ঢাকা ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি শরীয়তপুরে ছেলের গাছের গোড়ার আঘাতে বাবা নিহত সেই ছেলে গ্রেফতার। ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক শিগগিরই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা: শিবির সভাপতি চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত, ২ নেতা বহিষ্কার সরকার পতনের পর এই প্রথম মুখ খুললেন সাদ্দাম-ইনান কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ভোলায় শহীদ পরিবারদের কোটি টাকার সহায়তা দিল- জামায়াতে ইসলাম জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন যোগ দিতে নিউইয়র্কে দৈনিক তরুণ কণ্ঠ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শান্ত

দেশে প্রতি ৫ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত

ঢাকা: বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর)। এ বছর দিবসটির স্লোগান হচ্ছে, ‘Know your risk, Know your response.’ বাংলায় যার ভাবানুবাদ করা হয়েছে ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

১৯৯১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হবে।

১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের কারণ হচ্ছে, এ দিন ফ্রেডরিক ব্যান্টিং জন্মগ্রহণ করেন। যিনি সহযোগী চার্লস বেল্টের সঙ্গে অধ্যাপক ম্যাকয়িডের গবেষণাগারে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণের মহৌষধ ইনসুলিন আবিষ্কার করেন।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যবস্থা সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়ানো।

উন্নত দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বংশগত কারণ ছাড়াও নগরায়ন ও পরিবর্তিত জীবনধারণের কারণেই দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ ডায়াবেটিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক জানান, বর্তমানে দেশে এক কোটি ৩০ লাখ লোকের ডায়াবেটিস রয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। ২০২২ সালে ডায়াবেটিস টেস্ট সার্ভে থেকে জানা যায়, দেশে প্রতি দশ জনে এক জনের ডায়াবেটিস রয়েছে। ২০২১-২২ সালে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির পক্ষ থেকে এক লাখ লোকের ওপর করা একটি স্টাডি থেকে জানা যায়, দেশে পাঁচ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের চার দশমিক চার শতাংশ। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ২৫ দশমিক সাত শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি চার জনে একজন গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

তিনি আরও বলেন, দেখা যাচ্ছে ১৯ থেকে ২১ সালের মধ্যে প্রতি দুই বছরে ৫৬ শতাংশ হারে ডায়াবেটিস বাড়ছে এবং সমসংখ্যক লোকের প্রি-ডায়াবেটিস রয়েছে। আমাদের ধারণা, এভাবে চলতে থাকলে ১৫ থেকে ২০ বছরে এই সংখ্যা ডাবল হয়ে যাবে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করবে।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির তথ্য মতে, বর্তমানে দেশে এক কোটি ৮০ লাখের কাছাকাছি ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য মতে, ২০৪৫ সালে এই সংখ্যা আড়াই কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, আমাদের দেশে ৪১ দশমিক পাঁচ শতাংশ রোগী জানে না তার ডায়াবেটিস আছে। না জানলে তারা প্রতিরোধ করবে কিভাবে? সবাইকে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পরীক্ষায় আনতে হবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বিষয়ে তিনি বলেন, শিশু বয়সে স্কুল কলেজ থেকেই মূলত ডায়াবেটিস সমস্যা শুরু হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধের বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। রাষ্ট্রকে সব কার্যক্রমের সঙ্গে এটাকে সমন্বয় করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুতে এটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। হাঁটাহাঁটির বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত এবং বাধ্য করতে হবে। যেমন জাপানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা অফিস থেকে প্রায় এক মাইল দূরে। ফলে তাদের অফিসে আসার সময় এক মাইল এবং যাওয়ার সময় এক মাইল হাঁটতেই হয়। নগরে হাঁটার রাস্তা ও ফুটপাত রাখতে হবে। সাইকেল চালানোয় উৎসাহিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এককভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, সরকার উদ্যোগ নেবে পাশাপাশি সব প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে হবে। এখন যে হিসাব রয়েছে তাতে দেশে যে পরিমাণ মানুষ মারা যাচ্ছে, তার ৭০ শতাংশই অসংক্রামক রোগে মারা যাচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। এ রোগে আক্রান্তের এক নম্বর কারণ হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। দুই নাম্বার কায়িক শ্রম বা হাঁটাহাঁটি করা। তিন নম্বর ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানতে হবে। ঝুঁকি অনুসারে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি

দেশে প্রতি ৫ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত

আপডেট সময় ১২:৪৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

ঢাকা: বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর)। এ বছর দিবসটির স্লোগান হচ্ছে, ‘Know your risk, Know your response.’ বাংলায় যার ভাবানুবাদ করা হয়েছে ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

১৯৯১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হবে।

১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের কারণ হচ্ছে, এ দিন ফ্রেডরিক ব্যান্টিং জন্মগ্রহণ করেন। যিনি সহযোগী চার্লস বেল্টের সঙ্গে অধ্যাপক ম্যাকয়িডের গবেষণাগারে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণের মহৌষধ ইনসুলিন আবিষ্কার করেন।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যবস্থা সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়ানো।

উন্নত দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বংশগত কারণ ছাড়াও নগরায়ন ও পরিবর্তিত জীবনধারণের কারণেই দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ ডায়াবেটিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক জানান, বর্তমানে দেশে এক কোটি ৩০ লাখ লোকের ডায়াবেটিস রয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। ২০২২ সালে ডায়াবেটিস টেস্ট সার্ভে থেকে জানা যায়, দেশে প্রতি দশ জনে এক জনের ডায়াবেটিস রয়েছে। ২০২১-২২ সালে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির পক্ষ থেকে এক লাখ লোকের ওপর করা একটি স্টাডি থেকে জানা যায়, দেশে পাঁচ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের চার দশমিক চার শতাংশ। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ২৫ দশমিক সাত শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি চার জনে একজন গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

তিনি আরও বলেন, দেখা যাচ্ছে ১৯ থেকে ২১ সালের মধ্যে প্রতি দুই বছরে ৫৬ শতাংশ হারে ডায়াবেটিস বাড়ছে এবং সমসংখ্যক লোকের প্রি-ডায়াবেটিস রয়েছে। আমাদের ধারণা, এভাবে চলতে থাকলে ১৫ থেকে ২০ বছরে এই সংখ্যা ডাবল হয়ে যাবে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করবে।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির তথ্য মতে, বর্তমানে দেশে এক কোটি ৮০ লাখের কাছাকাছি ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য মতে, ২০৪৫ সালে এই সংখ্যা আড়াই কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, আমাদের দেশে ৪১ দশমিক পাঁচ শতাংশ রোগী জানে না তার ডায়াবেটিস আছে। না জানলে তারা প্রতিরোধ করবে কিভাবে? সবাইকে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পরীক্ষায় আনতে হবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বিষয়ে তিনি বলেন, শিশু বয়সে স্কুল কলেজ থেকেই মূলত ডায়াবেটিস সমস্যা শুরু হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধের বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। রাষ্ট্রকে সব কার্যক্রমের সঙ্গে এটাকে সমন্বয় করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুতে এটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। হাঁটাহাঁটির বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত এবং বাধ্য করতে হবে। যেমন জাপানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা অফিস থেকে প্রায় এক মাইল দূরে। ফলে তাদের অফিসে আসার সময় এক মাইল এবং যাওয়ার সময় এক মাইল হাঁটতেই হয়। নগরে হাঁটার রাস্তা ও ফুটপাত রাখতে হবে। সাইকেল চালানোয় উৎসাহিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এককভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, সরকার উদ্যোগ নেবে পাশাপাশি সব প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে হবে। এখন যে হিসাব রয়েছে তাতে দেশে যে পরিমাণ মানুষ মারা যাচ্ছে, তার ৭০ শতাংশই অসংক্রামক রোগে মারা যাচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। এ রোগে আক্রান্তের এক নম্বর কারণ হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। দুই নাম্বার কায়িক শ্রম বা হাঁটাহাঁটি করা। তিন নম্বর ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানতে হবে। ঝুঁকি অনুসারে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।