রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার দূর্গাপুরে যৌতুকের জন্য নিজ স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী কে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব। শনিবার র্যাব-১৩’র অধিনায়কের পক্ষে সহকারী পরিচালক মিডিয়া ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৭ মার্চ ২০২৩ তারিখে রংপুর জেলার মিঠাপুকুরে যৌতুকের জন্য শিমু বেগম (২০) খুন হয়। ঘটনাটি জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমসমূহে প্রচারিত হলে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায় যে, গৃহবধূ শিমু বেগমের সাথে পারিবারিকভাবে মোঃ বাবুল মিয়ার ছেলে মোঃ দুলাল মিয়ার সাথে ১৮ মাস আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী, শ্বশুর এবং শাশুড়ী যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে শিমুকে নির্যাতন করতে থাকে।
আরও জানা যায় যে, গৃহবধূ শিমু বেগমের বিবাহের পর ডিসকভার মোটরসাইকেল, ঘরের আসবাবপত্র এবং নগদ ২ লক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে দিয়েছে। বিবাহের কিছুদিন পর হতে দুলাল মিয়া তার বাবা মায়ের কু-পরামর্শে আরও ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। শিমুকে প্রায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল দুলাল মিয়া।
এরই সূত্র ধরে চলতি বছরের (৭ মার্চ) শিমু বেগমকে মারপিটসহ বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে স্বামী দুলাল মিয়া তার বাবা মোঃ বাবুল মিয়া এবং মোছাঃ দুলালী বেগম মিলে শিমুর গলা চেপে হত্যা করে। ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য মুখে কীটনাশক (বিষ) ঢেলে দেয়।
এ ঘটনায় শিমু বেগমের বাবা বাদী হয়ে (৭ মার্চ) রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১০, তারিখ-০৭/০৩/২০২৩, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) এর ১১(ক)/৩০। ঘটনার পর পরেই আসামীরা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।
উক্ত চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে র্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর রংপুর। এক পর্যায়ে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল (১৪ এপ্রিল) জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানা এলাকায় যৌথ অভিযান চালায় র্যাব-১৪, সিপিসি-১ জামালপুর ও র্যাব-১৩, ব্যাটালিয়ন সদর রংপুর। এ সময় বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক আসামী রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার অন্তর্ভুক্ত দূর্গাপুর রশনিপাড়া গ্রামের মোঃ বাবুল মিয়ার ছেলে মোঃ দুলাল মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, দুলাল মিয়া ঐ দিনের হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক ১৬১ ধারা মোতাবেক জবানবন্দী প্রদান করেন।
দুলাল আরো জানায়, অন্যান্যদের সহায়তায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শিমুকে গলা চেপে হত্যা করে এবং পরে মুখে বিষঢেলে আত্মহত্যার প্রচারণা চালায়। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার জন্য র্যাব-১৩ গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে।