সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দেওয়াসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে রাজধানী ঢাকায় দুইদিন পদযাত্রা করবে বিএনপি। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাতে অনুষ্ঠিত দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম-স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে গোপীবাগ ব্রাদার্স ক্লাব মাঠ থেকে থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রা হবে। আর ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজনে শ্যামলী ক্লাব মাঠ থেকে রিং রোড, শিয়া মসজিদ, তাজমহল রোড, নুরজাহান রোড, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে বসিলা পর্যন্ত পদযাত্রা করা হবে।
বিএনপির আন্দোলনকে ঘিরে সরকার প্রথম থেকেই উসকানি দিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি দেওয়ার পর এখন আওয়ামী লীগ ইউনিয়ন পর্যায়ে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে।
বিএনপির কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগকে তাদের ঘোষিত ইউনিয়ন পর্যায়ের পাল্টা কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিবের দাবি, সরকার চেষ্টা করছে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যেতে। বিএনপি নয় আওয়ামী লীগ উদ্দেশ্য সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করা। সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করছে। বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিকে নস্যাৎ করার জন্য নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অবিলম্বে আটকদের মুক্তি দাবি জানাচ্ছি।
বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চায় বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তবে জনগণ যখন চাইবে তখন হরতাল-অবরোধের মতো সব ধরনের কর্মসূচি হবে। আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপির ১০ দফা দাবি মেনে নেবে।
বিএনপি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে বাধ্য করবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বলে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দল চাইছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে। আরও কয়েকটি নির্বাচন কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যায় তারও উদ্যোগ নিতে হবে।
উন্নয়নের কথা বলে মানুষের সমস্যা সমাধানে সরকার ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। বলেন, ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির তদন্ত দাবি করে যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে তা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ প্রকাশের কথা জানান মির্জা ফখরুল। বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে পুলিশকে ব্যবহার করে বিএনপির আন্দোলন দমনের ষড়যন্ত্র চলছে। পুলিশকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যেন না জড়ানো হয় দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সে দাবি করা হয়।
স্থায়ী কমিটির সভায় ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে হতাহতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বলেও জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দুই দেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে একাত্মতা ও সমবেদনা প্রকাশ করা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।