২৩টি সরকারি দপ্তরের সেবায় ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির ১৬৫ অভিযোগ নিয়ে গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হলো দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানি।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) গাজীপুরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে সেবা প্রার্থী জনসাধারণ সরাসরি ৮৬টি অভিযোগ উপস্থাপন করেন। বাকি অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
উপস্থাপিত অভিযোগের মধ্যে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, বন বিভাগ, সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস এবং বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৪টি অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিছু অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়েছে।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। জনসচেতনতাই রুখবে দুর্নীতি। সরকারি কর্মচারীদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
গাজীপুরে ‘রুখবো দুর্নীতি গড়বো দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ এ স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. আনিসুর রহমান এর সভাপতিত্ব করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার, সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রফেসর এম এ বারীসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, গণশুনানিতে গাজীপুরের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা নিতে গিয়ে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার এবং সেবা প্রত্যাশী জনসাধারণ দৃঢ়তার সাথে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তাদের অভিযোগসমূহ দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা শুনেছেন এবং কিছু অভিযোগে সমস্যার সমাধান করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তীতে কমিশন কর্তৃক যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
গণশুনানিতে হাসপাতাল, পাসপোর্ট, বিআরটিএ, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সমাজসেবা, জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন, তিতাস গ্যাস, পরিবেশ অধিদপ্তর, গাজীপুর জেলা কারাগার ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, নির্বাচন অফিস, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বন বিভাগ, শিক্ষা অফিস, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ, প্রাণী সম্পদ অফিস, জীবন বীমা কর্পোরেশনসহ ২৩টি সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে ১৬৫টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।