সংরক্ষণে সিলেট বিভাগীয় কমিশনা কার্যালয়ের আদেশ বাস্তবায়নে অনীহা দেওগাঁও ৩ গম্বুজ জামে মসজিদ। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউপির দেওগাঁও গ্রামে অবস্থিত মুঘল আমলেরও অনেক আগে স্থাপিত এই মসজিদটি জাতীয় ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে।
সম্প্রতি এটি নিয়ে কাজ করা স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদ মসি-র সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এটি সংরক্ষনে লিখিত আবেদন করেছিলেন।যার প্রেক্ষিতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সাধারণ শাখা-১ হতে বিশেষ একটি স্মারকে সিনিয়র সহকারী কমিশনার অনুপমা দাস বিষয়টি যাচাই পূর্বক গবেষণা ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা প্রদান করেছিলের।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বিগত ৬ অক্টোবর ২০২২ ইং মাধবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে(ইউএনও) সেই চিঠি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন যা ইউএনও কার্যালয়ের রেজিস্টার ডকেটের ৬২২ নং ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকলেও এর দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় নি। মাধবপুরের ইউএনও মঞ্জুর আহসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।এ
ছাড়া তিনি জানান মসজিদ কমিটির পক্ষ হতে আবেদন করলে রাস্তায় বড় একটি সাইনবোর্ড দেওয়ার অনুমোদন দেয়ার আশ্বাসও দেন।তবে বিভাগীয় কমিশনারের আদেশের বিষয়ে কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি।
দেওগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. আশ্রাফুল করিম সারোয়ার জানান,ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এই মসজিদটি সংরক্ষণ করলে এই এলাকা তথা আমাদের জাতীয় মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পেত।সমৃদ্ধ হতো স্থানীয় ইসলামী ঐতিহ্যের একটি নতুন দিকও। তিনি সংরক্ষণে সরকারি কার্যকরি উদ্যোগের দাবিও জানান। এলাকার সচেতন মহলের দাবি মুঘল আমলের মসজিদটিকে সংরক্ষণ করলে এবং উপজেলা সরকারি ওয়েবসাইটে মাধবপুরের দর্শনীয় স্থানের তালিকায় এটিকে উল্লেখ করলে ইসলামী ইতিহ্যের নিদর্শের প্রচার প্রসার হতো।এছাড়া এটি সংরক্ষনে উপজেলা প্রশাসনের কার্যকরী উদ্যোগের দাবিও জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য,দেওগাঁ গ্রামের প্রাচীন ঐতিহাসিক এই মসজিদের সোন্দর্য,নির্মাণ-শৈলী এবং স্থাপত্য কলা অবলোকন করতে দিন দিন দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে।এই মসজিদের একটি ফার্সী ফলকে এর সংস্কারকাল মোঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে বলে উল্লেখ আছে। তবে এর নির্মাণ এর অনেক আগে বলে ইতিহাস গবেষকদের ধারনা।দিল্লি সালতানাত আমলে এর নির্মানকাল না হয় মোঘল সম্রাট বাবর বা হুমায়ুন এর সময়কালে হতে পারে।
মসজিদটির সামনে থাকা একটি প্রাচীন দিঘিসহ একটি পুরানো মাজার রয়েছে যাকে স্থানীয়রা দরবেশ হযরত বদরুদ্দিন শাহ মাজার বলে উল্লেখ করেন। জঙ্গল-বাশবন ঘেরা উচু উচু টিলা এবং ঘনবৃক্ষের অন্যরকম পরিবেশের কারণে এলাকাটি অত্যন্ত ব্যাতিক্রমী হওয়াতে দর্শনার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন।