ঢাকা ০৫:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর উদ্যোগে মাদক বিরোধী র‌্যালি,সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নতুন ব্রিজ এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে পথচারী জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে আমরা আর কোনো অবিচার চাই না’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে বদলি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ রিমান্ডে যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক ২ আইজিপি বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ফের উত্তাল আশুলিয়া, বন্ধ ৫২ কারখানা ট্রাইব্যুনালে প্রথমবার হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ আগামী মাসেই বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি করতে চায় নেপাল

একটি স্লিপার বসলেই পদ্মা সেতুতে চলবে ট্রেন

পদ্মা সেতুতে রেললাইন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাত্র একটি স্লিপার বসানো হলেই পদ্মা সেতুতে ৬ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ রেলপথের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হবে। এরপরেই দ্বিতল পদ্মা সেতুর নিচতলা দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেললাইনটি ২ ভাগে ভাগ করে দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৯১ শতাংশ। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের স্টেশন এলাকায় মূললাইন বসানো হলেও সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে। এই লাইন দিয়েই চালানো যাবে পরীক্ষামূলক ট্রেন।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘পদ্মা সেতুতে রেলওয়ের কাজ চলছে। এখনও একটি স্লিপার অ্যাডজাস্ট হয়নি। সেটি চীন থেকে এলে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সাইটে পৌঁছালে আমরা তা এনে কাজ শেষ করতে পারব।’

‘রেললাইনে ৭ মিটার অংশের কাজ বাকি আছে। এখানে স্লিপার বসবে। এটা আমাদের একদিনের কাজ’।

আফজাল হোসেন বলেন, ‘মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজ ৯১ শতাংশ হয়ে গেছে। স্টেশন এলাকার কিছু কাজ বাকি আছে। স্টেশনের ভবন, স্টেশন ইয়ার্ড লাইন ও সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি আছে। এটাই হচ্ছে সেই ৯ শতাংশ বাকি কাজ। স্টেশন এলাকার মেইন লাইন বসানো হয়ে গেছে। এটা দিয়ে আমরা ট্রেন চালাতে পারব।’

dhakapost

পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম আগামী ৩০ মার্চ তারিখে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালাতে। কিন্তু ওই কাজটুকু বাকি (একটি স্লিপার) আছে বলে ওই সময়ে আমরা তা করতে পারছি না। সাইটে মাল না যাওয়া পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। তবে আগামী সপ্তাহেই আশা করি পরীক্ষামূলক ট্রেন চালাতে পারব।’

এদিকে আগামী ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুসহ মাওয়া-ভাঙ্গা সংযোগ রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি জানান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম। তিনি বলেন, ৩০ মার্চ সেতুতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি না হওয়ায় পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর জন্য ৪ এপ্রিল দিন ঠিক করা হয়েছে।

সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় রেলওয়ে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকায় ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন দিয়ে যশোরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সংযোগ স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে ১৮ হাজার ২১০ কোটি ১১ লাখ টাকা। বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিয়েছে। চীন সরকার মনোনীত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড জিটুজি সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ৩০ জুন মাসে।

প্রকল্পটির আওতায় নির্মিতব্য ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির ব্রডগেজ লাইনটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে কেরানীগঞ্জ, শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা, সেতু জাজিরা, ভাঙ্গা, কাশিয়ানী, নড়াইল এবং জামদিয়া হয়ে পদ্মবিলা পর্যন্ত যাওয়ার পর এর একটি শাখা যশোরের রূপদিয়া এবং অন্যটি খুলনার সিঙ্গাইর স্টেশনে যুক্ত হবে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বরিশাল ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকেও রেলের মাধ্যমে যুক্ত করার সুযোগ উন্মোচিত হয়েছে।

বাস্তবায়ন শেষে এটি হবে বাংলাদেশে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের একটি অংশ। এই মেগা প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ রেল লাইন, ২৩.৩৮ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ২৭৪টি মাইনর ব্রিজ ও কালভার্ট, ৩০টি লেভেল ক্রসিং, ১৩১টি আন্ডার পাস এবং ৫৮টি মেজর ব্রিজ। এছাড়া নির্মিত হচ্ছে ২০টি আধুনিক স্টেশন।

সরকার ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের অনুমোদন দেয় এবং এটি একটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়। প্রকল্পের আওতায় মূলপথ ১৬৯ কিলোমিটারসহ মোট ২১৫ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর উদ্যোগে মাদক বিরোধী র‌্যালি,সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

একটি স্লিপার বসলেই পদ্মা সেতুতে চলবে ট্রেন

আপডেট সময় ০১:০৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

পদ্মা সেতুতে রেললাইন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাত্র একটি স্লিপার বসানো হলেই পদ্মা সেতুতে ৬ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ রেলপথের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হবে। এরপরেই দ্বিতল পদ্মা সেতুর নিচতলা দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেললাইনটি ২ ভাগে ভাগ করে দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৯১ শতাংশ। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের স্টেশন এলাকায় মূললাইন বসানো হলেও সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে। এই লাইন দিয়েই চালানো যাবে পরীক্ষামূলক ট্রেন।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘পদ্মা সেতুতে রেলওয়ের কাজ চলছে। এখনও একটি স্লিপার অ্যাডজাস্ট হয়নি। সেটি চীন থেকে এলে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সাইটে পৌঁছালে আমরা তা এনে কাজ শেষ করতে পারব।’

‘রেললাইনে ৭ মিটার অংশের কাজ বাকি আছে। এখানে স্লিপার বসবে। এটা আমাদের একদিনের কাজ’।

আফজাল হোসেন বলেন, ‘মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজ ৯১ শতাংশ হয়ে গেছে। স্টেশন এলাকার কিছু কাজ বাকি আছে। স্টেশনের ভবন, স্টেশন ইয়ার্ড লাইন ও সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি আছে। এটাই হচ্ছে সেই ৯ শতাংশ বাকি কাজ। স্টেশন এলাকার মেইন লাইন বসানো হয়ে গেছে। এটা দিয়ে আমরা ট্রেন চালাতে পারব।’

dhakapost

পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম আগামী ৩০ মার্চ তারিখে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালাতে। কিন্তু ওই কাজটুকু বাকি (একটি স্লিপার) আছে বলে ওই সময়ে আমরা তা করতে পারছি না। সাইটে মাল না যাওয়া পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। তবে আগামী সপ্তাহেই আশা করি পরীক্ষামূলক ট্রেন চালাতে পারব।’

এদিকে আগামী ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুসহ মাওয়া-ভাঙ্গা সংযোগ রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি জানান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম। তিনি বলেন, ৩০ মার্চ সেতুতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি না হওয়ায় পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর জন্য ৪ এপ্রিল দিন ঠিক করা হয়েছে।

সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় রেলওয়ে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকায় ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন দিয়ে যশোরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সংযোগ স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে ১৮ হাজার ২১০ কোটি ১১ লাখ টাকা। বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিয়েছে। চীন সরকার মনোনীত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড জিটুজি সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ৩০ জুন মাসে।

প্রকল্পটির আওতায় নির্মিতব্য ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির ব্রডগেজ লাইনটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে কেরানীগঞ্জ, শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা, সেতু জাজিরা, ভাঙ্গা, কাশিয়ানী, নড়াইল এবং জামদিয়া হয়ে পদ্মবিলা পর্যন্ত যাওয়ার পর এর একটি শাখা যশোরের রূপদিয়া এবং অন্যটি খুলনার সিঙ্গাইর স্টেশনে যুক্ত হবে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বরিশাল ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকেও রেলের মাধ্যমে যুক্ত করার সুযোগ উন্মোচিত হয়েছে।

বাস্তবায়ন শেষে এটি হবে বাংলাদেশে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের একটি অংশ। এই মেগা প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ রেল লাইন, ২৩.৩৮ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ২৭৪টি মাইনর ব্রিজ ও কালভার্ট, ৩০টি লেভেল ক্রসিং, ১৩১টি আন্ডার পাস এবং ৫৮টি মেজর ব্রিজ। এছাড়া নির্মিত হচ্ছে ২০টি আধুনিক স্টেশন।

সরকার ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের অনুমোদন দেয় এবং এটি একটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়। প্রকল্পের আওতায় মূলপথ ১৬৯ কিলোমিটারসহ মোট ২১৫ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে।