ঢাকা ০৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লালমনিরহাটে মধ্যরাতে আগুনে পুড়ল ১৪ দোকান, কোটি টাকার ক্ষতি কুমিল্লা জেলা দেবিদ্বার থানা গ্রাম পুলিশের নির্দেশে রাতের অন্ধকারে অবৈধ গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ। দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় জেলা-উপজেলায় কন্ট্রোল রুম চালু : আইজিপি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মটর চালক দলের ভোলা জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা জামাই-শ্বশুর মিলে সোনালী লাইফের ৩৫৩ কোটি লুট সেতু বিভাগের নতুন সচিব ফাহিমুল ইসলাম হিজবুল্লাহর রকেটের আঘাতে কাঁপল ইসরাইলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর স্বামী-স্ত্রীর মরদেহের পাশে পড়ে ছিল চিরকুট। স্টার কাবাবে বাসি খাবার, প্রতিবাদ করায় রক্তাক্ত গ্রাহক রাজবাড়ীতে মহাসড়কে গাছ ফেলে যানবাহনে ডাকাতি

বাঁ পা দিয়েই লিখে বই প্রকাশ করলেন ঝিকরগাছার অদম্য মেয়ে তামান্না

 

জন্ম থেকেই দুই হাত ও একটি পা নেই তামান্না আক্তার নুরার। বাঁ পা দিয়ে লিখে তিনি জীবনের সব পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে পড়ছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই তামান্না এবার বই লিখেছেন পা দিয়ে, সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা ‘ইচ্ছার আলো’ শিরোনামের বইটি। বিষয়টি তিনি ফেসবুকে প্রকাশ করেন। বইটিতে জন্মের পর থেকে নিজের সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেছেন। তামান্না যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান।

এ বই লেখা ছিল তাঁর অনেক দিনের স্বপ্ন। শারীরিক অক্ষমতা কখনো স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না—এ বার্তাই তিনি পাঠকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তামান্না বলেন, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে বসে থাকার সময়ই বই লেখার পরিকল্পনা করি। নিজের জীবন এবং একটি অদম্য প্রতিবন্ধী মেয়ের ওপর বই লিখলে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষই উপকার পাবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কী কী বাধার সম্মুখীন হতে হয়, কি কি সমস্যায়পড়তে হয়, কিভাবে সেই বাধা অতিক্রম করা যায়, কিভাবে সেই সমস্যার সমাধান করা যায়, সেই বিষয়গুলোই তামান্না তুলে ধরেছেন তাঁর বইয়ে। নিজের এক পা দিয়ে আঁকা বেশ কয়েকটি ছবিও আছে বইটিতে। তিনি আরও বলেন, এ বইটি শুধু প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীদের জন্য নয়, সাধারণ ছেলেমেয়েদের জন্যও। যারা অল্পতেই ভেঙে পড়ে; তাদের জন্য এ বই অনুপ্রেরণা হবে। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে আমাদের এ সমাজও একদিন পরিবর্তন হবে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বইটি লেখা শুরু করি আর শেষ করি সেপ্টেম্বরে। বইটি ছাপা হয়েছে প্রায় এক হাজার কপি। বইটি প্রকাশ করেছে তামান্না ফাউন্ডেশন। এর প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। তামান্না যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করছেন। লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস ক্যাডার অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। আর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি এখন থেকেই প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তামান্নার প্রকাশিত বইয়ের বিষয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বেশ উচ্ছ্বসিত। তামান্না শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

তামান্না সম্প্রতি সাংবাদিক পেশায় নাম লিখিয়েছেন, তিনি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেছেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লালমনিরহাটে মধ্যরাতে আগুনে পুড়ল ১৪ দোকান, কোটি টাকার ক্ষতি

বাঁ পা দিয়েই লিখে বই প্রকাশ করলেন ঝিকরগাছার অদম্য মেয়ে তামান্না

আপডেট সময় ০৪:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩

 

জন্ম থেকেই দুই হাত ও একটি পা নেই তামান্না আক্তার নুরার। বাঁ পা দিয়ে লিখে তিনি জীবনের সব পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে পড়ছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই তামান্না এবার বই লিখেছেন পা দিয়ে, সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা ‘ইচ্ছার আলো’ শিরোনামের বইটি। বিষয়টি তিনি ফেসবুকে প্রকাশ করেন। বইটিতে জন্মের পর থেকে নিজের সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেছেন। তামান্না যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান।

এ বই লেখা ছিল তাঁর অনেক দিনের স্বপ্ন। শারীরিক অক্ষমতা কখনো স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না—এ বার্তাই তিনি পাঠকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তামান্না বলেন, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে বসে থাকার সময়ই বই লেখার পরিকল্পনা করি। নিজের জীবন এবং একটি অদম্য প্রতিবন্ধী মেয়ের ওপর বই লিখলে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষই উপকার পাবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কী কী বাধার সম্মুখীন হতে হয়, কি কি সমস্যায়পড়তে হয়, কিভাবে সেই বাধা অতিক্রম করা যায়, কিভাবে সেই সমস্যার সমাধান করা যায়, সেই বিষয়গুলোই তামান্না তুলে ধরেছেন তাঁর বইয়ে। নিজের এক পা দিয়ে আঁকা বেশ কয়েকটি ছবিও আছে বইটিতে। তিনি আরও বলেন, এ বইটি শুধু প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীদের জন্য নয়, সাধারণ ছেলেমেয়েদের জন্যও। যারা অল্পতেই ভেঙে পড়ে; তাদের জন্য এ বই অনুপ্রেরণা হবে। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে আমাদের এ সমাজও একদিন পরিবর্তন হবে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বইটি লেখা শুরু করি আর শেষ করি সেপ্টেম্বরে। বইটি ছাপা হয়েছে প্রায় এক হাজার কপি। বইটি প্রকাশ করেছে তামান্না ফাউন্ডেশন। এর প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। তামান্না যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করছেন। লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস ক্যাডার অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। আর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি এখন থেকেই প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তামান্নার প্রকাশিত বইয়ের বিষয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বেশ উচ্ছ্বসিত। তামান্না শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

তামান্না সম্প্রতি সাংবাদিক পেশায় নাম লিখিয়েছেন, তিনি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেছেন।