ঢাকা ০২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বগুড়ায় বাথরুমে ছিল আশামনির বিবস্ত্র দেহ, মস্তকবিহীন শিশুর বস্তাবন্দি দেহ ছিল খাটের নিচে। পরিবারের দাবী দাম্পত্য কলহেই খুন হলো আশামনি ও শিশু রাফি।

বগুড়ায় চাঞ্চল্যকর শিশুসহ মা কে হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন জনে বিভিন্ন বক্তব্য দিতে শুরু করেছে। তবে আশামনির পরিবারের দাবী দাম্পত্য কলহের জেরেই স্বামীর হাতে খুন হন আশামনি ও তার শিশু সন্তান রাফি। এমন লোমহর্ষক ঘটনার বর্নানা দিতে গিয়ে অনেকে আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়েছে। সারা বগুড়া জুড়ে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বগুড়া শহরের বনানী এলাকায় ‘শুভেচ্ছা’ হোটেলে হত্যাকাণ্ডের শিকার আশামনির (২০) মরদেহ বাথরুমে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে ছিল। তার এক বছর বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহ আল রাফির বস্তায় ভরা মাথাবিহীন মরদেহটি রাখা ছিল খাটের নিচে। বর্তমানে করতোয়া নদীতে শিশুটির মাথার খোঁজ করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শিশু রাফিকে হত্যার পর বিচ্ছিন্ন মাথা নদীতে ফেলে দেন বাবা আজিজুল হক। পুলিশ এসব তথ্য ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছে।

এর আগে ২ জুন বেলা ১১টার দিকে শহরের বনানী এলাকায় শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে গলাকাটা মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। এ জোড়া খুনের ঘটনায় আজিজুল হক নামের একজনকে আটক করেছে বগুড়ার শাজাহানপুর থানা পুলিশ। তিনি নিহত নারীর স্বামী এবং চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত বলে পুলিশ জানিয়েছেন। আটক আজিজুল হকের বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়ায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিশুটির মাথা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। নিহত আশামনির ভাই শহরের নারুলী এলাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসান সনি জানান, সেনাসদস্য আজিজুল হকের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়।

দুইমাসের ছুটি নিয়ে আজিজুল কিছুদিন আগে বগুড়ায় আসেন। এরপর ৩০ মে বগুড়া শহরের নারুলি এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। পরে বেড়ানোর কথা বলে আজিজুল হক তার বোন ও ভাগনেকে নিয়ে ১ জুন বেরিয়ে পড়েন। শুভেচ্ছা হোটেলের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর আজিজুল হক তার স্ত্রী ও এক বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে দোতলার একটি কক্ষে ওঠেন। রাত ১১টার দিকে তিনি হোটেল থেকে বের হয়ে যান। পরে ২ জুন বেলা ১১টার দিকে হোটেলের ভাড়া পরিশোধ করতে আসেন। কিন্তু তখন তার সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তান না থাকায় সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে ওই কক্ষ থেকে আজিজুল হকের স্ত্রীর মরদেহ ও শিশুটির বস্তাবন্দি মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে।

শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, সেনাসদস্য আজিজুল হক হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার দাবি, সন্তানের মাথা পাশের করতোয়া নদীতে ফেলে দিয়েছেন। শিশুটির মাথা খোঁজা হচ্ছে।
নিহত আশামনির ভাই মেহেদি হাসান জানান, তার বোনের সঙ্গে ভগ্নিপতি আজিজুল হকের দাম্পত্য কলহ ছিল। তার ধারণা দাম্পত্য কলহের কারণেই তার বোন ও ভাগনকে খুন করা হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বগুড়ায় বাথরুমে ছিল আশামনির বিবস্ত্র দেহ, মস্তকবিহীন শিশুর বস্তাবন্দি দেহ ছিল খাটের নিচে। পরিবারের দাবী দাম্পত্য কলহেই খুন হলো আশামনি ও শিশু রাফি।

আপডেট সময় ০৯:৫২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

বগুড়ায় চাঞ্চল্যকর শিশুসহ মা কে হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন জনে বিভিন্ন বক্তব্য দিতে শুরু করেছে। তবে আশামনির পরিবারের দাবী দাম্পত্য কলহের জেরেই স্বামীর হাতে খুন হন আশামনি ও তার শিশু সন্তান রাফি। এমন লোমহর্ষক ঘটনার বর্নানা দিতে গিয়ে অনেকে আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়েছে। সারা বগুড়া জুড়ে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বগুড়া শহরের বনানী এলাকায় ‘শুভেচ্ছা’ হোটেলে হত্যাকাণ্ডের শিকার আশামনির (২০) মরদেহ বাথরুমে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে ছিল। তার এক বছর বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহ আল রাফির বস্তায় ভরা মাথাবিহীন মরদেহটি রাখা ছিল খাটের নিচে। বর্তমানে করতোয়া নদীতে শিশুটির মাথার খোঁজ করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শিশু রাফিকে হত্যার পর বিচ্ছিন্ন মাথা নদীতে ফেলে দেন বাবা আজিজুল হক। পুলিশ এসব তথ্য ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছে।

এর আগে ২ জুন বেলা ১১টার দিকে শহরের বনানী এলাকায় শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে গলাকাটা মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। এ জোড়া খুনের ঘটনায় আজিজুল হক নামের একজনকে আটক করেছে বগুড়ার শাজাহানপুর থানা পুলিশ। তিনি নিহত নারীর স্বামী এবং চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত বলে পুলিশ জানিয়েছেন। আটক আজিজুল হকের বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়ায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিশুটির মাথা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। নিহত আশামনির ভাই শহরের নারুলী এলাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসান সনি জানান, সেনাসদস্য আজিজুল হকের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়।

দুইমাসের ছুটি নিয়ে আজিজুল কিছুদিন আগে বগুড়ায় আসেন। এরপর ৩০ মে বগুড়া শহরের নারুলি এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। পরে বেড়ানোর কথা বলে আজিজুল হক তার বোন ও ভাগনেকে নিয়ে ১ জুন বেরিয়ে পড়েন। শুভেচ্ছা হোটেলের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর আজিজুল হক তার স্ত্রী ও এক বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে দোতলার একটি কক্ষে ওঠেন। রাত ১১টার দিকে তিনি হোটেল থেকে বের হয়ে যান। পরে ২ জুন বেলা ১১টার দিকে হোটেলের ভাড়া পরিশোধ করতে আসেন। কিন্তু তখন তার সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তান না থাকায় সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে ওই কক্ষ থেকে আজিজুল হকের স্ত্রীর মরদেহ ও শিশুটির বস্তাবন্দি মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে।

শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, সেনাসদস্য আজিজুল হক হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার দাবি, সন্তানের মাথা পাশের করতোয়া নদীতে ফেলে দিয়েছেন। শিশুটির মাথা খোঁজা হচ্ছে।
নিহত আশামনির ভাই মেহেদি হাসান জানান, তার বোনের সঙ্গে ভগ্নিপতি আজিজুল হকের দাম্পত্য কলহ ছিল। তার ধারণা দাম্পত্য কলহের কারণেই তার বোন ও ভাগনকে খুন করা হয়েছে।