নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে দুটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬০ ভরি স্বর্ণ, ১৬০ ভরি রুপা ও স্বর্ণালংকার বিক্রির ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া তাদের কাছে থেকে একটি দেশি পাইপগান, দুই রাউন্ড কার্তুজ, গ্যাস সিলিন্ডার ও পাইপ জব্দ করা হয়।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থানার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামের মো. নোমান, একই জেলার মার্টিন ইউনিয়নের পশ্চিম চর মার্টিন গ্রামের মো. সুজন হোসেন, কমলনগর থানার হাজিরহাট ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর গ্রামের কৃঞ্চ কমল সরকার, সোনাইমুড়ি উপজেলার নদনা ইউনিয়নের জগজীবনপুর গ্রামের মো. শাহাদাত হোসেন, একই উপজেলার বজরা ইউনিয়নের মুসলিম গ্রামের হাজি বাড়ির মো. সাদ্দাম হোসেন জিতু , বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার করিমপুর এলাকার মুন্সি বাড়ির সালাউদ্দিন ও কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের জৈনদপুর গ্রামের মো. মিজানুর রহমান রনি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, গত শুক্রবার ১০-১৫ জনের একটি ডাকাত দল রাত ৩টার পর চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে প্রবেশ করে। ওই সময় অস্ত্রের মুখে নৈশপ্রহরীসহ অন্যান্য চলাচলকারী লোকজনকে ডাকাত দল জিম্মি করে। এরপর প্রায় দুই ঘণ্টা ডাকাতি সংঘটিত করে। এ সময় ডাকাতদলকে বাধা দিলে নৈশপ্রহরী শহীদুল্লাহকে মাথায় আঘাত করলে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। হত্যাসহ ডাকাতির ঘটনায় কবিরহাট থানায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে ডাকাতদের বহনকারী পিকআপ চালক নোমান লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানা এলাকায় লুণ্ঠিত মালামাল বিক্রির চেষ্টা করছে। পরে পুলিশ নোমানের অবস্থান চিহ্নিত করে। পরে কমলনগর থানার মুন্সিরহাট এলাকা থেকে রোববার (১০ ডিসেম্বর) নোমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। মূলত এই দুর্ধর্ষ ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী মো. শাহাদাত।
এর আগে, গত শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভোর রাতের দিকে কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারের মা-মনি জুয়েলার্স ও নুর জুয়েলার্সে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। লুট হওয়া স্বর্ণালঙ্কারের বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। পুলিশের ভাষ্য দুটি দোকান থেকে সর্বমোট ৭২ ভরি স্বর্ণ লুট করেছে ডাকাত দল।