ঢাকা ১২:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

কবরস্থানে আসামিকে আটকে রেখে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় জামাত আলী নামে ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামিকে অপহরণ করে কবরস্থানে আটকে রেখে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এএসআই ও কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বরাবর লিখিতভাবে এই অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী জামাত আলীর স্ত্রী আসমা খাতুন।  রোববার মধ্যরাতে জামাত আলী অপহরণের শিকার হন বলে অভিযোগ স্ত্রীর। অপহরণের সময় দুই মেয়েসহ শারীরিকভাবে নিজে লাঞ্ছিত হন বলেও অভিযোগ তার।

অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই ভাঙ্গুড়া থানায় কর্মরত। তার নাম জাহিদ হাসান। আরেক অভিযুক্তের নাম জহুরুল ইসলাম। তিনি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

অভিযোগ সূত্রে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার বাদী একটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জামাত আলী। গত রোববার রাত পৌনে এগারোটার দিকে পৌর শহরের সরদারপাড়া মহল্লায় জামাত আলীর বাড়িতে যান এএসআই জাহিদ ও কাউন্সিলর জহুরুল। তারা জামাত আলীকে নিয়ে নির্জন কোনো স্থানে যেতে চান। এতে বাধা দেন জামাত স্ত্রী ও দুই মেয়ে।

এরপর কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম জামাত আলীর স্ত্রীর কাছ থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা এবং ৯০ হাজার টাকার একটি চেক নেন। রাত একটার দিকে জামাত আলীকে বাড়ি পৌঁছে দেন অভিযুক্ত এএসআই ও কাউন্সিলর। পরের দিন পৌরসহরের শরৎনগর বাজারের অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে ওই চেকের টাকা তুলে নেন তুহিন নামে এক ব্যক্তি।

ভুক্তভোগী জামাত আলীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার মেয়ে রিয়া আক্তার মিম বলেন, আমার বাবা ওয়ারেন্টের আসামি কি না,  তা জানা নেই। মধ্যরাতে কাউন্সিলর জহুরুল ও পুলিশ অফিসার জাহিদ কোনো কাগজপত্র না দেখিয়ে বাবাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যান। এ সময় বাধা দিলে আমার হাতে তারা হ্যান্ডকাফ পরায়। এ সময় আমার সঙ্গে এবং মায়ের সঙ্গে নোংরা আচরণ করে। আমাদের গায়েও হাত দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। আমার বাবা বাড়ির ফোন নাম্বার বলতে পারেননি। পরে কাউন্সিলর জহুরুল বাড়িতে এসে ফোন ধরিয়ে দিয়ে দেড় লাখ টাকা দিতে বলেন। টাকা দেওয়ার পরে বাবাকে তারা বাড়িতে রেখে যান।

অভিযোগের বিষয়ে এএসআই জাহিদ হাসান বলেন, জামাত আলী হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত। তাই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে আটক না করে জামিন নেওয়ার জন্য সময় দিতে একটু দূরে নিয়ে কথা বলা হয়েছে মাত্র। টাকা-পয়সা নেওয়া এবং তার স্ত্রী-মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ভিত্তিহীন। কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। একজন ব্যক্তির অপকর্মের দায় পুরো বিভাগ নেবে না। তাই ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুন্সি  অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমি ঢাকায় আছি। বিষয়টি অ্যাডিশনাল এসপির থেকে জেনেছি। তদন্ত যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য আমি তাকে পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসার নির্দেশনা দিয়েছি। কাল-পরশুর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছি। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

কবরস্থানে আসামিকে আটকে রেখে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়

আপডেট সময় ১২:১৬:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০২২

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় জামাত আলী নামে ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামিকে অপহরণ করে কবরস্থানে আটকে রেখে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এএসআই ও কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বরাবর লিখিতভাবে এই অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী জামাত আলীর স্ত্রী আসমা খাতুন।  রোববার মধ্যরাতে জামাত আলী অপহরণের শিকার হন বলে অভিযোগ স্ত্রীর। অপহরণের সময় দুই মেয়েসহ শারীরিকভাবে নিজে লাঞ্ছিত হন বলেও অভিযোগ তার।

অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই ভাঙ্গুড়া থানায় কর্মরত। তার নাম জাহিদ হাসান। আরেক অভিযুক্তের নাম জহুরুল ইসলাম। তিনি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

অভিযোগ সূত্রে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার বাদী একটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জামাত আলী। গত রোববার রাত পৌনে এগারোটার দিকে পৌর শহরের সরদারপাড়া মহল্লায় জামাত আলীর বাড়িতে যান এএসআই জাহিদ ও কাউন্সিলর জহুরুল। তারা জামাত আলীকে নিয়ে নির্জন কোনো স্থানে যেতে চান। এতে বাধা দেন জামাত স্ত্রী ও দুই মেয়ে।

এরপর কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম জামাত আলীর স্ত্রীর কাছ থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা এবং ৯০ হাজার টাকার একটি চেক নেন। রাত একটার দিকে জামাত আলীকে বাড়ি পৌঁছে দেন অভিযুক্ত এএসআই ও কাউন্সিলর। পরের দিন পৌরসহরের শরৎনগর বাজারের অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে ওই চেকের টাকা তুলে নেন তুহিন নামে এক ব্যক্তি।

ভুক্তভোগী জামাত আলীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার মেয়ে রিয়া আক্তার মিম বলেন, আমার বাবা ওয়ারেন্টের আসামি কি না,  তা জানা নেই। মধ্যরাতে কাউন্সিলর জহুরুল ও পুলিশ অফিসার জাহিদ কোনো কাগজপত্র না দেখিয়ে বাবাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যান। এ সময় বাধা দিলে আমার হাতে তারা হ্যান্ডকাফ পরায়। এ সময় আমার সঙ্গে এবং মায়ের সঙ্গে নোংরা আচরণ করে। আমাদের গায়েও হাত দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। আমার বাবা বাড়ির ফোন নাম্বার বলতে পারেননি। পরে কাউন্সিলর জহুরুল বাড়িতে এসে ফোন ধরিয়ে দিয়ে দেড় লাখ টাকা দিতে বলেন। টাকা দেওয়ার পরে বাবাকে তারা বাড়িতে রেখে যান।

অভিযোগের বিষয়ে এএসআই জাহিদ হাসান বলেন, জামাত আলী হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত। তাই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে আটক না করে জামিন নেওয়ার জন্য সময় দিতে একটু দূরে নিয়ে কথা বলা হয়েছে মাত্র। টাকা-পয়সা নেওয়া এবং তার স্ত্রী-মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ভিত্তিহীন। কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। একজন ব্যক্তির অপকর্মের দায় পুরো বিভাগ নেবে না। তাই ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুন্সি  অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমি ঢাকায় আছি। বিষয়টি অ্যাডিশনাল এসপির থেকে জেনেছি। তদন্ত যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য আমি তাকে পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসার নির্দেশনা দিয়েছি। কাল-পরশুর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছি। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।