আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেছেন, বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচন করতেই হবে, এ কথা সংবিধানে লেখা নেই। পৃথিবীর কোনো আইনেও লেখা নেই।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের সময় আমরা দেখেছি যে অনেক রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে না।
শনিবার (৪ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপ শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার লক্ষ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টা নির্বাচন কমিশন যে ব্রিফিং করেছে সেটা শুনলাম। বিভিন্ন দল ও আমরা প্রশ্ন করেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার তার উত্তর দিয়েছেন। আমরা খুশি এটা দেখো যে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার লক্ষ্যে ইসি যে ব্যবস্থাগুলো নিয়েছে এবং এতে আমাদের সরকার যে সহায়তা করেছে, প্রায় ৮২টি সংস্কার আইনে করা হয়েছে, তা ইসির
ব্রিফিংয়ে দেখেছি। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় ব্যালট পেপারের পেছন দিকে, আগে নিয়ম ছিল যে, ৭২ সালে আইনে ছিল ব্যালট পেপারের পেছনে সিল এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সই থাকবে। দুঃখজনক হলেও সত্য ৭৮ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করে শুধু সিল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এবার পুনরায় প্রতিটি ব্যালট পেপারের পেছনে সইয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে, যার মাধ্যমে নির্বাচন আরও সুষ্ঠু হবে। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ অন্য বিষয়ে যে ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে, এর মাধ্যমে সংবিধান সম্মতভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমরা মনে করি।
অনেকেই বলে গেছেন ইসির প্রতি আস্থা আছে, কিন্তু ভয়টা হলো আপনাদের ক্যাডার বাহিনীকে নিয়ে, আপনারা অরাজকতা করবেন না, এ নিশ্চিয়তা কে দেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো আরাজকপূর্ণ নির্বাচন করে না। আমরা বিশ্বাস করি, সম্মানীত ভোটাররা কেন্দ্রে এসে তাদের ভোট দেবেন। যে সব রাজনৈতিক দল নাম সর্বস্ব, যাদের ভোটার নাই, তারাই শুধু এসব কথা বলতে পারে বলে আমরা মনে করি।
বিএনপি সংলাপে আসেনি, তাদের ছাড়া নির্বাচন কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, বিএনপিকে নিয়ে যে নির্বাচন করতে হবে একথা সংবিধানে লেখা নেই। পৃথিবীর কোনো আইনেও লেখা নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের সময় আমরা দেখেছি যে অনেক রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে না। সুতরাং সব দল, যাদের ক্যাপাসিটি নাই, যাদের জনসমর্থন নাই, যাদের জনগণের ওপর আস্থা নাই, তারা তো নির্বাচনে আসবেই না।
বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি সহিংসতাপূর্ণ। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি না। তারা সন্ত্রাসী সংগঠনের মতো কর্মসূচি দিচ্ছে। যে কোনো দল বা প্রতিষ্ঠান যদি আইনের বিরুদ্ধে কাজ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়েছে, নিচ্ছে এবং আগামীতেও নেবে।
বিএনপিকে চিঠি দেওয়ার মতো কোনো ব্যক্তি ইসি পেল না, বিষয়টি সামনে আনলে ফারুক খান বলেন, আমি মনে করি বিএনপির জন্য এটা লজ্জাজনক ব্যাপার। তারা দলীয় কার্যালয়ে থাকবে না কেন?
বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে ইসির কাছে কোনো শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, এটা ইসি জানে কী ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা ব্রিফিংয়ে বলেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। আগামীতে আরও সুষ্ঠু হবে। ইসি বলেছে, তারা আরও প্রচারণা চালাবে। এতে ভোটাররা আরও উৎসাহিত হবেন।
তফসিল ঘোষণার আগে শেষবারের মতো এ সংলাপের প্রথমধাপে ২২টি দলের মধ্যে ১৩টি দল অংশ নেয়, ৯টি দল অনুপস্থিত ছিল।