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতির শিকার দেশগুলোর অভিযোজনের জন্য এর আগে অ্যাডাপটেশন ফান্ডগ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড ইত্যাদি নামে তহবিল দিতে চেয়েছিল জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত সম্পদশালী দেশগুলোর জোট।

ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুত অর্থের খুব সামান্যই দিয়েছে বিভিন্ন জলবায়ু তহবিলে। ফলে প্রান্তিক জাতি/দেশ সমূহ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা করার জন্য লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড নামক আলাদা তহবিল চেয়ে আসছে উন্নত দেশগুলোর কাছে।

উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েও ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর জলবায়ু অর্থায়নে ১০০ বিলিয়ন ডলার দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও জলবায়ু তহবিল উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘নতুন’তবে যাচাই-বাছাই ছাড়াই উন্নয়ন সহায়তার সঙ্গে জলবায়ু অর্থের সমন্বয় করে বিগত দুই বছরে মাত্র ৮৩.৩ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করা হয়েছে। যার মধ্যে সর্বাধিক ২০ বিলিয়ন জলবায়ু তহবিল।

অন্যদিকেক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রতিশ্রুত প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন বরাদ্দ এখন আর পর্যাপ্ত নয়। এই অবস্থায় ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক জলবায়ু তহবিলের প্রয়োজন হবে ১৪০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার। তাই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান অভিযোজন এবং প্রশমনের চাহিদা মেটাতে অর্থায়নের জন্য নতুন সম্মিলিত লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর দ্বারা প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করতে রাজি করাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো একত্রে সোচ্চার হতে হবে। ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের এই চুক্তিকে বাস্তবে পরিণত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে।’ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতির মুখে পড়া উন্নয়নশীল দেশগুলো ধনী দেশগুলোর কাছে যে ক্ষতিপূরণ চাইছেবিষয়টি আলোচ্য সূচিতে রাখতে সম্মত হয়েছেন কপ প্রতিনিধিরা।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলার মানুষ। বৃষ্টি ও বন্যার চিরায়ত চরিত্র, ঋতু চক্র প্রভৃতি পরিবর্তন হওয়ার ফলে কৃষি ও অকৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফাইন্যান্সিংয়ের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর মতামতের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করলে জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা করা সহজ হবে। উদাহরণস্বরূপকৃষকদের জন্য বিরূপ আবহাওয়ার ক্ষতি মোকাবিলায় শস্য বিমাদুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণজীবিকা পুনরুদ্ধারক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ সহায়তা ইত্যাদি সবই সম্ভব হবে লস অ্যান্ড ড্যামেজের ফান্ড থেকে।

এমনকি এই লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসন এবং নতুন জীবিকা অনুসন্ধানে সহায়তা করা যাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এবারের সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মহল তাকিয়ে আছেসেগুলো হলো—

১. উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি (লস ও ড্যামেজ) পূরণে অর্থায়নের ব্যবস্থা তৈরি করা;

২. অভিযোজনের (বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে পরিচালিত) জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি করা;

৩. জাতীয়ভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা জোরদার করা;

৪. ২০০৯ সালে ধনী দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জলবায়ু কার্যক্রমে বছরে প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদান নিশ্চিত করা;

৫. গ্লাসগো (কপ-২৬) চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ পৃথিবীর নানা জায়গায় চলমান সব সশস্ত্র সংঘর্ষ বন্ধের ব্যাপারে ‘কপ-২৭’ থেকে জোর আহবান জানানোর বিষয়টি প্রত্যাশা করা যেতে পারে। (কালের কণ্ঠ৬ নভেম্বর২০২২)

বাংলাদেশের জনগণ যারা জলবায়ু–সংকটে ভুগছেনতারা এই সংকটের জন্য দায়ী নন। আমাদের জোরালোভাবেই প্রশ্ন তোলা উচিতউন্নত দেশগুলোর বারবার জলবায়ু–ন্যায্যতা অস্বীকার করার নৈতিক দিকটিকে নিয়েও। তারপরও আমরা আশাবাদী যে ২৭তম জলবায়ু সম্মেলন বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় কার্যকর একটি আলাদা তহবিল সৃষ্টির বিষয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে। আমরা ‘কপ-২৭’-এর সফলতা কামনা করি।