ঢাকা ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

হাকালুকিতে কমছে পরিযায়ী পাখি; হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি। হাকালুকিতে এখন অনিরাপদ আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি। পাখি শিকারীদের কারণে দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। যার কারণে হাকালকি হাওরের জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে।

এ বছরের জানুয়ারি মাসের ২৮ ও ২৯ তারিখ দুই দিন ব্যাপী হাকালুকি হাওরে পরিচালিত হয় পাখিশুমারি। বাংলাদেশ বন বিভাগ, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) পাখি শুমারি করে।

বাংলাদেশে ৭১৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। শীতকালে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। তারা বেছে নেয় হাকালুকি হাওরের জলাশয়। প্রায় ১৮১ বর্গ কিলোমিটার এ হাওরে রয়েছে ছোট বড় ২৭৬ টি বিল। বিগত বছরের মতো এবারও হয় পাখি শুমারি। তাদের জরিপে হাকালুকিতে এ বছর এসেছে ২৫ হাজার পাখি। যা বিগত বছর গুলো থেকে অনেক কম। যা ২০২০ সালে ছিল ৪০ হাজার ১২৬ টি পাখি। মাত্র কয়েক বছর আগে দেশে ৫-৬ লাখ পরিযায়ী পাখি আসত। এসব পাখি বেশিরভাগ মৌলভীবাজার ও সিলেটের হাওর গুলোকে মুখরিত রাখতো।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এর পর্যবেক্ষণ বলছে, গত ২০ বছরে সমগ্র বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ কমেছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। এবং হাকালুকিতে কমেছে ৪৫ শতাংশ। ২০০০ সালের আগে হাওরে গড়ে বিচরণ করতো ৭৫-৮০ হাজার পাখি। তার ৮০ শতাংশ হাকালুকি হাওরে।

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা এতো দ্রুত কেন কমেছে তার পেছনে মূল কারণ কি? এর জবাবে পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, নদী দূষণ, জাল বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে পাখি শিকার, একসাথে বেশ কয়েকটি বিলে মাছ আহরণ, ইজারাদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ নিধন, বিলে দিবারাত্রি পাহারা ও জলজ বৃক্ষ নিধন সহ নানান সমস্যার কথা।

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্য স্থানীয় পরিবেশ কর্মী খোর্শেদ আলম জানান, হাকালুকি হাওরের সাথে যে নদী গুলো মিলিত হয়েছে এখন এই নদীগুলো ময়লার ভাগাড়! প্লাস্টিক, পলিথিন ও দূষিত পানি! পাখি কমার বিশেষ কয়েকটি কারণের মধ্যে এটি একটি। জাল, বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে নিয়মিত পাখি নিধনের পাশাপাশি পাখিদের বিচরণ ভূমি জলাশয় গুলো অরক্ষিত থাকায় দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। হাওরের পরিযায়ী পাখি রক্ষায় স্থানীয়দের সচেতনতা বাধ্যতামূলক, পাশাপাশি প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকতে হবে। এতে বাঁচবে আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর হাওরে বিল গুলো ইজারা দেয়া হয়। এবছরও হয়েছে। এতে বেশ লোকসমাগম ঘটে। দিনরাত পাহারা দেয়া হয়। এসব কারণে পরিযায়ী পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না। ইজারদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্র। ফলে পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা কমছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

হাকালুকিতে কমছে পরিযায়ী পাখি; হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

আপডেট সময় ০৫:১১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি। হাকালুকিতে এখন অনিরাপদ আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি। পাখি শিকারীদের কারণে দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। যার কারণে হাকালকি হাওরের জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে।

এ বছরের জানুয়ারি মাসের ২৮ ও ২৯ তারিখ দুই দিন ব্যাপী হাকালুকি হাওরে পরিচালিত হয় পাখিশুমারি। বাংলাদেশ বন বিভাগ, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) পাখি শুমারি করে।

বাংলাদেশে ৭১৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। শীতকালে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। তারা বেছে নেয় হাকালুকি হাওরের জলাশয়। প্রায় ১৮১ বর্গ কিলোমিটার এ হাওরে রয়েছে ছোট বড় ২৭৬ টি বিল। বিগত বছরের মতো এবারও হয় পাখি শুমারি। তাদের জরিপে হাকালুকিতে এ বছর এসেছে ২৫ হাজার পাখি। যা বিগত বছর গুলো থেকে অনেক কম। যা ২০২০ সালে ছিল ৪০ হাজার ১২৬ টি পাখি। মাত্র কয়েক বছর আগে দেশে ৫-৬ লাখ পরিযায়ী পাখি আসত। এসব পাখি বেশিরভাগ মৌলভীবাজার ও সিলেটের হাওর গুলোকে মুখরিত রাখতো।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এর পর্যবেক্ষণ বলছে, গত ২০ বছরে সমগ্র বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ কমেছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। এবং হাকালুকিতে কমেছে ৪৫ শতাংশ। ২০০০ সালের আগে হাওরে গড়ে বিচরণ করতো ৭৫-৮০ হাজার পাখি। তার ৮০ শতাংশ হাকালুকি হাওরে।

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা এতো দ্রুত কেন কমেছে তার পেছনে মূল কারণ কি? এর জবাবে পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, নদী দূষণ, জাল বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে পাখি শিকার, একসাথে বেশ কয়েকটি বিলে মাছ আহরণ, ইজারাদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ নিধন, বিলে দিবারাত্রি পাহারা ও জলজ বৃক্ষ নিধন সহ নানান সমস্যার কথা।

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্য স্থানীয় পরিবেশ কর্মী খোর্শেদ আলম জানান, হাকালুকি হাওরের সাথে যে নদী গুলো মিলিত হয়েছে এখন এই নদীগুলো ময়লার ভাগাড়! প্লাস্টিক, পলিথিন ও দূষিত পানি! পাখি কমার বিশেষ কয়েকটি কারণের মধ্যে এটি একটি। জাল, বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে নিয়মিত পাখি নিধনের পাশাপাশি পাখিদের বিচরণ ভূমি জলাশয় গুলো অরক্ষিত থাকায় দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। হাওরের পরিযায়ী পাখি রক্ষায় স্থানীয়দের সচেতনতা বাধ্যতামূলক, পাশাপাশি প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকতে হবে। এতে বাঁচবে আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর হাওরে বিল গুলো ইজারা দেয়া হয়। এবছরও হয়েছে। এতে বেশ লোকসমাগম ঘটে। দিনরাত পাহারা দেয়া হয়। এসব কারণে পরিযায়ী পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না। ইজারদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্র। ফলে পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা কমছে।