সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে বৃক্ষ উজাড়ের পর বনখেকোরা এখন নজর দিয়েছে বনের পাথরের ওপর। সাম্প্রতিক সময়ে পাথর আহরণের জন্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সারি রেঞ্জের জাফলং বিট এলাকায় হামলে পড়েছে পাথরখেকোরা। এসব বনখেকোরা প্রতিদিনই পাহাড় থেকে রাতের আধারে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন করে লুটে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ পাথর।
স্থানীয় ও প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, এক সময় এই জাফলং এলাকাটি বিশাল জায়গা জুড়ে একটি বনাঞ্চল এলাকা ছিলো। জাফলং জিরো পয়েন্টে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের অনেকেই দিনশেষে বিকেল বেলা এই বনে এসে আহার করত,এবং শেষ বিকেলের সময়টুকু এই পাহাড়ে অতিবাহিত করত। পর্যটকদের এই আনাগুনায় এই বনাঞ্চলের সৌন্দর্য অনেকটাই বৃদ্ধি পেতো।
কিন্তু কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের নানা অনিয়মের কারনে দিন-দিন বনের সবুজ রঙ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
শঙ্কা প্রকাশ করে স্থানীয়রা বলেন, পাথর ও বন উজাড়ের কারণে বিশাল সংরক্ষিত বনাঞ্চলটির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে এক সময় এলাকাটি মরুভূমিতে পরিণত হতে পারে এমনটাই ধারণা স্থানীয়দের। বন বিভাগের লোকদের নিরব ভূমিকা পেয়ে কিছু অসাধু চক্র প্রকাশ্যেই পাথর উত্তোলন, আহরণ এবং পাহাড় ভেঙে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রতিদিন পাচার করে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার পাথর ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন বিভাগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, জনবল সংকটের কারণে দুর্গম এলাকাগুলোতে নিয়মিত টহল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তবে স্থানীয় সূত্রগুলো অভিযোগ করেছে, পাচারকারীদের সাথে বনকর্মীদের সক্ষতা থাকায় বনজ সম্পদ রক্ষার পরিবর্তে বনকর্মীরা অসহায় হয়ে পড়ায় পাচারকারী ও ব্যবসায়ীচক্র প্রচলিত বন আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে সংরক্ষিত বনভূমির পাথর লোপাট করে চলছে।
সূত্র জানায়, আইন ফাঁকি দিয়ে কৌশল হিসেবে আহরিত পাথর লুটপাট করছে পাথর খেকো চক্রটি স্থানীয়রা জানান বন বিভাগকে ম্যানেজ করে দমিয়ে রেখেছে।এর ফলে পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছে না বন বিভাগ। অন্যদিকে বন বিভাগ ও প্রশাসনের চোখে ধূলি দিয়ে বিনা রাজস্বে আহরিত পাথর স্থানীয় ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করছে পাথরখেকো চক্রটি।
এ বিষয়ে জানতে বিট কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান’র মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও,তিনি ফোন রিসিভ করেননি।