ঢাকা ০২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় জেলা-উপজেলায় কন্ট্রোল রুম চালু : আইজিপি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মটর চালক দলের ভোলা জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা জামাই-শ্বশুর মিলে সোনালী লাইফের ৩৫৩ কোটি লুট সেতু বিভাগের নতুন সচিব ফাহিমুল ইসলাম হিজবুল্লাহর রকেটের আঘাতে কাঁপল ইসরাইলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর স্বামী-স্ত্রীর মরদেহের পাশে পড়ে ছিল চিরকুট। স্টার কাবাবে বাসি খাবার, প্রতিবাদ করায় রক্তাক্ত গ্রাহক রাজবাড়ীতে মহাসড়কে গাছ ফেলে যানবাহনে ডাকাতি র‌্যাব-১৩ এর পৃথক অভিযানে ১৩১১ বোতল ফেনসিডিলসহ শীর্ষ ০৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কলেজ শিক্ষক জসিমের সিন্ডিকেটের অবৈধ ঔষধ ও চোরাই মোবাইলের রমরমা বাণিজ্য !!

রাজধানীতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুসহ আটক-৪

রাজধানীতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূলহোতা ফজলুলসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র‌্যাব- ১০ এর (মিডিয়া অফিসার) সিনিয়র এএসপি এম, ফখরুল হাসান জানান, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার আব্দুর এলাকায় একটি বাসা ও প্রতারনার অফিসে পৃথক ঝটিকা অভিযান চালায়।

তল্লাশি অভিযানকালে র‌্যাব সদস্যরা চাকরির প্রলোভনসহ অভিনব পন্থায় বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎকারী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুল হক এবং তার তিন সহযোগী মোঃ হুমায়ন কবির, আবু সাইম রিয়াজ ও মামুনুর রশিদসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

তিনি আরো জানান,গ্রেফতারকৃত প্রতারকরা হলেন, এ সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতা মোঃ ফজলুল হক (৫৬), মোঃ হুমায়ন কবির (৪৪), আবু সাইম রিয়াজ (৩২) ও মামুনুর রশিদ (২৪)। এদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর বলে জানা গেছে।

ফখরুল হাসান জানান, এসময় তাদের নিকট থেকে ৭২টি বিভিন্ন নামীয় নিয়োগপত্র, ১টি টাকা গ্রহণ রশিদ বহি, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর, ১টি প্রিন্টার, ১টি মাউস, ১টি কী-বোর্ড, ৫টি বিভিন্ন ক্যাবল, ৪টি বই, ০১টি পাসপোর্ট, ১টি এটিএম কার্ড, ৯টি মোবাইল ও নগদ-১ হাজার টাকা উদ্ধার মূলে জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ফজলুল হক ওই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা,সে একটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়ে দেশের প্রতিটি জেলার প্রতিটি থানায় ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার, পরিদর্শক, উপ-পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ জন প্রতি ২০ হাজার টাকা করে নিত।

আটককৃত প্রতারকরা র‌্যাবকে আরো জানান, এসব নিয়েগের ক্ষেত্রে সে ওই থানা এলাকার স্থানীয় বিভিন্ন সরকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং চাকুরী সন্ধানী বিভিন্ন সুনামধন্য ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের বাছাই করত যাতে করে স্থানীয় সরকারী/বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে কোন অসুবিধা না হয়।

র‌্যাব জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুল হক ও তার অন্যান্য সহযোগীরা মিলে প্রত্যেক থানায় একজন সুপারভাইজার এবং ওই সুপারভাইজার এর অধীনে ৩ জন করে পরিদর্শক এবং এক জন পরিদর্শক এর অধীনে ৫টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লোভনীয় অফার এর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব বণ্টন করত।

র‌্যাব সূত্র আরো বলছে, ফজলুল হক ও তার সহযোগীরা থানা পর্যায়ে ভুয়া নিয়োগ প্রাপ্ত সুপারভাইজারদের দ্বারা গ্রামের বিভিন্ন স্কুলে তার নির্দিষ্ট কিছু বই বিতরন করত, ওই বইয়ের আলোকে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এবং বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার হিসেবে ল্যাপটপ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রণের রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ জন প্রতি ১০০/২০০ টাকা করে হাতিয়ে নিত।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, এছাড়া উপবৃত্তি দেওয়ার নাম করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে উপবৃত্তির রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ১৫০/২০০ টাকা করে সংগ্রহের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যেক থানার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।

এম, ফখরুল হাসান জানান, প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুল হক’র বিরুদ্ধে প্রতারণার অপরাধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্হা গ্রহন এবং তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় জেলা-উপজেলায় কন্ট্রোল রুম চালু : আইজিপি

রাজধানীতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুসহ আটক-৪

আপডেট সময় ১০:৫৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩

রাজধানীতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূলহোতা ফজলুলসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র‌্যাব- ১০ এর (মিডিয়া অফিসার) সিনিয়র এএসপি এম, ফখরুল হাসান জানান, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার আব্দুর এলাকায় একটি বাসা ও প্রতারনার অফিসে পৃথক ঝটিকা অভিযান চালায়।

তল্লাশি অভিযানকালে র‌্যাব সদস্যরা চাকরির প্রলোভনসহ অভিনব পন্থায় বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎকারী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুল হক এবং তার তিন সহযোগী মোঃ হুমায়ন কবির, আবু সাইম রিয়াজ ও মামুনুর রশিদসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

তিনি আরো জানান,গ্রেফতারকৃত প্রতারকরা হলেন, এ সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতা মোঃ ফজলুল হক (৫৬), মোঃ হুমায়ন কবির (৪৪), আবু সাইম রিয়াজ (৩২) ও মামুনুর রশিদ (২৪)। এদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর বলে জানা গেছে।

ফখরুল হাসান জানান, এসময় তাদের নিকট থেকে ৭২টি বিভিন্ন নামীয় নিয়োগপত্র, ১টি টাকা গ্রহণ রশিদ বহি, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর, ১টি প্রিন্টার, ১টি মাউস, ১টি কী-বোর্ড, ৫টি বিভিন্ন ক্যাবল, ৪টি বই, ০১টি পাসপোর্ট, ১টি এটিএম কার্ড, ৯টি মোবাইল ও নগদ-১ হাজার টাকা উদ্ধার মূলে জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ফজলুল হক ওই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা,সে একটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয়ে দেশের প্রতিটি জেলার প্রতিটি থানায় ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার, পরিদর্শক, উপ-পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ জন প্রতি ২০ হাজার টাকা করে নিত।

আটককৃত প্রতারকরা র‌্যাবকে আরো জানান, এসব নিয়েগের ক্ষেত্রে সে ওই থানা এলাকার স্থানীয় বিভিন্ন সরকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং চাকুরী সন্ধানী বিভিন্ন সুনামধন্য ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের বাছাই করত যাতে করে স্থানীয় সরকারী/বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে কোন অসুবিধা না হয়।

র‌্যাব জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুল হক ও তার অন্যান্য সহযোগীরা মিলে প্রত্যেক থানায় একজন সুপারভাইজার এবং ওই সুপারভাইজার এর অধীনে ৩ জন করে পরিদর্শক এবং এক জন পরিদর্শক এর অধীনে ৫টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লোভনীয় অফার এর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্ব বণ্টন করত।

র‌্যাব সূত্র আরো বলছে, ফজলুল হক ও তার সহযোগীরা থানা পর্যায়ে ভুয়া নিয়োগ প্রাপ্ত সুপারভাইজারদের দ্বারা গ্রামের বিভিন্ন স্কুলে তার নির্দিষ্ট কিছু বই বিতরন করত, ওই বইয়ের আলোকে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এবং বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার হিসেবে ল্যাপটপ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রণের রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ জন প্রতি ১০০/২০০ টাকা করে হাতিয়ে নিত।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, এছাড়া উপবৃত্তি দেওয়ার নাম করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে উপবৃত্তির রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ১৫০/২০০ টাকা করে সংগ্রহের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যেক থানার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।

এম, ফখরুল হাসান জানান, প্রতারক চক্রের মূলহোতা ফজলুল হক’র বিরুদ্ধে প্রতারণার অপরাধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্হা গ্রহন এবং তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।