ঢাকা ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুর্নীতিকে কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না – বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সমাজকল্যাণমন্ত্রীর আশীর্বাদে মিজানের সম্পদের পাহাড় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির উদ্দেগে ২৮ শে ডিসেম্বর মহা সন্মেলনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্টিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে বিস্ফোরণ, আহত ১২ বেলাবতে তারেক রহমানের ১৭তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে শীর্ষক আলোচনা দীর্ঘ সাত বছর পর আজ ৭ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে আসেন ডুবাই প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরনবী ভুইয়া ক্রেস্ট কেলেঙ্কারির বাবুলের ১ সপ্তাহে তিন পদোন্নতি গোয়াইনঘাটে ৯০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ: ধরা যায়নি কাউকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব মহাসড়কে ঘুস আদায়, ১১ ট্রাফিক গ্রেফতার

সহজ অন্নের সময় এখন নহে

‘ইহা অসহায়ত্বের স্বাদ, যখন স্বপ্নের মধ্যে আপনি আপনার প্রিয়জনকে হারিয়ে যেতে দেখেন এবং আপনি তাকে সাহায্য করতে পারেন না’— এই উক্তির ব্যাখা হইল, আমরা অনেক সময় ঘুমের মধ্যে দেখি, বিভৎস কোনো ছায়া আমাদের দিকে ছুটিয়া আসিতেছে ডাইনী-গ্রাসে! কিংবা বিপদে পড়িয়া নাস্তানাবুদ হইতে দেখিতেছি কোনো নিকটজনকে। এই ধরনের স্বপ্ন সকলেই জীবনে কমপক্ষে একটিবারের জন্য হইলেও দেখিয়া থাকেন বটে। সুতরাং, সেই সময় কী হয়, তাহা সকলেই জানেন : ‘যতই হাত-পা ছুড়াছুড়ি করা হউক না কেন, কিছুতেই কিছু হয় না! সমস্ত শরীর যেন অবশ হইয়া উঠে! যমের মুখে পড়িয়াও করিবার থাকে না কিছুই!’ স্বপ্ন দেখার এই ঘটনা লইয়া আলোকপাত করিবার পিছনে কারণ রহিয়াছে বইকি! আজিকার দিনে আমাদের অবস্থা কী? চতুর্দিকে কী চলিতেছে? কেবল অস্থিতিশীলতা আর তাহার পিঠে চড়িয়া ‘সকল ক্ষেত্রে অস্থিরতার বাড়ন্ত’! যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং দুর্যোগ-দুর্বিপাকে পড়িয়া বিশ্ব বর্তমানে কাহিল অবস্থায় নিপতিত। বিশ্ব অর্থনীতি ধসিয়া পড়িয়াছে। মুখ থুবড়াইয়া পড়িতেছে ‘ল এণ্ড অর্ডার’। সকল কিছু মিলাইয়া আমরা যেন এক ‘অন্য সমাজে’ ঢুকিয়া গিয়াছি! পরিস্থিতি এমন, আর্থিক সংকটে পর্যুদুস্ত হইয়া না পারা যাইতেছে নিজে ভালোভাবে চলিতে পারা, না যাইতেছে প্রিয়জনের প্রয়োজন মিটাতে পারা। ফলস্বরূপ, সংসারজীবনের মান-অভিমানের রেশ ক্ষোভ-বিক্ষোভের রূপ পরিগ্রহ করিয়া আছড়াইয়া পড়িতেছে জাতীয় জীবনে। দুঃখজনকভাবে, ইহা দাঁড়াইয়া দাাঁড়াইয়া দেখা ছাড়া করিতে পারা যাইতেছে না কিছুই! স্বপ্নের ঘটনার মতোই যতই ছুটাছুটি করা হউক না কেন, কোনো উপায়েই অমানিশার ঘোর কাটিতেছে না— কী করুণ ‘অসহায়ত্ব’!

‘নশ্বর পৃথিবীতে মরণের স্বাদ সবাই পায়, জীবনের স্বাদ পায় অল্প কয়েকজন’— এই কথা বলিয়া গিয়াছেন কালপুরুষ মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী। কথা শতভাগ সত্য বটে, কিন্তু আজিকার দিনের বাস্তবতা কী? সেই মুষ্টিমেয় লোকশ্রেণিও তো জীবনের স্বাদ হইতে বঞ্চিত হইতেছে? অর্থাৎ, সকল ক্ষেত্রে সমস্যা আমাদের যে কিভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধিয়া ফেলিয়াছে, তাহা অতি সহজেই অনুমেয়। সত্যি বলিতে, ভালো নাই কোনও প্রাণ! সাধারণ মানুষের মতোই অসহায় অবস্থা সরকারগুলির। কী উন্নত বিশ্ব, কী দরিদ্র দেশ— সকল ভূখন্ডের মানুষকে ঘিরিয়া ধরিয়াছে সংকটের কৃষ্ণ আঁধার। জীবন হইয়া উঠিয়াছে অশ্ণ-কঠিন। সকলে স্বীয় সক্ষমতা লইয়া ছুটিতেছে যদিও, কিন্তু কোনো কিছুতেই উত্তরণ ঘটিতেছে না অবস্থার। অর্থাৎ, পরিস্থিতি এখন ‘ডু অর ডাই’!

সকলের ন্যায় আমরাও আশায় বুক বাঁধিয়াছিলাম এই ভাবিয়া যে, অল্পকালের মধ্যেই যুদ্ধ বন্ধ হইয়া বিশ্বের অবস্থা স্বাভাবিক হইয়া যাইবে। কিন্তু আমাদের সেই আশার গুড়ে বালি! হানাহানি, বিক্ষোভ, আন্দোলনের নাটাই খুঁজিয়াই পাওয়া যাইতেছে না! এই রূঢ় বাস্তবতা বিশ্বব্যবস্থাকে দাঁড় করাইয়াছে এমন এক জায়গায়, যেইখানে ‘স্বার্থই আজ বড় হইয়া উঠিয়াছে’। পারস্পারিক কুসুম-কোমল সম্পর্ক এখন নিত্য চাপা পড়িতেছে দোষারোপের বিষবাষ্পে! অর্থই যেন আজিকার সমাজে ‘মহা মনিব’ হইয়া উঠিয়াছে। যাহাদের পকেটে টাকা নাই, তাহারা যে নীরবে-নিভৃতে নোনা জলে ভিজিতেছেন, তাহা দেখিবার যেন কেউ-ই নেই! ‘অনুভূতি’ কতোটা রংচটা হইয়া উঠিয়াছে আজ! ইহা তো আদিম, বর্বর সমাজের প্রচলনের ‘ফিরে আসা’! কিসের আলামত ইহা?

এখন কথা হইল, বৈশ্বিক ক্রান্তিকালের এই কুক্ষণের ছোবল হইতে কী করিয়া মুক্তি পাওয়া যাইবে? পৃথিবীর সর্বত্র যাহা চলিতেছে, তাহার বাস্তবতায় বলা যায়, খুব শীঘ্রই সংকটের যবনিকা পতন ঘটিবে বলিয়া মনে হয় না। বৈশ্বিক সংঘাত মহাসড়কের পথ ধরিয়া ক্রমশ গতি বাড়াইতেছে। ব্যাংক ফাঁকা হইয়া দেশগুলি দেউলিয়া হইয়া যাইতেছে। মানুষে-মানুষে হানাহানি বাড়িতেছে। রাহাজানি চলিতেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। দুই বেলা দুই মুঠো অন্নের বন্দোবস্তই এখন নিত্য রুটিন নিম্ন আয়ের মানুষগুলির। অর্থাৎ, এক কথায় বলিতে হয়— সহজ অন্নের দিন এখন নহে। জীবন ক্রমশ হইয়া উঠিতেছে কঠিন থেকে কঠিনতর। কাজ না করিয়া যাহারা এক সময় ঠাণ্ডা বাতাস গায়ে মাখিতেন, তাহাদের কপাল হইতেও আজ গড়াইয়া পড়িতেছে লবণাক্ত পানি! সংকটের এই ঢেউয়ের মধ্যেই যাহারা ‘কাজ’কে আঁকড়াইয়া ধরিতেছেন, তাহারা তুলনামূলক ভালো অবস্থায় রহিয়াছেন, বলিতেই হয়। সুতরাং, সুসময়ের যুগে পৌছেইতে হইলে আমাদের ‘কাজ’ করিতে হইবে। কর্ম ব্যতিত মুক্তির কোনো রাস্তা খোলা নাই।

‘চূড়ান্ত বিশ্লেষণে, দারিদ্র্য হইল অসহায়ত্বের একটি শর্ত– আমাদের জটিল সমাজে অস্তিত্বের অবস্থার সঙ্গে মানাইয়া লওয়ার অক্ষমতা’— এই উক্তি রবার্ট কেনেডির। এই বিজ্ঞজনের কথাকে আমাদের মাথায় রাখিতে হইবে। অসহায়ত্বের মুখে ‘অসহায়’ বোধ করা যাইবে না। স্বপ্নের মধ্যে যেইভাবে মনে হয় ‘আর বাঁচিতে পারা গেল না, রক্ষা নাই আর!’, তথাপি ঘুম ভাঙ্গিয়া বুঝিতে পারা যায় যে, হইা স্বপ্ন বই আর কিছুই নহে। একইভাবে আমাদের ভাবিতে হইবে, আজিকার অস্থির সমাজ এক সময় না এক সময় শীতল হইবেই– ইহাই নিয়ম। সুতরাং, অসহায়ত্বের মহাকাব্যিক জগত হইতে সকলেই কাজে ফিরুক। কাজকে আঁকড়াইয়া ধরিয়া বাঁচিতে শিখুক। সত্যিই, সহজ অন্নের দিন আর নাই!

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতিকে কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না – বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সহজ অন্নের সময় এখন নহে

আপডেট সময় ০৫:২৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

‘ইহা অসহায়ত্বের স্বাদ, যখন স্বপ্নের মধ্যে আপনি আপনার প্রিয়জনকে হারিয়ে যেতে দেখেন এবং আপনি তাকে সাহায্য করতে পারেন না’— এই উক্তির ব্যাখা হইল, আমরা অনেক সময় ঘুমের মধ্যে দেখি, বিভৎস কোনো ছায়া আমাদের দিকে ছুটিয়া আসিতেছে ডাইনী-গ্রাসে! কিংবা বিপদে পড়িয়া নাস্তানাবুদ হইতে দেখিতেছি কোনো নিকটজনকে। এই ধরনের স্বপ্ন সকলেই জীবনে কমপক্ষে একটিবারের জন্য হইলেও দেখিয়া থাকেন বটে। সুতরাং, সেই সময় কী হয়, তাহা সকলেই জানেন : ‘যতই হাত-পা ছুড়াছুড়ি করা হউক না কেন, কিছুতেই কিছু হয় না! সমস্ত শরীর যেন অবশ হইয়া উঠে! যমের মুখে পড়িয়াও করিবার থাকে না কিছুই!’ স্বপ্ন দেখার এই ঘটনা লইয়া আলোকপাত করিবার পিছনে কারণ রহিয়াছে বইকি! আজিকার দিনে আমাদের অবস্থা কী? চতুর্দিকে কী চলিতেছে? কেবল অস্থিতিশীলতা আর তাহার পিঠে চড়িয়া ‘সকল ক্ষেত্রে অস্থিরতার বাড়ন্ত’! যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং দুর্যোগ-দুর্বিপাকে পড়িয়া বিশ্ব বর্তমানে কাহিল অবস্থায় নিপতিত। বিশ্ব অর্থনীতি ধসিয়া পড়িয়াছে। মুখ থুবড়াইয়া পড়িতেছে ‘ল এণ্ড অর্ডার’। সকল কিছু মিলাইয়া আমরা যেন এক ‘অন্য সমাজে’ ঢুকিয়া গিয়াছি! পরিস্থিতি এমন, আর্থিক সংকটে পর্যুদুস্ত হইয়া না পারা যাইতেছে নিজে ভালোভাবে চলিতে পারা, না যাইতেছে প্রিয়জনের প্রয়োজন মিটাতে পারা। ফলস্বরূপ, সংসারজীবনের মান-অভিমানের রেশ ক্ষোভ-বিক্ষোভের রূপ পরিগ্রহ করিয়া আছড়াইয়া পড়িতেছে জাতীয় জীবনে। দুঃখজনকভাবে, ইহা দাঁড়াইয়া দাাঁড়াইয়া দেখা ছাড়া করিতে পারা যাইতেছে না কিছুই! স্বপ্নের ঘটনার মতোই যতই ছুটাছুটি করা হউক না কেন, কোনো উপায়েই অমানিশার ঘোর কাটিতেছে না— কী করুণ ‘অসহায়ত্ব’!

‘নশ্বর পৃথিবীতে মরণের স্বাদ সবাই পায়, জীবনের স্বাদ পায় অল্প কয়েকজন’— এই কথা বলিয়া গিয়াছেন কালপুরুষ মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী। কথা শতভাগ সত্য বটে, কিন্তু আজিকার দিনের বাস্তবতা কী? সেই মুষ্টিমেয় লোকশ্রেণিও তো জীবনের স্বাদ হইতে বঞ্চিত হইতেছে? অর্থাৎ, সকল ক্ষেত্রে সমস্যা আমাদের যে কিভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধিয়া ফেলিয়াছে, তাহা অতি সহজেই অনুমেয়। সত্যি বলিতে, ভালো নাই কোনও প্রাণ! সাধারণ মানুষের মতোই অসহায় অবস্থা সরকারগুলির। কী উন্নত বিশ্ব, কী দরিদ্র দেশ— সকল ভূখন্ডের মানুষকে ঘিরিয়া ধরিয়াছে সংকটের কৃষ্ণ আঁধার। জীবন হইয়া উঠিয়াছে অশ্ণ-কঠিন। সকলে স্বীয় সক্ষমতা লইয়া ছুটিতেছে যদিও, কিন্তু কোনো কিছুতেই উত্তরণ ঘটিতেছে না অবস্থার। অর্থাৎ, পরিস্থিতি এখন ‘ডু অর ডাই’!

সকলের ন্যায় আমরাও আশায় বুক বাঁধিয়াছিলাম এই ভাবিয়া যে, অল্পকালের মধ্যেই যুদ্ধ বন্ধ হইয়া বিশ্বের অবস্থা স্বাভাবিক হইয়া যাইবে। কিন্তু আমাদের সেই আশার গুড়ে বালি! হানাহানি, বিক্ষোভ, আন্দোলনের নাটাই খুঁজিয়াই পাওয়া যাইতেছে না! এই রূঢ় বাস্তবতা বিশ্বব্যবস্থাকে দাঁড় করাইয়াছে এমন এক জায়গায়, যেইখানে ‘স্বার্থই আজ বড় হইয়া উঠিয়াছে’। পারস্পারিক কুসুম-কোমল সম্পর্ক এখন নিত্য চাপা পড়িতেছে দোষারোপের বিষবাষ্পে! অর্থই যেন আজিকার সমাজে ‘মহা মনিব’ হইয়া উঠিয়াছে। যাহাদের পকেটে টাকা নাই, তাহারা যে নীরবে-নিভৃতে নোনা জলে ভিজিতেছেন, তাহা দেখিবার যেন কেউ-ই নেই! ‘অনুভূতি’ কতোটা রংচটা হইয়া উঠিয়াছে আজ! ইহা তো আদিম, বর্বর সমাজের প্রচলনের ‘ফিরে আসা’! কিসের আলামত ইহা?

এখন কথা হইল, বৈশ্বিক ক্রান্তিকালের এই কুক্ষণের ছোবল হইতে কী করিয়া মুক্তি পাওয়া যাইবে? পৃথিবীর সর্বত্র যাহা চলিতেছে, তাহার বাস্তবতায় বলা যায়, খুব শীঘ্রই সংকটের যবনিকা পতন ঘটিবে বলিয়া মনে হয় না। বৈশ্বিক সংঘাত মহাসড়কের পথ ধরিয়া ক্রমশ গতি বাড়াইতেছে। ব্যাংক ফাঁকা হইয়া দেশগুলি দেউলিয়া হইয়া যাইতেছে। মানুষে-মানুষে হানাহানি বাড়িতেছে। রাহাজানি চলিতেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। দুই বেলা দুই মুঠো অন্নের বন্দোবস্তই এখন নিত্য রুটিন নিম্ন আয়ের মানুষগুলির। অর্থাৎ, এক কথায় বলিতে হয়— সহজ অন্নের দিন এখন নহে। জীবন ক্রমশ হইয়া উঠিতেছে কঠিন থেকে কঠিনতর। কাজ না করিয়া যাহারা এক সময় ঠাণ্ডা বাতাস গায়ে মাখিতেন, তাহাদের কপাল হইতেও আজ গড়াইয়া পড়িতেছে লবণাক্ত পানি! সংকটের এই ঢেউয়ের মধ্যেই যাহারা ‘কাজ’কে আঁকড়াইয়া ধরিতেছেন, তাহারা তুলনামূলক ভালো অবস্থায় রহিয়াছেন, বলিতেই হয়। সুতরাং, সুসময়ের যুগে পৌছেইতে হইলে আমাদের ‘কাজ’ করিতে হইবে। কর্ম ব্যতিত মুক্তির কোনো রাস্তা খোলা নাই।

‘চূড়ান্ত বিশ্লেষণে, দারিদ্র্য হইল অসহায়ত্বের একটি শর্ত– আমাদের জটিল সমাজে অস্তিত্বের অবস্থার সঙ্গে মানাইয়া লওয়ার অক্ষমতা’— এই উক্তি রবার্ট কেনেডির। এই বিজ্ঞজনের কথাকে আমাদের মাথায় রাখিতে হইবে। অসহায়ত্বের মুখে ‘অসহায়’ বোধ করা যাইবে না। স্বপ্নের মধ্যে যেইভাবে মনে হয় ‘আর বাঁচিতে পারা গেল না, রক্ষা নাই আর!’, তথাপি ঘুম ভাঙ্গিয়া বুঝিতে পারা যায় যে, হইা স্বপ্ন বই আর কিছুই নহে। একইভাবে আমাদের ভাবিতে হইবে, আজিকার অস্থির সমাজ এক সময় না এক সময় শীতল হইবেই– ইহাই নিয়ম। সুতরাং, অসহায়ত্বের মহাকাব্যিক জগত হইতে সকলেই কাজে ফিরুক। কাজকে আঁকড়াইয়া ধরিয়া বাঁচিতে শিখুক। সত্যিই, সহজ অন্নের দিন আর নাই!