ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রতারণার নতুন ফাঁদে মোস্তফা সরদার তপন ও সহযোগী মুনা মুগদা থানা নবগত ওসির সঙ্গে মুগদা স্থানীয় সাংবাদিকদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। নির্বাচন ও সংস্কার বিষয়ে জানতে চাইবে দলগুলো ইয়েমেনের ১৫ নিশানায় মার্কিন হামলা বছিলা সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশন শুভ উদ্বোধন চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্তে তিনটি ককটেল উদ্ধার করেছে বিজিবি বোরহানউদ্দিনে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত- চ্যাম্পিয়ান হাকিমুউদ্দিন বাজার একাদশ লালমনিরহাটে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের বিরুদ্ধে ৫৯ কর্মচারির অনাস্হা পাবনায় বৈসম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় রাসুল সঃ ও নাত সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত বোরহানউদ্দিনে পৌর যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল

পক্ষ ত্যাগ করায় ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলা, উদ্ধার করলো আওমীলীগ নেতা

পূর্বশত্রুতার জেরে বাসার সামনে থেকে এক ছাত্রলীগ নেতাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগ সভাপতি আবু সুফিয়ান শ্রাবণের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতার নাম সবুজ হোসেন (২৭)। তিনি বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক। সবুজ বর্তমানে উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখানে এ ঘটনা ঘটে।

সবুজ হোসেন আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে গত বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় দক্ষিণখানের গাওয়াইর কাজীবাড়ি আসি। আমার বাসায় ঢোকার আগে পাশের একটি বাড়িতে মোটরসাইকেল রাখি। বাইকটা রেখে যখন বের হই, সাত–আটটা মোটরসাইকেল ও একটা প্রাইভেট কারে ২৫-৩০ জনের একটি দল আমাকে ঘেরাও করে ফেলে। আমাকে টানা হিঁচড়া করে। তারা আমাকে মারতে মারতে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। আমি তখন গাড়িতে উঠিনি। পরে বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শ্রাবণ রিভলবার দিয়ে আমার কাঁধে আঘাত করে। এতে আমার হাড় নড়ে গেছে।’

এ ঘটনায় সুস্থ হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা জানান সবুজ।

সবুজ বলেন, ‘প্রথমে আমাকে রিভলবার ধরে, আমি যেন কোনো কথা না বলি। কিন্তু আমি চিৎকার করি। পরে এলাকার অনেক মানুষ জমে যায়। তখন তিনি মারতে মারতে আমাকে তাঁর গাড়িতে ওঠান। পরে আমতলা এলাকা পার হওয়ার সময় দক্ষিণখানের তোফাজ্জল চেয়ারম্যান মানুষের কাছ থেকে জানতে পেরে ওই গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। চেয়ারম্যান তখন ওদের কাছে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে, ওরা বলে—আমি নাকি তাঁদের টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছি। পরে আমি ওনাকে অনুরোধ করি, আপনি আমাকে একা রেখে যাবেন না। তাহলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। প্রয়োজনে আমাকে পুলিশের হাতে দেন, আমি নিরাপদ থাকব। পরে পুলিশ আসলে তাদের হাতে তুলে দিয়ে চেয়ারম্যান চলে যান। তখন ছোট ভাইয়েরা এসে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়।’

সবুজ আরও বলেন, ‘হামলার নেতৃত্ব দেন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শ্রাবণ। তাঁর সঙ্গে সহযোগী হিসেবে ছিলেন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হামিম, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক বেলাল খান, সাবেক সহসম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, সাবেক অর্থ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ অভি, শ্রাবণের বন্ধু সামিউল আলম, উত্তরা পূর্ব থানা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক রাবিকুল হাসান নিলয়, ছাত্রলীগ কর্মী রাফি মিয়া ও রবিন খান ওরফে জিকো রবিন।’

হামলার কারণ জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘আমি আগে বিমানবন্দর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ছিলাম। তখন শ্রাবণ সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ওই সময় পানির ব্যবসার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা, সভাপতি হওয়ার কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা নেন শ্রাবণ। এভাবে প্রায় দুই-আড়াই লাখ টাকা নেন তিনি। কিন্তু এখনো দেননি। সভাপতি হওয়ার পর ফুটপাতে চাঁদাবাজি ও দক্ষিণখানের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশের একটি পাঁচতলা ভবনে লোক আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা আদায় করেন। যার কারণে তাঁদের সঙ্গে চলাফেরা বন্ধ করায় হামলা করছেন।’

সবুজকে উদ্ধার করা ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও দক্ষিণখান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম তোফাজ্জল হোসেন আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘রাতে বাসায় ফেরার পথে গাওয়াইরে দেখি কিছু ছেলেপেলে জড়ো হয়ে একটি ছেলেকে পেটাচ্ছে। আর ওই ছেলে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে। আর বলছে—আমাকে মাইর‍্যা ফেলব, হাত-পা কাইটা ফেলব। পরে ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার বাড়ির কাছাকাছি গেলে আমি গাড়ি নিয়ে ওদের গাড়ির সামনে ব্যারিকেড দিয়ে থামাই।’

তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘গাড়িতে সবুজ ও আরও চারজন ছিল। ওদের পেছনে কয়েকটা মোটরসাইকেল ছিল। হামলাকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে একজন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট পরিচয় দেয়। আর বলে—সবুজের কাছে তিন লাখ টাকা পাবে। অনেক দিন পর ধরতে পেরেছে। পরে দুজন পুলিশের হাতে ছেলেটিকে দিয়ে আমি বাসায় চলে যাই। পরে নাকি পুলিশ ওদেরকে ছেড়ে দিয়েছে।’

তোফাজ্জল হোসেন আরও বলেন, ‘ওরা দলের কলঙ্ক। ছাত্রলীগের সভাপতি হয়ে এমন কাজ কখনোই করতে পারে না। আর ওদের জন্য দলের ইজ্জত থাকে না।’

বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ইব্রাহিম খলিল আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘আমি ও সবুজ যুবলীগের সেলিম খানের কাছে যাই, রাজনীতি করি। আমিই সবুজকে সেলিম ভাইয়ের কাছে নিয়ে যাই। সেলিম ভাই জানতে চাইলে সবুজ আগে রেন্ট-এ-কারে গাড়ি চালাত, জানাই। এর জন্য গত ১৭ জুলাই সবুজ আমার আঙুল ভেঙে দেয়। আবার শ্রাবণ ভাই তাঁর গার্লফ্রেন্ড নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে বসেছিল। তখন বিশ্বস্ত হওয়ায় সবুজও তাঁর সঙ্গে ছিল। আর সবুজ তাঁদের ছবি তুলে বিভিন্নজনের কাছে পাঠিয়ে ভাইরাল করে দেয়।’

ইব্রাহিম বলেন, ‘ওই দিন রাতে সবুজ দক্ষিণখানে যাওয়ার পর আমার কিছু ভাই-বন্ধু সবুজকে আটকায়। পরে সেখানে মারামারি হয়েছে, গ্যাঞ্জাম হয়েছে। শ্রাবণ ভাই কিছুক্ষণ পরে আসেন। এসে বিমানবন্দরের যারা রাজনীতি করে, তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেন।’

হামলার বিষয়ে বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শ্রাবণের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। পরে তাঁকে খুদে বার্তা পাঠালেও জবাব দেননি।

ঢাকা মহানগর উত্তরের ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘সবুজের ওপর হামলা হয়েছে, এটা আমরা শুনেছি। কে বা কারা হামলা করেছে তার খোঁজখবর নিচ্ছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খান আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজেই নেই। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরও ছেড়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওসি জাহাঙ্গীর বলেন, ‘পুলিশ কাউকে থানায় ধরে নিয়ে আসেনি। ছেড়ে দিলে হয়তো সেখান থেকেই ছেড়ে দিয়েছে।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রতারণার নতুন ফাঁদে মোস্তফা সরদার তপন ও সহযোগী মুনা

পক্ষ ত্যাগ করায় ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলা, উদ্ধার করলো আওমীলীগ নেতা

আপডেট সময় ১০:০৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অগাস্ট ২০২৩

পূর্বশত্রুতার জেরে বাসার সামনে থেকে এক ছাত্রলীগ নেতাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগ সভাপতি আবু সুফিয়ান শ্রাবণের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতার নাম সবুজ হোসেন (২৭)। তিনি বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক। সবুজ বর্তমানে উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখানে এ ঘটনা ঘটে।

সবুজ হোসেন আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে গত বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় দক্ষিণখানের গাওয়াইর কাজীবাড়ি আসি। আমার বাসায় ঢোকার আগে পাশের একটি বাড়িতে মোটরসাইকেল রাখি। বাইকটা রেখে যখন বের হই, সাত–আটটা মোটরসাইকেল ও একটা প্রাইভেট কারে ২৫-৩০ জনের একটি দল আমাকে ঘেরাও করে ফেলে। আমাকে টানা হিঁচড়া করে। তারা আমাকে মারতে মারতে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। আমি তখন গাড়িতে উঠিনি। পরে বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শ্রাবণ রিভলবার দিয়ে আমার কাঁধে আঘাত করে। এতে আমার হাড় নড়ে গেছে।’

এ ঘটনায় সুস্থ হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা জানান সবুজ।

সবুজ বলেন, ‘প্রথমে আমাকে রিভলবার ধরে, আমি যেন কোনো কথা না বলি। কিন্তু আমি চিৎকার করি। পরে এলাকার অনেক মানুষ জমে যায়। তখন তিনি মারতে মারতে আমাকে তাঁর গাড়িতে ওঠান। পরে আমতলা এলাকা পার হওয়ার সময় দক্ষিণখানের তোফাজ্জল চেয়ারম্যান মানুষের কাছ থেকে জানতে পেরে ওই গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। চেয়ারম্যান তখন ওদের কাছে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে, ওরা বলে—আমি নাকি তাঁদের টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছি। পরে আমি ওনাকে অনুরোধ করি, আপনি আমাকে একা রেখে যাবেন না। তাহলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। প্রয়োজনে আমাকে পুলিশের হাতে দেন, আমি নিরাপদ থাকব। পরে পুলিশ আসলে তাদের হাতে তুলে দিয়ে চেয়ারম্যান চলে যান। তখন ছোট ভাইয়েরা এসে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়।’

সবুজ আরও বলেন, ‘হামলার নেতৃত্ব দেন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শ্রাবণ। তাঁর সঙ্গে সহযোগী হিসেবে ছিলেন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হামিম, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক বেলাল খান, সাবেক সহসম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, সাবেক অর্থ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ অভি, শ্রাবণের বন্ধু সামিউল আলম, উত্তরা পূর্ব থানা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক রাবিকুল হাসান নিলয়, ছাত্রলীগ কর্মী রাফি মিয়া ও রবিন খান ওরফে জিকো রবিন।’

হামলার কারণ জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘আমি আগে বিমানবন্দর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ছিলাম। তখন শ্রাবণ সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ওই সময় পানির ব্যবসার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা, সভাপতি হওয়ার কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা নেন শ্রাবণ। এভাবে প্রায় দুই-আড়াই লাখ টাকা নেন তিনি। কিন্তু এখনো দেননি। সভাপতি হওয়ার পর ফুটপাতে চাঁদাবাজি ও দক্ষিণখানের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশের একটি পাঁচতলা ভবনে লোক আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা আদায় করেন। যার কারণে তাঁদের সঙ্গে চলাফেরা বন্ধ করায় হামলা করছেন।’

সবুজকে উদ্ধার করা ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও দক্ষিণখান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম তোফাজ্জল হোসেন আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘রাতে বাসায় ফেরার পথে গাওয়াইরে দেখি কিছু ছেলেপেলে জড়ো হয়ে একটি ছেলেকে পেটাচ্ছে। আর ওই ছেলে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে। আর বলছে—আমাকে মাইর‍্যা ফেলব, হাত-পা কাইটা ফেলব। পরে ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার বাড়ির কাছাকাছি গেলে আমি গাড়ি নিয়ে ওদের গাড়ির সামনে ব্যারিকেড দিয়ে থামাই।’

তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘গাড়িতে সবুজ ও আরও চারজন ছিল। ওদের পেছনে কয়েকটা মোটরসাইকেল ছিল। হামলাকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে একজন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট পরিচয় দেয়। আর বলে—সবুজের কাছে তিন লাখ টাকা পাবে। অনেক দিন পর ধরতে পেরেছে। পরে দুজন পুলিশের হাতে ছেলেটিকে দিয়ে আমি বাসায় চলে যাই। পরে নাকি পুলিশ ওদেরকে ছেড়ে দিয়েছে।’

তোফাজ্জল হোসেন আরও বলেন, ‘ওরা দলের কলঙ্ক। ছাত্রলীগের সভাপতি হয়ে এমন কাজ কখনোই করতে পারে না। আর ওদের জন্য দলের ইজ্জত থাকে না।’

বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ইব্রাহিম খলিল আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘আমি ও সবুজ যুবলীগের সেলিম খানের কাছে যাই, রাজনীতি করি। আমিই সবুজকে সেলিম ভাইয়ের কাছে নিয়ে যাই। সেলিম ভাই জানতে চাইলে সবুজ আগে রেন্ট-এ-কারে গাড়ি চালাত, জানাই। এর জন্য গত ১৭ জুলাই সবুজ আমার আঙুল ভেঙে দেয়। আবার শ্রাবণ ভাই তাঁর গার্লফ্রেন্ড নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে বসেছিল। তখন বিশ্বস্ত হওয়ায় সবুজও তাঁর সঙ্গে ছিল। আর সবুজ তাঁদের ছবি তুলে বিভিন্নজনের কাছে পাঠিয়ে ভাইরাল করে দেয়।’

ইব্রাহিম বলেন, ‘ওই দিন রাতে সবুজ দক্ষিণখানে যাওয়ার পর আমার কিছু ভাই-বন্ধু সবুজকে আটকায়। পরে সেখানে মারামারি হয়েছে, গ্যাঞ্জাম হয়েছে। শ্রাবণ ভাই কিছুক্ষণ পরে আসেন। এসে বিমানবন্দরের যারা রাজনীতি করে, তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেন।’

হামলার বিষয়ে বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শ্রাবণের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। পরে তাঁকে খুদে বার্তা পাঠালেও জবাব দেননি।

ঢাকা মহানগর উত্তরের ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘সবুজের ওপর হামলা হয়েছে, এটা আমরা শুনেছি। কে বা কারা হামলা করেছে তার খোঁজখবর নিচ্ছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খান আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজেই নেই। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরও ছেড়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওসি জাহাঙ্গীর বলেন, ‘পুলিশ কাউকে থানায় ধরে নিয়ে আসেনি। ছেড়ে দিলে হয়তো সেখান থেকেই ছেড়ে দিয়েছে।’