নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, দেশে রিজার্ভ নেই। সেটি হাসপাতালের রোগীরাও জানে। দেশে বর্তমানে রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার, যা সরকার স্বীকার করছে না। প্রধানমন্ত্রী আপনি রিজার্ভ চিবিয়ে খান না, মানুষকে জ্বালিয়ে খাচ্ছেন। রিজার্ভের টাকা আপনারা বিভিন্নভাবে নিজেদের জন্য খরচ করেছেন।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খা মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত ‘২৮ অক্টোবর রাজনীতিতে হৃদয়হীনতা এবং বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার চাল ডাল গমের আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষ হওয়ার কথা বলেছেন। এটি সত্যি। কারণ তিনি জানেন অর্থনীতির অবস্থা।
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো দুঃশাসন গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ দেখেনি। তারা শুধু লগি বৈঠা দিয়েই মানুষ মারে না। আরও কতভাবে মানুষ মারে তার সব হিসাব আমাদের কাছে আসে না। আমি বলব, বাবা এবার তোরা যা। তোরা গেলেই আমরা বাঁচি। প্রধানমন্ত্রী এত ক্ষমতা পান কীভাবে। দেশে আজ শেখ হাসিনার কথায় সব থেমে যায়। অর্থনীতি-রাজনীতি যাই বলেন না কেন।
মান্না বলেন, বিএনপির সমাবেশে মানুষের জোয়ার দেখে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করার কথা বলছে। আওয়ামী লীগ এক-দুইটা সমাবেশ করলেই তাদের মন খারাপ হয়ে যাবে। কারণ মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জেগেছে। আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দিয়েছে। সময় এসেছে, মানুষ বিদ্রোহ করেছে। লঞ্চ বাস বন্ধ করে কোনো লাভ হবে না। আমি বিএনপি করি না। কিন্তু আমি শেখ হাসিনার পতন চাই। এই সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। আওয়ামী লীগের পতন শুধু দিনের ব্যাপার। এমন অবস্থা আসবে যখন পতনের দিন গুনতে থাকবে মানুষ।
বিএনপির সমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশে কত মানুষ হবে তা জানি না। কিন্তু বিএনপি নেতারা সমাবেশে কি বলবে? বলবে আমরা আর এখান থেকে যাব না তুই যা? কি বলবে তা আগেই ঠিক করে নিতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে মানুষের জন্য কি করবে। তাই এখনই বলেন মানুষকে। আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই সরকার বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুধু নির্বাচনের ক্ষমতা পাবে। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে না।
মান্না আরও বলেন, রাজনীতি হওয়া উচিত সুকুমার বৃত্তি ও মহৎ পেশা হিসেবে। যদি তাই হয়, তাহলে রাজনীতিতে এত ঘৃণা-বিদ্বেষ কেন। আমাদের দেশে সন্ত্রাস আর হানাহানি বন্ধ না হলে দেশের মানুষ শান্তি পাবে না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাদা মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বর্বর দল। তারা ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছে। তাদের মানবতা নেই। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এজন্যই আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। আমরা আর কাঁদতে চাই না। আমাদের এবার মুক্তি দেন। বাংলাদেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। সরকার এর ফায়সালা না করলে ফয়সালা হবে রাজপথে। সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা করা আমাদের মূল দায়িত্ব। পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে আমাদের। এখন ঘুরে দাঁড়িয়ে সরকারকে ধাক্কা দিতে হবে। আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। ধাক্কা দিলেই তারা পড়ে যাবে।
ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা রোটারিয়ান এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির নেতা আহসান হাবীব রিঙ্কন, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ইসমাইল তালুকদার খোকন, আমীর হোসেন বাদশা প্রমুখ।