ঢাকা ১২:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুদকের অভিযানে সত্যতা : ৮ তলা ভবন-ফ্ল্যাটের মালিক রাজউক কর্মচারী

পূর্বাচল এস্টেট-২ এর পরিচালকের অফিস সহকারীর নাম জাফর সাদেক। সামান্য বেতনের কর্মচারী হলেও রাজধানীর আফতাবনগরে ৮ তলা ভবনের মালিক তিনি। আফতাবনগরের ডি ব্লকের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর রোডের ২৯ নম্বরে নূর আহমেদ ভিলা নামের বাড়িটি তার। এছাড়া শান্তিনগরের মেহমান টাওয়ারে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে জাফর সাদেকের।

এটা শুধু অভিযোগ নয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরেজমিন অভিযানেও প্রমাণ মিলেছে। যদিও দুদকের উপস্থিতি টের পেয়ে আগে-ভাগেই পালিয়ে যান জাফর সাদেক। এমনকি বারবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) অবৈধ প্লট বিক্রি, নকশা পাস ও অনুমোদন করিয়ে অঢেল সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের সহকারী পরিচালক নেয়ামুল আহসান গাজীর নেতৃত্বে একটি টিম বিশেষ অভিযানে রাজউক, শান্তিনগর ও আফতাবনগরে যায়।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজউকের কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবৈধ প্লট বিক্রি, নকশা পাস ও অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার নামে ঘুষ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, এক মন্ত্রীর সুপারিশে ২০০৬ সালে জাফর সাদেক রাজউকের অফিস সহকারী পদে চাকরি পান। চাকরির পাশাপাশি রাজউকের প্লট বিক্রি, নকশা পাস করিয়ে দেওয়ার অবৈধ বাণিজ্যে জড়িত হন তিনি। আর এসব কাজ করেই তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জাফর সাদেক বর্তমানে পূর্বাচল এস্টেট-২ এর পরিচালকের অফিস সহকারীর দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তিনি অফিস করেন না। রাজউক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতিও তিনি। এ প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে রাজউকের বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তিনি।

এর আগে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ থেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। ওই সময়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমে বলেন, ‘রাজউকের অনেক ফাইল গায়েব হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হয়েছিল। আবার জিডিও আছে। মামলা ও জিডির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ডেকেছিলাম। পরবর্তী পর্যায়ে এ বিষয়ে আরও কথা বলবো। তাকে আমরা নজরদারিতে রেখেছি।’

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, জাফর সাদেক ২০১৫ সালে ৭২ লাখ টাকায় কেনা জমিতে ২০২০ সালে দেড় কোটি টাকা খরচ করে বাড়িটি বানিয়েছেন। এছাড়াও নয়াপল্টনের গাজী শপিং কমপ্লেক্সে দোকান থাকারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুদকের অভিযানে সত্যতা : ৮ তলা ভবন-ফ্ল্যাটের মালিক রাজউক কর্মচারী

আপডেট সময় ০২:১০:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩

পূর্বাচল এস্টেট-২ এর পরিচালকের অফিস সহকারীর নাম জাফর সাদেক। সামান্য বেতনের কর্মচারী হলেও রাজধানীর আফতাবনগরে ৮ তলা ভবনের মালিক তিনি। আফতাবনগরের ডি ব্লকের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর রোডের ২৯ নম্বরে নূর আহমেদ ভিলা নামের বাড়িটি তার। এছাড়া শান্তিনগরের মেহমান টাওয়ারে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে জাফর সাদেকের।

এটা শুধু অভিযোগ নয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরেজমিন অভিযানেও প্রমাণ মিলেছে। যদিও দুদকের উপস্থিতি টের পেয়ে আগে-ভাগেই পালিয়ে যান জাফর সাদেক। এমনকি বারবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) অবৈধ প্লট বিক্রি, নকশা পাস ও অনুমোদন করিয়ে অঢেল সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের সহকারী পরিচালক নেয়ামুল আহসান গাজীর নেতৃত্বে একটি টিম বিশেষ অভিযানে রাজউক, শান্তিনগর ও আফতাবনগরে যায়।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজউকের কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবৈধ প্লট বিক্রি, নকশা পাস ও অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার নামে ঘুষ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, এক মন্ত্রীর সুপারিশে ২০০৬ সালে জাফর সাদেক রাজউকের অফিস সহকারী পদে চাকরি পান। চাকরির পাশাপাশি রাজউকের প্লট বিক্রি, নকশা পাস করিয়ে দেওয়ার অবৈধ বাণিজ্যে জড়িত হন তিনি। আর এসব কাজ করেই তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জাফর সাদেক বর্তমানে পূর্বাচল এস্টেট-২ এর পরিচালকের অফিস সহকারীর দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তিনি অফিস করেন না। রাজউক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতিও তিনি। এ প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে রাজউকের বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তিনি।

এর আগে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ থেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। ওই সময়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমে বলেন, ‘রাজউকের অনেক ফাইল গায়েব হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হয়েছিল। আবার জিডিও আছে। মামলা ও জিডির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ডেকেছিলাম। পরবর্তী পর্যায়ে এ বিষয়ে আরও কথা বলবো। তাকে আমরা নজরদারিতে রেখেছি।’

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, জাফর সাদেক ২০১৫ সালে ৭২ লাখ টাকায় কেনা জমিতে ২০২০ সালে দেড় কোটি টাকা খরচ করে বাড়িটি বানিয়েছেন। এছাড়াও নয়াপল্টনের গাজী শপিং কমপ্লেক্সে দোকান থাকারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।