ঢাকা ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
1Win официальный сайт БК: 1Вин ставки на спорт Casibom’da Hızlı Para Yatırma ve Çekme İşlemleri কাশিমপুর কারাগারে নারী কেলেঙ্কারি ঘটনায় আজিজুলের শাস্তির নয়ছয় (প্রথম পর্ব) পাবনার দুই শহীদের কবর যিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এডওয়ার্ড কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মো আব্দুল আউয়াল পূজার ডিউটিতে আনসার থেকে লাখ টাকার বাণিজ্য তজুমউদ্দিন মেঘনায় জালপাতা নিয়ে দ্বন্দ্ব, ট্রলার ছিনতাই ভোলায় পিস্তল নিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যানসহ আটক-২ সনি’র নতুন ব্রাভিয়া টিভি ও আল্ট এফওয়াই টুফোর বাজারজাত শুরু সীমান্তে মিয়ানমারের গুলিতে ১ বাংলাদেশি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩ বিএনপি কোনো ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে না : প্রিন্স

তাহিরপুরে পানির ওপর সাজানো বিকি বিলের রক্তিম লাল শাপলা,

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় লাল শাপলার হাওর বিকি বিল। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ও পর্যটনসমৃদ্ধ নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর লাল শাপলার বিকি বিল এলাকার ঐশ্বর্যে পরিণত হয়েছে। জেলার উত্তরে বিশাল জৈন্তা-খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে সুবিন্যস্ত হাওর, নদী, খাল, জনপদ। ধান, মাছ, বনজ ও খনিজ সম্পদের পরিচিতির সাথে পর্যটন স্পটের পরিচিতি এখন যোগ হয়ে এই জেলার উন্নয়নে নতুন স্বপ্নের ডানা মেলছে।

মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের পাশে সম্ভাবনাময় লাল শাপলার বিকি বিল এখন নতুন পর্যটন স্পটে রূপ নিয়েছে। দেশের বৃহত্তম টাঙ্গুয়া হাওর, যাদুকাটা নদী, টেকের ঘাটের বারিক্কা টিলা, নীলাদ্রী শহীদ সিরাজ লেক ও জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগানের সৌন্দর্যের কথা মানুষের মুখে মুখেই ছিল। এখন এসব স্থানের সৌন্দর্যের সাথে টেক্কা দিচ্ছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের লাল শাপলার বিকি বিল।

পানির ওপর ফুলে ফুলে সাজানো লালগালিচা। আর দূরে গাঢ় সবুজ পাহাড়। লাল-সবুজে ভরা এমন প্রকৃতির রূপ যে কাউকে পাগল করে তোলে। এ যেন সবুজ পাহাড়ের সাথে লাল শাপলার মিতালি। বিকি বিল যেকোনো পর্যটককে মায়ার জালে জড়িয়ে রাখে। শীতের আগমন না ঘটলেও ষড়ঋতুর বাংলাদেশ সেজেছে লাল শাপলায়। এর সাথে রয়েছে দেশীয় নানা প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির। মনে হয় যেন প্রকৃতি তার রূপের সাথে নিজে বাদ্যযন্ত্রে সুরের ঝরনাধারা ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিকভাবেই এই হাওরে ফুটছে আকর্ষণীয় লাল শাপলা, যা হাওরের আশপাশের পরিবেশ আর গ্রামগুলোকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। বর্ষাকালে হাওরটি পানিতে নিমজ্জিত থাকে। আর বাকি ছয় মাস এখানে চাষ হয় এক ফসলি বোরো ধান। মাত্র কয়েক মাসের জন্য এখানে শাপলা ফোটে। সূর্যের উপস্থিতি বাড়ার সাথে সাথে শাপলা তার আপন সৌন্দর্যকে গুটিয়ে নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সূর্যোদয় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লাল শাপলার সৌন্দর্য দৃশ্যমান থাকে।

জানা যায়, বিকি বিল হাওরের ১০০ কিয়ারের অধিক (৩০ শতাংশে এক কিয়ার) জমি নিয়ে এই শাপলার গালিচা। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শাপলার উপস্থিতি দেখা যায় এ হাওরে। এখানে জন্মে লাল শাপলার পাশাপাশি সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলাও। তবে এর মধ্যে নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর লাল শাপলার প্রতি আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলা মূলত লাল শাপলার তুলনায় অপ্রতুল। স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার লোকজন শাপলা তুলে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন এবং বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে থাকেন। কাশতাল, বরোখাড়া ও আমবাড়ি গ্রাম বিকি বিলটিকে তিন দিক থেকে ঘিরে রেখেছে। কোনো রকম চাষাবাদ ছাড়াই ১৫-১৬ বছর ধরে প্রাকৃতিকভাবে এই বিলে লাল শাপলা ফুলের বিপুল সমারোহ ঘটে। বছরের ছয় মাস এই বিলে পানি অর ছয় মাসই লাল শাপলার এই অপরূপ দৃশ্য দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারেন।

বিকি বিলে ব্যাবহার কারী ছোট নৌকার মাঝি শিরাজ মিয়া বলেন, এখানে যখন শাপলা ফুল ফুটে তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ দেখতে আসে, আমরা তাদেরকে ছোট নৌকা দিয়ে ঘুরাতে নিয়ে যাই, এখানকার স্থানীয় মানুষজন শাপলা তুলে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করে।এমনকি শাপলা তুলে খাদ্য হিসেবেও ব্যাবহার করে থাকেন।

সি এনজি চালক রকিবুল হাসান রাসেল বলেন বিকি বিলে যখন শাপলা ফুল ফুটে তখন দর্শনার্থীদের যাতায়াত বাড়ে, কিন্তুু এখানকার চলাচলের রাস্তা ঘাট খুবই খারাপ। রাস্তাঘাট ভালো হলে পর্যটকদের যাতায়াত আরো বাড়বে।

তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আসাদুজ্জামান রনি বলেন, প্রাকৃতিকভাবেই বিকি বিলে জন্মেছে লাল শাপলা।গোটা এলাকাজুড়ে লাল শাপলার অপরূপ দৃশ্য যে কারোর মন কেরে নেবে।প্রকৃতি তার আপন গতিতে সেজেছে।রঙ বেরঙের শাপলার বাহারি রূপ দেখে চুখ জড়িয়ে যায়।বিকি বিল পর্যটনের নতুন সম্ভাবনাময় স্থান। এখানকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে।এবং এখানকার মানুষের নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

1Win официальный сайт БК: 1Вин ставки на спорт

তাহিরপুরে পানির ওপর সাজানো বিকি বিলের রক্তিম লাল শাপলা,

আপডেট সময় ০৪:২০:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় লাল শাপলার হাওর বিকি বিল। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ও পর্যটনসমৃদ্ধ নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর লাল শাপলার বিকি বিল এলাকার ঐশ্বর্যে পরিণত হয়েছে। জেলার উত্তরে বিশাল জৈন্তা-খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে সুবিন্যস্ত হাওর, নদী, খাল, জনপদ। ধান, মাছ, বনজ ও খনিজ সম্পদের পরিচিতির সাথে পর্যটন স্পটের পরিচিতি এখন যোগ হয়ে এই জেলার উন্নয়নে নতুন স্বপ্নের ডানা মেলছে।

মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের পাশে সম্ভাবনাময় লাল শাপলার বিকি বিল এখন নতুন পর্যটন স্পটে রূপ নিয়েছে। দেশের বৃহত্তম টাঙ্গুয়া হাওর, যাদুকাটা নদী, টেকের ঘাটের বারিক্কা টিলা, নীলাদ্রী শহীদ সিরাজ লেক ও জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগানের সৌন্দর্যের কথা মানুষের মুখে মুখেই ছিল। এখন এসব স্থানের সৌন্দর্যের সাথে টেক্কা দিচ্ছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের লাল শাপলার বিকি বিল।

পানির ওপর ফুলে ফুলে সাজানো লালগালিচা। আর দূরে গাঢ় সবুজ পাহাড়। লাল-সবুজে ভরা এমন প্রকৃতির রূপ যে কাউকে পাগল করে তোলে। এ যেন সবুজ পাহাড়ের সাথে লাল শাপলার মিতালি। বিকি বিল যেকোনো পর্যটককে মায়ার জালে জড়িয়ে রাখে। শীতের আগমন না ঘটলেও ষড়ঋতুর বাংলাদেশ সেজেছে লাল শাপলায়। এর সাথে রয়েছে দেশীয় নানা প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির। মনে হয় যেন প্রকৃতি তার রূপের সাথে নিজে বাদ্যযন্ত্রে সুরের ঝরনাধারা ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিকভাবেই এই হাওরে ফুটছে আকর্ষণীয় লাল শাপলা, যা হাওরের আশপাশের পরিবেশ আর গ্রামগুলোকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। বর্ষাকালে হাওরটি পানিতে নিমজ্জিত থাকে। আর বাকি ছয় মাস এখানে চাষ হয় এক ফসলি বোরো ধান। মাত্র কয়েক মাসের জন্য এখানে শাপলা ফোটে। সূর্যের উপস্থিতি বাড়ার সাথে সাথে শাপলা তার আপন সৌন্দর্যকে গুটিয়ে নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সূর্যোদয় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লাল শাপলার সৌন্দর্য দৃশ্যমান থাকে।

জানা যায়, বিকি বিল হাওরের ১০০ কিয়ারের অধিক (৩০ শতাংশে এক কিয়ার) জমি নিয়ে এই শাপলার গালিচা। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শাপলার উপস্থিতি দেখা যায় এ হাওরে। এখানে জন্মে লাল শাপলার পাশাপাশি সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলাও। তবে এর মধ্যে নয়নাভিরাম মনোমুগ্ধকর লাল শাপলার প্রতি আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলা মূলত লাল শাপলার তুলনায় অপ্রতুল। স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার লোকজন শাপলা তুলে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন এবং বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে থাকেন। কাশতাল, বরোখাড়া ও আমবাড়ি গ্রাম বিকি বিলটিকে তিন দিক থেকে ঘিরে রেখেছে। কোনো রকম চাষাবাদ ছাড়াই ১৫-১৬ বছর ধরে প্রাকৃতিকভাবে এই বিলে লাল শাপলা ফুলের বিপুল সমারোহ ঘটে। বছরের ছয় মাস এই বিলে পানি অর ছয় মাসই লাল শাপলার এই অপরূপ দৃশ্য দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারেন।

বিকি বিলে ব্যাবহার কারী ছোট নৌকার মাঝি শিরাজ মিয়া বলেন, এখানে যখন শাপলা ফুল ফুটে তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ দেখতে আসে, আমরা তাদেরকে ছোট নৌকা দিয়ে ঘুরাতে নিয়ে যাই, এখানকার স্থানীয় মানুষজন শাপলা তুলে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করে।এমনকি শাপলা তুলে খাদ্য হিসেবেও ব্যাবহার করে থাকেন।

সি এনজি চালক রকিবুল হাসান রাসেল বলেন বিকি বিলে যখন শাপলা ফুল ফুটে তখন দর্শনার্থীদের যাতায়াত বাড়ে, কিন্তুু এখানকার চলাচলের রাস্তা ঘাট খুবই খারাপ। রাস্তাঘাট ভালো হলে পর্যটকদের যাতায়াত আরো বাড়বে।

তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আসাদুজ্জামান রনি বলেন, প্রাকৃতিকভাবেই বিকি বিলে জন্মেছে লাল শাপলা।গোটা এলাকাজুড়ে লাল শাপলার অপরূপ দৃশ্য যে কারোর মন কেরে নেবে।প্রকৃতি তার আপন গতিতে সেজেছে।রঙ বেরঙের শাপলার বাহারি রূপ দেখে চুখ জড়িয়ে যায়।বিকি বিল পর্যটনের নতুন সম্ভাবনাময় স্থান। এখানকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে।এবং এখানকার মানুষের নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।