ঢাকা ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি শরীয়তপুরে ছেলের গাছের গোড়ার আঘাতে বাবা নিহত সেই ছেলে গ্রেফতার। ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক শিগগিরই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা: শিবির সভাপতি চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত, ২ নেতা বহিষ্কার সরকার পতনের পর এই প্রথম মুখ খুললেন সাদ্দাম-ইনান কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ভোলায় শহীদ পরিবারদের কোটি টাকার সহায়তা দিল- জামায়াতে ইসলাম জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন যোগ দিতে নিউইয়র্কে দৈনিক তরুণ কণ্ঠ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শান্ত

সামরিক আদালতে ইমরান সমর্থকদের বিচার আটকে দিল সুপ্রিম কোর্ট

বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক আদালতে বিচারকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষজ্ঞরা এ রায়কে গণতন্ত্রের বিজয় বলে অভিহিত করেছেন।

এর ফলে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শতাধিক সমর্থকের বিচার আর সামরিক আদালতে করতে পারবে না সরকার।

গত মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভ মিছিল থেকে শতাধিক নেতাকর্মী-সমর্থককে আটক করা হয়। তাদের বিচার সামরিক আদালতে করা হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

পাকিস্তান সরকারের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

ইমরান সমর্থকদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো এখন বেসামরিক ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।

এই রায় সামরিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত অন্যান্য বেসামরিক নাগরিকদেরও আপিল করার পথ প্রশস্ত করতে পারে।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনজীবী আইতাজ আহসান বলেন, আজকের রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং এটি দেশের সংবিধান, আইন ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

অন্যান্য আইন বিশেষজ্ঞরাও এই ‘সাহসী’ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহসান ভুঁন স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজকে বলেন, এই সিদ্ধান্ত ‘পুরোপুরি সঠিক’ এবং সংবিধানকে সমুন্নত রেখেছে।

সামরিক আদালতে ইমরান খানের সমর্থকদের বিচারের জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে এই প্রক্রিয়াটি অন্যায্য হবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করে যে সামরিক ট্রাইব্যুনালে স্বচ্ছতার অভাব, যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি অবহেলা এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তির ইতিহাস রয়েছে।

তবে কিছু সরকারি কর্মকর্তা এই রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।

বেলুচিস্তান প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক তথ্যমন্ত্রী জান আচাকজাই বলেন, তিনি এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করলেও এটি একটি ‘হতাশাজনক’ বিষয় এবং পিটিশনের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক সমর্থন প্রদর্শন ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইমরান খান আবেদনকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন।

গত বছর অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইমরান খানকে গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগে নতুন করে অভিযুক্ত করা হয়। তিনি এটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী বিশেষ ভূমিকায় থাকে সবসময়। কখনও তারা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আবার কখনও পর্দার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ায়।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ইমরান খান জয়ী হন। কিন্তু পর্দার আড়ালের শক্তিশালী খেলোয়াড় সেনাবাহিনীর কাছে তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেননি।

অন্যদিকে তিনি সেনাবাহিনীর অন্যতম সোচ্চার সমালোচক ছিলেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর জনপ্রিয়তা কমেছে।

গত মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। কিছূ বিক্ষোভকারী সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। অনেকে সামরিক বাহিনীর স্থাপনাগুলোয় হামলা চালায়। কয়েক হাজার সমর্থক বিক্ষোভে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছিল এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

এরপর থেকে ইমরান খান এবং পিটিআইকে দমন-পীড়নের মুখোমুখি হতে হয়েছে, দল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার আগেই তার অনেক সিনিয়র নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি

সামরিক আদালতে ইমরান সমর্থকদের বিচার আটকে দিল সুপ্রিম কোর্ট

আপডেট সময় ০৫:১৩:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক আদালতে বিচারকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষজ্ঞরা এ রায়কে গণতন্ত্রের বিজয় বলে অভিহিত করেছেন।

এর ফলে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শতাধিক সমর্থকের বিচার আর সামরিক আদালতে করতে পারবে না সরকার।

গত মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভ মিছিল থেকে শতাধিক নেতাকর্মী-সমর্থককে আটক করা হয়। তাদের বিচার সামরিক আদালতে করা হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

পাকিস্তান সরকারের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

ইমরান সমর্থকদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো এখন বেসামরিক ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।

এই রায় সামরিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত অন্যান্য বেসামরিক নাগরিকদেরও আপিল করার পথ প্রশস্ত করতে পারে।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনজীবী আইতাজ আহসান বলেন, আজকের রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং এটি দেশের সংবিধান, আইন ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

অন্যান্য আইন বিশেষজ্ঞরাও এই ‘সাহসী’ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহসান ভুঁন স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজকে বলেন, এই সিদ্ধান্ত ‘পুরোপুরি সঠিক’ এবং সংবিধানকে সমুন্নত রেখেছে।

সামরিক আদালতে ইমরান খানের সমর্থকদের বিচারের জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে এই প্রক্রিয়াটি অন্যায্য হবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করে যে সামরিক ট্রাইব্যুনালে স্বচ্ছতার অভাব, যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি অবহেলা এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তির ইতিহাস রয়েছে।

তবে কিছু সরকারি কর্মকর্তা এই রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।

বেলুচিস্তান প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক তথ্যমন্ত্রী জান আচাকজাই বলেন, তিনি এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করলেও এটি একটি ‘হতাশাজনক’ বিষয় এবং পিটিশনের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক সমর্থন প্রদর্শন ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইমরান খান আবেদনকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন।

গত বছর অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইমরান খানকে গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগে নতুন করে অভিযুক্ত করা হয়। তিনি এটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী বিশেষ ভূমিকায় থাকে সবসময়। কখনও তারা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আবার কখনও পর্দার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ায়।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ইমরান খান জয়ী হন। কিন্তু পর্দার আড়ালের শক্তিশালী খেলোয়াড় সেনাবাহিনীর কাছে তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেননি।

অন্যদিকে তিনি সেনাবাহিনীর অন্যতম সোচ্চার সমালোচক ছিলেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর জনপ্রিয়তা কমেছে।

গত মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। কিছূ বিক্ষোভকারী সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। অনেকে সামরিক বাহিনীর স্থাপনাগুলোয় হামলা চালায়। কয়েক হাজার সমর্থক বিক্ষোভে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছিল এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

এরপর থেকে ইমরান খান এবং পিটিআইকে দমন-পীড়নের মুখোমুখি হতে হয়েছে, দল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার আগেই তার অনেক সিনিয়র নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।