পাখির প্রজন্ম নষ্ট করার নতুন ফাঁদ
দ্রুত বন্ধের দাবি পাখিপ্রেমীদের পাখিরা প্রকৃতি নিজে নিজে বাসা বানিয়ে থাকবে।এটাই তাদের জন্য মানানসই কিন্তু আবেক দিখিয়ে কৃত্রিম ভাবে এদের জন্য বাসা তৈরি করা মোটেই এদের জন্যে শোভন তো নয় বরং রীতিমত ধ্বংসাত্মক বলে জানাচ্ছেন, বন্যপ্রাণী গবেষক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।
তাদের মতে,সম্প্রতি বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে আরএফএল কোম্পানী কর্তৃক কৃত্রিম পাখীর বাসা (বার্ড নেস্ট) বাজারজাতকরা পাখী ও এদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিরাট হুমকি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের লঙ্ঘন।
সুত্র জানায়,কোম্পানিটি অথবা,চালডালইত্যাদি অনলাইন মার্কেটের মাধ্যমে ৩৯৯ টাকা দামে কৃত্রিম ওই পাখির বাসাটি বাজারে ব্যাপক বিক্রি চালিয়ে যাচ,বন বিভাগের বিনা অনুমতিতে চালিয়ে যাচ্ছে বন্যপ্রাণী বিরোধী ওই সব কার্যক্রম।
এদিকে আরএফএল কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান,এটা কোম্পানির উপরে লেভেলে সিদ্ধান্ত আমরা শুধুমাত্র চাকরি করি। আমাদের কোন হাত নেই।
বন্যপ্রানীসেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাখিপ্রেমিক সোসাইটির আহবায়ক বিশ্বজি পাল বলেন: জনপ্রিয় আরএফএল কোম্পানী কর্তৃক বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাজারজাত করা কৃত্রিম পাখীর বাসা (বার্ড নেস্ট) পণ্যটি নিষিদ্ধকরণ ও আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
তিনি আরো বলেন,পাখিদের বসবাসের জন্য গাছে হাড়ি-কলস ইত্যাদি বেধে কৃত্রিম বাসা বানিয়ে পাখিদের ভুলিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক স্বভাব ও প্রকৃতি। কৃত্রিম বাসায় পাখির অবস্থান ও ডিম পাড়ার কারণে পাখিদের প্রাকৃতিক স্বভাব ও প্রকৃতি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে পাখিরা প্রজননের সময় বাসা বানানোর জন্য অনুকূল পরিবেশে বাসা তৈরি করে, অভয়াশ্রমের নামে গাছে হাড়ি’র বাসা পেয়ে পাখিরা হারিয়ে ফেলছে তাদের বাসা বুনুন।
ওই কোম্পানীর পাখির বাসা পণ্যটি অনলাইনে ব্যাপক বিক্রি বন্ধ থামাতে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক আবদুল্লাহ আস সাদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন,তিনি পোস্টে লেখেন:
“পাখিদেরকি কখনো দেখেছেন প্লাস্টিকের তৈরি বাসা বানিয়ে থাকে, কিভাবে এই সব উদ্ভট চিন্তা মাথায় আসল,কৃত্রিম পাখির বাসা কখনোই
পাখিদের জন্য উপকারি না,এতে করে পাখিদের প্রাকৃতিক বাসা বানানোর সক্ষমতা কমে যাবে যা ধীরে ধীরে পরবর্তী প্রজন্ম একেবারেই ভুলে যাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন কৃত্তিম পাখির বাসার মাধ্যমে পাখি এই ক্ষতিগুলো হবে:
১.পাখী প্রজাতির বাসা তৈরির দক্ষতা নষ্ট হবে যাবে।
২.এটি পাখী ধরার ফাদ হিসেবে মিসইউজড হবে।
৩. বন্যপ্রানী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ এর ৩৮ নং ধারা লংঘিত হবে।
৪.পাখী পালন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়াবে।
হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী জানান,কৃত্রিমবাসা দেয়া হয় পাখিদের বসবাসের জন্য তখন পাখিদের মধ্যে একটা বাসা নিয়ে আচরণগত কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। কারণ প্রতিটা গাছে একই আকৃতির কৃত্রিম বাসায় ডিম পাড়াতে মাংসাশী পাখিদের শিকারে পরিণত হচ্ছে। বাসা বানাবার পদ্ধতিও তারা হারিয়ে ফেলছে। অপরদিকে সঠিক তাপমাত্রা না থাকায় অধিকাংশ ডিম থেকে বাচ্চা ফুটছেনা। এছাড়া কৃত্রিম বাসাতে ঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছেনা পাখির বাচ্চা।