হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪২ হাজার ২শ পিস নেশাজাতীয় ট্যাবলেট ট্যাপেন্টাডলসহ পাঁচ যাত্রীকে গ্রেফতার করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)’র কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকের এ চালানটি আটক করা হয়,এটি এযাবৎকালে মাদকের সবচেয়ে বড় চালান ।
এঘটনায় কলকাতা ফেরত ৫ যাত্রীকে আটক করা হয়েছে ,গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, মো. সোলাইমান (৪৪), হৃদয় ইসলাম রাজু (২৯), একেএম আবু সাঈদ (৪৭), আশিক সাইফ (৩৬) ও মো. ফারুক (৩৫)। তাদের গ্রামের বাড়ি চট্রগ্রাম ও কক্রবাজার জেলায় বলে জানা গেছে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪২ হাজার ২০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট জব্দ করা হয়,আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্হাটির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো: মজিবুর রহমান পাটওয়ারী এসব তথ্য জানান।
এসময় ঢাকা মেট্রন (উত্তর)’র উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্হিত ছিলেন।
মজিবুর রহমান পাটওয়ারী জানান, এ অসাধু চক্রটি একজন তাদের একজন (মানুষ) সদস্যকে রোগী সাজিয়ে স্থলসীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঠানো হতো। এরপর সেখান থেকে প্লেনে করে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক নিয়ে তারা দেশে ফিরে আসতো।
তিনি আরো জানান, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কলকাতা থেকে (ইউএস-বাংলা) ২০৪ নম্বর একটি ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে অবতরন করে, আর ওই বিমানের যাত্রী ছিলেন, মো: সোলাইমান, হৃদয় ইসলাম রাজু, একেএম আবু সাঈদ, আশিক সাইফ ও মো. ফারুক।
তারা বিমান থেকে নেমে গ্রিন চ্যানেল পার হবার সময় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই পাঁচ যাত্রী, তাদের ব্যাগ ও লাগেজ তল্লাশি করা হয়,তল্লাশীর এক পর্যায়ে তাদের নিকট থেকে মোট ৪২ হাজার ২০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, ট্যাপেন্টাডল মূলত ট্যাবলেট জাতীয় মাদক, ভারত থেকে বাংলাদেশে এই মাদক পাচারের মূলহোতা মো. সোলাইমান, তার গ্রামের বাড়ি চট্রগ্রাম জেলায় সে একজন ব্যবসায়ী।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, সুলাইমান প্রতিমাসে একাধিকবার কলকাতায় যাতায়াত করত,প্রতিবারই বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ট্যাপেন্টাডল-সহ অন্যান্য অবৈধ মাদক দেশে নিয়ে আসতো, এ কাজে তার একাধিক সহযোগী ছিল,কৌশল হিসেবে তারা কলকাতা যেতো যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে,দেশে আসার ক্ষেত্রে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে রুট হিসেবে ব্যবহার করতো।
সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, তল্লাশি করে সুলাইমানের ট্রলি ব্যাগের ভেতর থেকে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় ৩০ হাজার পিস, হৃদয় ইসলাম রাজুর কাঁধে থাকা স্কুল ব্যাগের ভেতর থেকে ৪ হাজার পিস, আবু সাঈদের হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতর থেকে ৩ হাজার, সাইফের হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতর থেকে ৩ হাজার পিস, ফারুকের শপিং ব্যাগ থেকে ২ হাজার ২০০ পিস মাদক জাতীয় ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্হা গ্রহন করা হয়েছে।