ঢাকা ০৫:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এস আলম গ্রুপের সব স্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ বঙ্গভ্যাক্স ভ্যাকসিনে অনীহা নজর ছিল আমদানিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম সদরঘাট থানা’র উদ্যোগে সিরাতুন্নবী (সঃ) মাহফিল অনুষ্ঠিত এমন গরম আর কতদিন ? কোরআন পড়ে বাড়ি ফেরা হলো না চার শিশুর দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, বড় হুজুর গ্রেফতার রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল দাউদকান্দিতে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাস বোতলজাতকরণের দায়ে ৩ জনকে সাজা প্রদান চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসে আলোচনা সভা বোরহানউদ্দিনে উত্তর-টবগী রাস্তার মাথা জামে মসজিদের সভাপতি বাচ্চু পন্ডিত- সম্পাদক- আলম ফরাজি

মেট্রোরেলে ঢিল : ‘অজ্ঞাতদের’ খোঁজ মেলেনি

মেট্রোরেলে ঢিল ছুড়ে গ্লাস ভাঙার ঘটনায় ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে দাবি করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। তবে ঘটনার ৪ দিনেও কোনো আসামির পরিচয় জানতে পারেনি কাফরুল থানা পুলিশ।

পুলিশ বলছে, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের কাছে ভেঙে যাওয়া গ্লাসের ভিডিও ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনের পূর্ব পাশের একাধিক সিটিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অর্ধশত স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে কোনো কূল-কিনারা হয়নি। খোঁজ মেলেনি অজ্ঞাতদের।

গত ৩০ এপ্রিল আনুমানিক দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনায় কাফরুল থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ঢাকা মেট্রোরেল লাইন-৬ এর সহকারী ব্যবস্থাপক (লাইন অপারেশন) মো. সামিউল কাদির। মামলা নং ৩। আসামি অজ্ঞাত।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের সময় আমি স্টেশন কন্ট্রোলার মিরপুর-১০ মারফত জানতে পারি যে, আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তরগামী মেট্রো ট্রেন কাজীপাড়া স্টেশনে প্রবেশের পূর্ব মুহূর্তে স্টেশনের পূর্ব কাজীপাড়ার পূর্বপাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতি ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার লক্ষ্যে ঢিল নিক্ষেপ করে। এতে মেট্রোরেলের ১টি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। এতে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১০ লাখ টাকা।’

ওই ঘটনায় কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে বহুতল অনেক ভবন রয়েছে। যেকোনো ভবন বা ছাদ থেকে ঢিলটি ছুড়ে মারা হতে পারে। আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে দেখছি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা বা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। একাধিক টিম কাজ করছে।

dhakapost

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কাফরুল থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন্স) মো. আব্দুল বাতেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামিরা অজ্ঞাত। আসামিদের এখনো খুঁজে পাইনি। সব ধরনের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, অর্ধশতাধিক স্থানীয় মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এখানে অনেকগুলো বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন রয়েছে। কোন দিক থেকে ঢিল মারা হয়েছে বলা মুশকিল। সময় ও স্থান অনুমান করে অনেকগুলো ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের কাছেও ক্ষতিগ্রস্ত বগির ভিডিও ফুটেজ চেয়েছি। পেতে হয়তো ২/৩ দিন সময় লাগবে।

ট্রেনে ঢিলে ঘটনায় রেলওয়ের দুই মামলা

মেট্রোরেলে ঢিলের ঘটনা আলোচনার জন্ম দিলেও রেলওয়ের বিভিন্ন রুটের ট্রেনে ঢিল মারার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। জানা গেছে, ঢিলের ঘটনার প্রায় ঘটলেও ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর ও চলতি বছরের ৩ মার্চ দুটি পৃথক মামলা হয়। দুটি মামলার একটি চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। আরেকটিতে আসামিই এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে থানা কমলাপুরের ওসি ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী ৭৯৬ ডাউন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় টঙ্গি রেলওয়ে স্টেশনে ঢোকার মুখে রাত ১২টা ১৩ মিনিটের দিকে ঢিলের ঘটনা ঘটে। পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ইঞ্জিনে কর্মরত এলএম জাহিদুল ইসলামের বাম চোখে লেগে গুরুতর রক্তক্ষরণ হয়। তাৎক্ষণিক ট্রেন থামিয়ে স্টেশন মাস্টার ও টঙ্গি রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ঢাকা থেকে নতুন এলএম নাজিবুর রহমান পৌঁছে ট্রেনটি রাত ২টা ১৩ মিনিটে আবার যাত্রা করে। ওই ঘটনায় পরবর্তীতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি মামলা দায়ের করে।

টঙ্গি এলাকার অন্ত চন্দ্র ঘোষ, আল আমিন ও রফিকুল ওরফে কালার বাবু নামে তিনজনকে অভিযুক্ত করে ওই মামলায় ২০২১ সালের ৬ জুন চার্জশিট দাখিল করা হয়।

অন্যদিকে চলতি বছরের ২ মার্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন তেজগাঁও পৌঁছামাত্র রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে গেটম্যান এক কিশোরকে আটক করে। ওই ঘটনায় পরের দিন ঢাকা রেলওয়ে থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় ৬ জনের নামসহ ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। তাৎক্ষণিক আটক কিশোর বাদে অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি রেলওয়ে পুলিশ।

জানতে চাইলে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলার আসামিরা বস্তি, কলোনিতে বসবাস করে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই কিশোর। রেলের নিরাপত্তা কর্মীর হাতে আটক এক কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। বাকি আসামীদের কাউকে সনাক্তই করা সম্ভব হয়নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এস আলম গ্রুপের সব স্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ

মেট্রোরেলে ঢিল : ‘অজ্ঞাতদের’ খোঁজ মেলেনি

আপডেট সময় ০১:০৫:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩

মেট্রোরেলে ঢিল ছুড়ে গ্লাস ভাঙার ঘটনায় ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে দাবি করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। তবে ঘটনার ৪ দিনেও কোনো আসামির পরিচয় জানতে পারেনি কাফরুল থানা পুলিশ।

পুলিশ বলছে, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের কাছে ভেঙে যাওয়া গ্লাসের ভিডিও ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনের পূর্ব পাশের একাধিক সিটিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অর্ধশত স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে কোনো কূল-কিনারা হয়নি। খোঁজ মেলেনি অজ্ঞাতদের।

গত ৩০ এপ্রিল আনুমানিক দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনায় কাফরুল থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ঢাকা মেট্রোরেল লাইন-৬ এর সহকারী ব্যবস্থাপক (লাইন অপারেশন) মো. সামিউল কাদির। মামলা নং ৩। আসামি অজ্ঞাত।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের সময় আমি স্টেশন কন্ট্রোলার মিরপুর-১০ মারফত জানতে পারি যে, আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তরগামী মেট্রো ট্রেন কাজীপাড়া স্টেশনে প্রবেশের পূর্ব মুহূর্তে স্টেশনের পূর্ব কাজীপাড়ার পূর্বপাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতি ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার লক্ষ্যে ঢিল নিক্ষেপ করে। এতে মেট্রোরেলের ১টি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। এতে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১০ লাখ টাকা।’

ওই ঘটনায় কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে বহুতল অনেক ভবন রয়েছে। যেকোনো ভবন বা ছাদ থেকে ঢিলটি ছুড়ে মারা হতে পারে। আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে দেখছি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা বা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। একাধিক টিম কাজ করছে।

dhakapost

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কাফরুল থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন্স) মো. আব্দুল বাতেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামিরা অজ্ঞাত। আসামিদের এখনো খুঁজে পাইনি। সব ধরনের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, অর্ধশতাধিক স্থানীয় মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এখানে অনেকগুলো বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন রয়েছে। কোন দিক থেকে ঢিল মারা হয়েছে বলা মুশকিল। সময় ও স্থান অনুমান করে অনেকগুলো ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের কাছেও ক্ষতিগ্রস্ত বগির ভিডিও ফুটেজ চেয়েছি। পেতে হয়তো ২/৩ দিন সময় লাগবে।

ট্রেনে ঢিলে ঘটনায় রেলওয়ের দুই মামলা

মেট্রোরেলে ঢিলের ঘটনা আলোচনার জন্ম দিলেও রেলওয়ের বিভিন্ন রুটের ট্রেনে ঢিল মারার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। জানা গেছে, ঢিলের ঘটনার প্রায় ঘটলেও ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর ও চলতি বছরের ৩ মার্চ দুটি পৃথক মামলা হয়। দুটি মামলার একটি চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। আরেকটিতে আসামিই এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে থানা কমলাপুরের ওসি ফেরদাউস আহম্মেদ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী ৭৯৬ ডাউন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় টঙ্গি রেলওয়ে স্টেশনে ঢোকার মুখে রাত ১২টা ১৩ মিনিটের দিকে ঢিলের ঘটনা ঘটে। পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ইঞ্জিনে কর্মরত এলএম জাহিদুল ইসলামের বাম চোখে লেগে গুরুতর রক্তক্ষরণ হয়। তাৎক্ষণিক ট্রেন থামিয়ে স্টেশন মাস্টার ও টঙ্গি রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ঢাকা থেকে নতুন এলএম নাজিবুর রহমান পৌঁছে ট্রেনটি রাত ২টা ১৩ মিনিটে আবার যাত্রা করে। ওই ঘটনায় পরবর্তীতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি মামলা দায়ের করে।

টঙ্গি এলাকার অন্ত চন্দ্র ঘোষ, আল আমিন ও রফিকুল ওরফে কালার বাবু নামে তিনজনকে অভিযুক্ত করে ওই মামলায় ২০২১ সালের ৬ জুন চার্জশিট দাখিল করা হয়।

অন্যদিকে চলতি বছরের ২ মার্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন তেজগাঁও পৌঁছামাত্র রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে গেটম্যান এক কিশোরকে আটক করে। ওই ঘটনায় পরের দিন ঢাকা রেলওয়ে থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় ৬ জনের নামসহ ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। তাৎক্ষণিক আটক কিশোর বাদে অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি রেলওয়ে পুলিশ।

জানতে চাইলে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলার আসামিরা বস্তি, কলোনিতে বসবাস করে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই কিশোর। রেলের নিরাপত্তা কর্মীর হাতে আটক এক কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। বাকি আসামীদের কাউকে সনাক্তই করা সম্ভব হয়নি।