শেরপুর জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে ৯টি শূন্য পদে ২০১৯ সাল থেকে নানা কারণে ঝুঁলে থাকা নিয়োগ সম্পন্ন করার পর সেই নিয়োগকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বাতিল করতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল মরিয়া হয়ে উঠেছে। কার স্বার্থে স্বচ্ছ একটি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বির্তকিত করার পায়তারা করা হচ্ছে তা নিয়ে সচেতন মহল শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
শেরপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে একজন অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ ও সজ্জন ব্যাক্তি বলেই জানেন শেরপুরবাসী। তিনি যোগদান করার পর থেকে শেরপুরের মেজিস্ট্রেট আদালত ঘুষ ও যাবতীয় দূর্নীতি মুক্ত হয়েছে।
নিয়োগ চুড়ান্ত হওয়ার চারদিন পর গত ১৮ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলা হতে প্রকাশিত দৈনিক ‘আশার দিগন্ত’ নামক পত্রিকার এবং ‘দৈনিক ইনকিলাব’ পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে “শেরপুরে সিজেএম কোর্টে ৯ পদে জনবল নিয়োগে গোপনীয়তা: নানা প্রশ্ন” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই খবরটি কোন তথ্য উপাত্ত না নিয়েই মনগড়াভাবে খবর প্রকাশ করে। প্রকাশিত সংবাদে প্রার্থীদের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণের মারাত্মক অভিযোগ করা হয়। আরও দাবি করা হয় যে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানিয়ে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। সম্পুর্ন স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে ঘুষমুক্ত এই নিয়োগ নিয়ে এমন অভিযোগ কিভাবে উঠে এমন প্রশ্ন সবার মুখে মুখে।
উক্ত নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায় যে, দীর্ঘদিন থেকে পদগুলো শূন্য থাকায় আদালতের কাজ ব্যহত হয়ে আসছে। ২০১৮ খ্রি. নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও নানা কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। অবশেষে শেরপুরের জেলা ও দায়রা জজ তৌফিক আজিজের নির্দেশনা মোতাবেক ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে নিয়োগ প্রক্রিয়া আবারো শুরু করা হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়েছে জেলা ও দায়রা জজ তৌফিক আজিজ কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে। এজন্য বিধি মোতাবেক দু’টি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আদালতের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক বেঞ্চ সহকারী ২ জন, ক্যাশ সরকার ১ জন, প্রসেস সার্ভার ২জন, অফিস সহায়ক ৩ জন, নিরাপত্তা কর্মী ১ জন সহ মোট ৯টি পদে কর্মচারী নিয়োগের জন্য ১ থেকে ৮ আগষ্ট অনলাইনে এবং অফলাইনে আবেদন পত্র গ্রহণ করা হয়। ১৪ অক্টোবর /২০২৩ খ্রি. সকাল ৯ ঘটিকায় শেরপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের নামের তালিকা নিয়োগের জন্য সুপারিশসহ শেরপুরের জেলা ও দায়রা জজ বরাবর প্রেরণ করা হয়।
অনুসন্ধানকালে আবেদনকারীদের অনেকের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, এসব অভিযোগের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। তারা কোথাও কোন লিখিত অভিযোগও করেন নাই। আদালত পাড়ায় একটি সিন্ডিকেট স্বচ্ছ একটি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বির্তকিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এমন গুজব রটাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। জেলা ও দায়রা জজ একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে ভারতে অবস্থান করছেন। উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে কোনভাবে অবৈধ সুবিধা আদায় করতে ব্যার্থ হয়ে স্বার্থান্বেষী কোন মহল এসব প্রপাকাণ্ডা ছড়াচ্ছে এবং তাদের দ্বারা কোনভাবে প্রভাবিত হয়ে এমন উদ্ভট অভিযোগ এনে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে এমনটাই মনে করছেন আদালত সংশ্লিষ্ট এবং সচেতন মহল।