ঢাকা: শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। সরকার পতনের একদফা দাবিতে আন্দোলন করা রাজনৈতিক দলগুলোসহ এ কর্মসূচি পালন করে জামায়াতও।
জানা গেছে, আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে।
বিএনপির একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্রটি বলেছে, আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচির দেওয়া হবে। এক দফা দাবি আদায়ে এবার লাগাতার হরতাল-অবরোধের কর্মসূচির চিন্তা করছে বিএনপি।
এ ছাড়া চলমান যুগপৎ আন্দোলনে যাতে ভাটা না পড়ে, তাই কঠোর কর্মসূচি নিয়ে দলের অভ্যন্তরে আলাপ আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেপ্তার হওয়ায় হওয়ায় তার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে কে দায়িত্ব পালন করবেন- সেটি নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, মহাসচিব আটক বা গ্রেপ্তার হলে কিংবা অন্য কোনো কারণে তার অনুপস্থিতিতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চাইলে স্থায়ী কমিটির কোনো সদস্য বা অন্য যে কাউকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পদে নিযুক্ত করতে পারবেন। ফখরুলকে গ্রেপ্তারের পর পর তার মুক্তি চেয়ে দলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়েছেন রিজভী।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানিয়েছে, মির্জা ফখরুলের গ্রেপ্তারের পরপরই তার পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কয়েকজনের নাম আলোচনায় এসেছে। তাদের মধ্যে রিজভী ছাড়া কূটনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নাম এসেছে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আবদুল মঈন খানও আছেন এ তালিকায়। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিযুক্ত করার বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেছেন। বৈঠক থেকে পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে লাগাতার হরতাল বা অবরোধের কথা উঠে এসেছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি। পরিস্থিতি বিবেচনার মাধ্যমেই তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আপাতত আগামী দিনে সরকার পতনের এক দফার কর্মসূচি হিসেবে সারা দেশে হরতাল বা অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার ব্যাপারেই তারা চিন্তা ভাবনা করছেন। অর্থাৎ, আগামী দিনগুলোয় এমন ঘোষণা আসতে পারে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলানিউজকে বলেন, হরতাল পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছে। আগামীতে লাগাতার কঠোর কর্মসূচির ব্যাপারেও এ নেতা ইঙ্গিত দেন।
উল্লেখ্য, রোববার হরতাল কর্মসূচি পালন চলাকালে বিএনপি মহাসচিবকে তার গুলশানের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। এভাবে তুলে নেওয়ার ৯ ঘণ্টা পর তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজিরও করা হয়।