ঢাকা ০২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙাতে ভক্তরা দক্ষিণায়নে

আজ ৯ ই অক্টোবর ১৫ ই আশ্বিণ বুধবার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় পাঁচদিন ব্যাপী ২০২৪ শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু। দেবীর আবাহন ঘটস্থাপন অধিবাস, বোধন এবং মহাষষ্ঠী বিহীত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। আগামী ১৩ অক্টোবর ২৬ শে আশ্বিন ১৪৩১ বাংলা রোজ রবিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসব। এদিকে দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশের মন্দির ও পূজামণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল, বর্ণাঢ্য সাজে। রংপুর জেলা সহ সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। মণ্ডপের সামনে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণী ।

ঢাক-ঢোল, কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মন্দিরও মণ্ডপ গুলোতে। আগামীকাল ( ০৯ অক্টোবর ) বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে দুর্গা দেবীর বোধন। শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুতে দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙাতে ভক্তরা বোধন ও বন্দনা পূজা করবেন।বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে দুর্গাপূজা বারোয়ারি বা কমিউনিটি পূজা হিসেবে হিন্দুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ষষ্ঠী তিথির সন্ধ্যায় ধূপের ধোঁয়া ঊলুধ্বনিঢাক ঢোল-কাঁসর-মন্দিরের চারদিক কাঁপানো শব্দ আর পুরোহিতদের কণ্ঠে-যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ মন্ত্রোচ্চারণের ভেতর দিয়ে দূর কৈলাস ছেড়ে দেবী পিতৃগৃহে আসেন।

পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। বসন্তে তিনি এ পূজার আয়োজন করেন। এজন্য দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের এ পূজাকে ‘অকাল বোধন’ বলা হয়।বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে।

এদিকে পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে করনের লক্ষ্যে রংপুর জেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা একাধিক টিম মাঠে নিয়োজিত আছে বলে নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক রংপুর মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এদিকে বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়, রংপুর বিভাগ, রংপুর এর একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) খোলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন এক প্রজ্ঞাপনে।(কন্ট্রোল রুম) দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও পদবি ফোন মোবাইল নম্বর নিম্নে উল্লেখ করা হলো,মোঃ ইকবাল হোসেন, সহকারী পরিচালক 01717998872 জনাব মোঃ আব্দুস সবুর প্রামানিক শিমুল, প্রশাসনিক যুক্ত জুনিয়র একাউন্টস অফিসার 01735000623 জনাব মোঃ মোরশেদ জামিল, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষিক 01712933556 (মোছাঃ জিলুফা সুলতানা)।

পরিচালক।বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয় রংপুর বিভাগ, রংপুর। ফোন ০২৫৮৮৮০৯১২৮ রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা যায়,এবার রংপুর জেলায় মোট ৮৩৫ টি পূজা মন্ডপ তবে রংপুর মহানগরে ৩৩টি ওয়ার্ডে ১৫২টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালিত হবে। এছাড়া জেলার ৮ উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ৬৮৩টি মন্ডপে পূজা উদযাপিত হবে। এরমধ্যে কোতয়ালী থানাধীন ৬৮টি, গঙ্গাচড়ায় ৯৫টি, তারাগঞ্জে ৪৭টি, বদরগঞ্জে ১২৩টি, মিঠাপুকুরে ১০৬টি, পীরগঞ্জে ১০৫টি, পীরগাছায় ৭৩টি ও কাউনিয়ায় ৬৬টি পূজা মন্ডপে একযোগে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও রংপুরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ,হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়ে প্রধান ধর্মীয় উৎসব কিভাবে নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ করা যায় তার সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙাতে ভক্তরা দক্ষিণায়নে

আপডেট সময় ১২:০১:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

আজ ৯ ই অক্টোবর ১৫ ই আশ্বিণ বুধবার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় পাঁচদিন ব্যাপী ২০২৪ শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু। দেবীর আবাহন ঘটস্থাপন অধিবাস, বোধন এবং মহাষষ্ঠী বিহীত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। আগামী ১৩ অক্টোবর ২৬ শে আশ্বিন ১৪৩১ বাংলা রোজ রবিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসব। এদিকে দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশের মন্দির ও পূজামণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল, বর্ণাঢ্য সাজে। রংপুর জেলা সহ সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। মণ্ডপের সামনে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণী ।

ঢাক-ঢোল, কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মন্দিরও মণ্ডপ গুলোতে। আগামীকাল ( ০৯ অক্টোবর ) বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে দুর্গা দেবীর বোধন। শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুতে দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙাতে ভক্তরা বোধন ও বন্দনা পূজা করবেন।বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে দুর্গাপূজা বারোয়ারি বা কমিউনিটি পূজা হিসেবে হিন্দুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ষষ্ঠী তিথির সন্ধ্যায় ধূপের ধোঁয়া ঊলুধ্বনিঢাক ঢোল-কাঁসর-মন্দিরের চারদিক কাঁপানো শব্দ আর পুরোহিতদের কণ্ঠে-যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ মন্ত্রোচ্চারণের ভেতর দিয়ে দূর কৈলাস ছেড়ে দেবী পিতৃগৃহে আসেন।

পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। বসন্তে তিনি এ পূজার আয়োজন করেন। এজন্য দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের এ পূজাকে ‘অকাল বোধন’ বলা হয়।বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে।

এদিকে পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে করনের লক্ষ্যে রংপুর জেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা একাধিক টিম মাঠে নিয়োজিত আছে বলে নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক রংপুর মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এদিকে বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়, রংপুর বিভাগ, রংপুর এর একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) খোলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন এক প্রজ্ঞাপনে।(কন্ট্রোল রুম) দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও পদবি ফোন মোবাইল নম্বর নিম্নে উল্লেখ করা হলো,মোঃ ইকবাল হোসেন, সহকারী পরিচালক 01717998872 জনাব মোঃ আব্দুস সবুর প্রামানিক শিমুল, প্রশাসনিক যুক্ত জুনিয়র একাউন্টস অফিসার 01735000623 জনাব মোঃ মোরশেদ জামিল, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষিক 01712933556 (মোছাঃ জিলুফা সুলতানা)।

পরিচালক।বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয় রংপুর বিভাগ, রংপুর। ফোন ০২৫৮৮৮০৯১২৮ রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা যায়,এবার রংপুর জেলায় মোট ৮৩৫ টি পূজা মন্ডপ তবে রংপুর মহানগরে ৩৩টি ওয়ার্ডে ১৫২টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালিত হবে। এছাড়া জেলার ৮ উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ৬৮৩টি মন্ডপে পূজা উদযাপিত হবে। এরমধ্যে কোতয়ালী থানাধীন ৬৮টি, গঙ্গাচড়ায় ৯৫টি, তারাগঞ্জে ৪৭টি, বদরগঞ্জে ১২৩টি, মিঠাপুকুরে ১০৬টি, পীরগঞ্জে ১০৫টি, পীরগাছায় ৭৩টি ও কাউনিয়ায় ৬৬টি পূজা মন্ডপে একযোগে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও রংপুরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ,হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়ে প্রধান ধর্মীয় উৎসব কিভাবে নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ করা যায় তার সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছি।