স্কুলছাত্রীকে কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে পালাক্রমে ধর্ষণ করার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় দুই শিশু অপরাধীকে ১০ বছর করে আটকাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (২৮ আগস্ট) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ মো. মশিউর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত শিশু অপরাধীরা হলো- বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার পূর্ব কাউনিয়া গ্রামের শাহজাহান মল্লিকের ছেলে মোকলেছুর রহমান ও লতিফ মল্লিকের ছেলে বাবু। এ ঘটনার সময় তাদের বয়স ছিল ১৫ ও ১৪ বছর।
রায় ঘোষনার সময় মোকলেছুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং বাবু পলাতক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।
জানা গেছে, একই ঠিকানার স্কুলছাত্রী ওই ট্রাইব্যুনালে ২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর বাদী হয়ে ওই দুই শিশু অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ওই ঘটনার সময় ভুক্তভোগী বেতাগীর বুড়ামজুমদার ইউনিয়নে কাউনিয়া এমদাদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করতেন। আসামিরা ভিকটিমকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতো। স্কুলছাত্রী তাতে রাজি না হওয়ায় শিশু অপরাধীরা প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুজতে থাকে। ২০০৮ সালের ১৫ অক্টোবর রাত অনুমান ৮টার দিকে ভিকটিম প্রস্রাব করতে বাইরে বের হয়। সেখানে অভিযুক্তদের সে দেখতে পেয়ে ভয়ে দৌড়ে আবার ঘরে ঢোকে। স্কুলছাত্রীর বাবা মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে অভিয়ুক্তরা তার পেছনে দৌড়ে তার ঘরে উঠে মুখ চেপে ধরে। পরে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঘরের মাটিতে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এরপর ওই স্কুলছাত্রী অভিযুক্তদের হাত থেকে ছুটে চিৎকার দিলে কতিপয় সাক্ষী সেখানে গিয়ে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এ সময় অভিযুক্তরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পরে বেতাগ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এইচ এম জসিম উদ্দিন ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল এ ঘটনার চার্জশিট দাখিল করেন। অবশেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় দুই শিশু অপরাধীকে ১০ বছর করে আটকাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
শিশু অপরাধীদের আইনজীবী মো. হুমায়ূন কবির বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
রাস্ট্র্র পক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, ১৭-১৮ বছরের শিশুরা ধর্ষণসহ হত্যার মত জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। শিশুদের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর।
তিনি আরও বলেন, আইনে শাস্তি কম হওয়ায় এক শ্রেণির সন্ত্রাসীরা শিশুদের দিয়ে জঘন্য অপরাধ করায়। শাস্তি বেশি হলে অপরাধ অনেকটাই কমে যেত।