দক্ষিনখান থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মানবপাচারে জড়িত বিমানবন্দরের দুই কর্মীকে রাজধানীর দক্ষিনখান এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- বিমানবন্দরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অগ্রগামী ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের কর্মী মাহামুদুল হাছান (২৭) ও সিভিল এভিয়েশন কর্মরত জাহাঙ্গীর আলম বাদশা (৪১)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিনখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিআইডির মানবপাচার অপরাধ দমন ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) নজরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। সিআইডি বলছে, তাদের মূল পেশা ছিল মানবপাচার! ইরান ও তুরস্কে মানবপাচারকারী চক্রের প্রধান গ্রিসপ্রবাসী আলী হোসেনের হয়ে বাংলাদেশে কাজ করছিলেন তারা। বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) নজরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার আসামিরা অন্য আসামিদের সহায়তায় মানবপাচার করে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টার্গেট করা ব্যক্তিদের সংগ্রহ করে। পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে তাদের ভিজিট ভিসায় দুবাই পাঠায়। দুবাই থেকে আসামিদের সহযোগীরা তাদের (যারা বিদেশ গিয়েছে) মারপিট করে কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে ইরানি দালাল চক্রের কাছে হস্তান্তর করে। ইরানি দালাল চক্র এ দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় সমুদ্রপথে ইরানে নিয়ে একই পন্থায় আটক রেখে মারপিট করে।
এছাড়া দেশে ভুক্তভোগীদের আত্মীয়স্বজনকে মারধরের ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণের টাকা দিতে বাধ্য করে আসছিল এসএসপি নজরুল ইসলাম জানান, গ্রিসপ্রবাসী আলী হোসেনের স্ত্রী রাশিদা বেগমকে গ্রেফতার করে সিআইডি। রিমান্ড শেষে বর্তমানে জেলে আছেন রাশিয়া। বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তার জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। এরমধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি আব্দুস সালাম অরফে সালামত উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকালে আরও দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এছাড়া রাশিদার স্বামী আলী হোসেন ও ছেলে সাব্বির হোসেন দেশের বাইরে থাকায় তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সিআইডি সূত্রে জানা যায়, শাহাদাত হোসেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ মানুষদের সংগ্রহ করেন। ঢাকায় পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের বাকি কাজ করতেন আব্দুস সালাম নামে ওই চক্রের আরেক সদস্য। আর দেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের রিসিভ করেন দুবাইয়ে থাকা আব্দুল হান্নান। ইরানে এই চক্রের হয়ে কাজ করে মিজাদুল ও আলীর ছেলে সাব্বির।
উল্লখ্য, গত ১০ নভেম্বর মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে ডিএমপির বিমানবন্দর থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর ১২। পরে এই চক্রের প্রধান আলী হোসেনের স্ত্রী ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।