ঢাকা ০৫:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ শেখ হাসিনা ও রেহানাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় হত্যা মামলা ভারতে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে ভোলায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ আল-আরাফাহ ঘিরে নতুন পাঁয়তারা রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র তিতু গ্রেফতার আঙুল ফুলে কলাগাছ গোয়াইনঘাটের বুঙ্গড়ী আজিজুল-মাসুক! দুদক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদের পাহাড়  আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ঘনিষ্ঠ দু’জনকে অতিরিক্ত এমডি পদে নিয়োগের আয়োজন ১১৭০ টাকার নামজারির খরচ, ভূমি কর্মকর্তা নেন ৮-১৫ হাজার! পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার হাসানুজ্জামানের দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্যে যেন আলাউদ্দিনের চেরাগ।

আজাদের দুর্নীতির শেষ কোথায়?

নানা অনিয়মে জড়িয়ে সরকারি অর্থ লুটপাট করা বাংলাদেশ প্রেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) ডিজিএিম (বন্টন ও বিপণন) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদের দুর্নীতির তদন্তে কোন গতি না থাকার অভিযোগ ওঠেছে। ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা থাকলেও ১৬ মাসেও আলোর মুখ দেখেনি সেই তদন্ত প্রতিবেদন। তবে বিষয়টিকে রহস্যজনক মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ দুদক তদন্ত না করে নিজেদের লোক দিয়ে তদন্ত করার বিষয়টিকে রহস্যজনক মনে করছেন অনেকেই। বিষয়টিকে শিয়ালের কাছে মুরগী পালনের দায়িত্ব দেওয়ার সাথেও তুলনা করছেন খোদ বিপিসর লোকজন। এসব তদন্তের সঠিক প্রতিবেদন নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিসি ও দুদকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতির বিষয়টি দুদক তদন্ত করবেন এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু এখানে বিষয়টি অন্যরকম। হয়তো অপরাধীকে বাঁচানোর জন্য কাজ করছে একটি পক্ষ। এভাবে চলতে থাকলে দুর্নীতির লাগাম টানাতো দুরের কথা, দুর্নীতিবাজরা আরো উৎসাহিত হবে। তাই সঠিক সংস্থার মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত করে, আইনানুগ পদ্ধতিতে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।

জানা যায় যমুনা অয়েল কোম্পানীর (মংলা অয়েল ইন্সটলেশন) এর ব্যবস্থাপক (পরিচালন) বিপিসির ডিজিএিম (বন্টন ও বিপণন) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি করে বিপিসি। ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর বিপিসির তৎকালীন সচিব মো.লাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ”বিপিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদের বিরুদ্ধে বিপিসির অধীনস্থ যমুনা অয়েল কোম্পানি লি: (মংলা অয়েল ইন্সটলেশন) এর ব্যবস্থাপক (পরিচালন) কর্তৃক দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা বরাবরে দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থার মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) জনাব মুস্তফা কুদরুত-ই-ইলাহী’কে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলো।” ”তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে আগামী ২০ (বিশ) কার্যদিবসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করতে বলা হয়েছে।”

এই অফিস আদেশের ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। এছাড়াও দুদকের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়নি কোন রকম ব্যবস্থা।

এই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় -১ এর উপরিচালক নাজমুচ্ছাদাত বলেন, আমরা এই ধরণের কোন অভিযোগ এখনো হাতে পাইনি। যদি ঢাকায় দিয়ে থাকে তবে তা কি অবস্থায় আছে তা আমরা বলতে পারবনা। আর কি কারনে তদন্ত হচ্ছে না বা গাফিলতি হচ্ছে কিনা তা আমরা বলতে পারবোনা। আমাদের কাছে যদি অফিসিয়াল কোন অর্ডার আসে তবে আমরা অবশ্যই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।
জানা যায়, বিপিসির এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত জানুয়ারি মাসে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আরো একটি লিখিত অভিযোগ জমা হয়েছিল। সেই অভিযোগেরও তদন্ত কাজ শুরু হয়নি।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দুদকের কাছে দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে মোরশেদ হোসেন আজাদ বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি করে, বিপুল পরিমান সম্পদ অর্জন করেছে।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৩ ই মার্চ সনদ জালিয়াতি করে বিপিসির উপ-ব্যবস্থাপক (বিপণন) পদে নিয়োগ পেয়েছেন। সেই অপরাধের বিচার না হওয়ায় তিনি একের পর এক অন্যায় করে গেলেও আর কোন বিচার হয়নি। জালিয়াতির বিষয়টি অডিটে আপত্তি দিলেও রহস্যজনক কারনে তা ফাইলের নিচে চাপা পড়ে আছে। এমনকি অফিস থেকে ফাইল গায়েব হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

সরকারি নিয়োগবিধিতে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তিকে কোন পদে নিয়োগ করা হইবে না, যদি তজ্জন্য তাঁহার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকে এবং সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে, তাঁহার বয়স উক্ত পদের জন্য তফসিলে উল্লেখিত বয়ঃসীমার মধ্যে না হয় : এই ক্ষেত্রে নিয়োগবিধি উপেক্ষা করে মোরশেদ হোসাইন আজাদকে নিয়োগ হয়েছে। যা সম্পুর্ণ আইনের পরিপন্থি। সেই হিসেবে বর্তমানে তার ডিজিএম পদটিও বেআইনি।

বেআইনিভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে গড়ে তুলেছেন ২০ টির বেশি দোকান। এছাড়াও কালুর ঘাট, কালা মিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় স্ত্রী লুৎফা জাহানের নামে গড়ে তুলেছেন বহুতল বিশিষ্ট ভবন।

বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পগুলোতে ডিলারদের বেজাল তেল বিক্রয়ে উৎসাহী করে ভূয়া রিপোর্ট প্রদান করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অথচ বিপিসিতে রিপোর্ট প্রদান করেন বেজাল মুক্ত তেল হিসেবে।

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী লিমিটেডে (এসএওসিএল) থাকাকালীন সময়ে ফোরকান ট্রেডিংয়ের সাথে আঁতাত করে আমদানীকৃত বিটুমিন বাজার দরের অনেক কম দামে বিক্রি করে আত্মসাৎ করেন কয়েক কোটি টাকা।

এসএওসিএল এর সীতাকুণ্ড প্রজেক্টের স্টিল স্ট্রাকচার আত্মসাৎ, এসএওসিএলের আমদানীকৃত লুব (বেস অয়েল) বিপিসি নির্ধারিত মূল্যে প্রতি লিটার ১১৭ টাকা প্রতি লিটার পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলকে বিক্রি করা হতো। কিন্তু মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের কাছে ১০৯ টাকা দরে বিক্রি করে দেন। যা বিপিসির নির্ধারিত মূল্যে ধরলেও আরো ২ কোটির টাকা বেশি বিক্রি করা যেতো। কিন্তু না করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কোম্পানীর টাকা গচ্ছা দেখিয়েছেন তৎকালীন বোর্ড।

তদন্ত প্রতিবেদনের এব্যপারে জানতে চাইলে বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) এবং তদন্ত কর্মকর্তা মুস্তফা কুদরুত-ই-ইলাহী বলেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করছি, খুব শীঘ্রই প্রতিবেদন দেওয়া হবে। ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ১৬ মাস হয়ে গেছে এখনো না দেওয়ার রহস্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ অনেক, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনে নামে বেনামে অভিযোগ দিয়েছে। আবার কিছু অভিযোগে যাদের নাম দেওয়া আছে তারা বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তবুও আমি তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দিব। কোন অপরাধের সাথে তার সংশ্লিষ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ

আজাদের দুর্নীতির শেষ কোথায়?

আপডেট সময় ০১:১১:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩

নানা অনিয়মে জড়িয়ে সরকারি অর্থ লুটপাট করা বাংলাদেশ প্রেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) ডিজিএিম (বন্টন ও বিপণন) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদের দুর্নীতির তদন্তে কোন গতি না থাকার অভিযোগ ওঠেছে। ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা থাকলেও ১৬ মাসেও আলোর মুখ দেখেনি সেই তদন্ত প্রতিবেদন। তবে বিষয়টিকে রহস্যজনক মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ দুদক তদন্ত না করে নিজেদের লোক দিয়ে তদন্ত করার বিষয়টিকে রহস্যজনক মনে করছেন অনেকেই। বিষয়টিকে শিয়ালের কাছে মুরগী পালনের দায়িত্ব দেওয়ার সাথেও তুলনা করছেন খোদ বিপিসর লোকজন। এসব তদন্তের সঠিক প্রতিবেদন নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিসি ও দুদকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতির বিষয়টি দুদক তদন্ত করবেন এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু এখানে বিষয়টি অন্যরকম। হয়তো অপরাধীকে বাঁচানোর জন্য কাজ করছে একটি পক্ষ। এভাবে চলতে থাকলে দুর্নীতির লাগাম টানাতো দুরের কথা, দুর্নীতিবাজরা আরো উৎসাহিত হবে। তাই সঠিক সংস্থার মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত করে, আইনানুগ পদ্ধতিতে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।

জানা যায় যমুনা অয়েল কোম্পানীর (মংলা অয়েল ইন্সটলেশন) এর ব্যবস্থাপক (পরিচালন) বিপিসির ডিজিএিম (বন্টন ও বিপণন) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি করে বিপিসি। ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর বিপিসির তৎকালীন সচিব মো.লাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ”বিপিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদের বিরুদ্ধে বিপিসির অধীনস্থ যমুনা অয়েল কোম্পানি লি: (মংলা অয়েল ইন্সটলেশন) এর ব্যবস্থাপক (পরিচালন) কর্তৃক দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা বরাবরে দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থার মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) জনাব মুস্তফা কুদরুত-ই-ইলাহী’কে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলো।” ”তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে আগামী ২০ (বিশ) কার্যদিবসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন চেয়ারম্যান বরাবর দাখিল করতে বলা হয়েছে।”

এই অফিস আদেশের ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। এছাড়াও দুদকের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়নি কোন রকম ব্যবস্থা।

এই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় -১ এর উপরিচালক নাজমুচ্ছাদাত বলেন, আমরা এই ধরণের কোন অভিযোগ এখনো হাতে পাইনি। যদি ঢাকায় দিয়ে থাকে তবে তা কি অবস্থায় আছে তা আমরা বলতে পারবনা। আর কি কারনে তদন্ত হচ্ছে না বা গাফিলতি হচ্ছে কিনা তা আমরা বলতে পারবোনা। আমাদের কাছে যদি অফিসিয়াল কোন অর্ডার আসে তবে আমরা অবশ্যই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।
জানা যায়, বিপিসির এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত জানুয়ারি মাসে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আরো একটি লিখিত অভিযোগ জমা হয়েছিল। সেই অভিযোগেরও তদন্ত কাজ শুরু হয়নি।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দুদকের কাছে দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে মোরশেদ হোসেন আজাদ বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি করে, বিপুল পরিমান সম্পদ অর্জন করেছে।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৩ ই মার্চ সনদ জালিয়াতি করে বিপিসির উপ-ব্যবস্থাপক (বিপণন) পদে নিয়োগ পেয়েছেন। সেই অপরাধের বিচার না হওয়ায় তিনি একের পর এক অন্যায় করে গেলেও আর কোন বিচার হয়নি। জালিয়াতির বিষয়টি অডিটে আপত্তি দিলেও রহস্যজনক কারনে তা ফাইলের নিচে চাপা পড়ে আছে। এমনকি অফিস থেকে ফাইল গায়েব হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

সরকারি নিয়োগবিধিতে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তিকে কোন পদে নিয়োগ করা হইবে না, যদি তজ্জন্য তাঁহার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকে এবং সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে, তাঁহার বয়স উক্ত পদের জন্য তফসিলে উল্লেখিত বয়ঃসীমার মধ্যে না হয় : এই ক্ষেত্রে নিয়োগবিধি উপেক্ষা করে মোরশেদ হোসাইন আজাদকে নিয়োগ হয়েছে। যা সম্পুর্ণ আইনের পরিপন্থি। সেই হিসেবে বর্তমানে তার ডিজিএম পদটিও বেআইনি।

বেআইনিভাবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে গড়ে তুলেছেন ২০ টির বেশি দোকান। এছাড়াও কালুর ঘাট, কালা মিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় স্ত্রী লুৎফা জাহানের নামে গড়ে তুলেছেন বহুতল বিশিষ্ট ভবন।

বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পগুলোতে ডিলারদের বেজাল তেল বিক্রয়ে উৎসাহী করে ভূয়া রিপোর্ট প্রদান করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অথচ বিপিসিতে রিপোর্ট প্রদান করেন বেজাল মুক্ত তেল হিসেবে।

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী লিমিটেডে (এসএওসিএল) থাকাকালীন সময়ে ফোরকান ট্রেডিংয়ের সাথে আঁতাত করে আমদানীকৃত বিটুমিন বাজার দরের অনেক কম দামে বিক্রি করে আত্মসাৎ করেন কয়েক কোটি টাকা।

এসএওসিএল এর সীতাকুণ্ড প্রজেক্টের স্টিল স্ট্রাকচার আত্মসাৎ, এসএওসিএলের আমদানীকৃত লুব (বেস অয়েল) বিপিসি নির্ধারিত মূল্যে প্রতি লিটার ১১৭ টাকা প্রতি লিটার পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলকে বিক্রি করা হতো। কিন্তু মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের কাছে ১০৯ টাকা দরে বিক্রি করে দেন। যা বিপিসির নির্ধারিত মূল্যে ধরলেও আরো ২ কোটির টাকা বেশি বিক্রি করা যেতো। কিন্তু না করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কোম্পানীর টাকা গচ্ছা দেখিয়েছেন তৎকালীন বোর্ড।

তদন্ত প্রতিবেদনের এব্যপারে জানতে চাইলে বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) এবং তদন্ত কর্মকর্তা মুস্তফা কুদরুত-ই-ইলাহী বলেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করছি, খুব শীঘ্রই প্রতিবেদন দেওয়া হবে। ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ১৬ মাস হয়ে গেছে এখনো না দেওয়ার রহস্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ অনেক, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনে নামে বেনামে অভিযোগ দিয়েছে। আবার কিছু অভিযোগে যাদের নাম দেওয়া আছে তারা বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তবুও আমি তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দিব। কোন অপরাধের সাথে তার সংশ্লিষ।