হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম, বেড়েওঠা,বিয়ে-সংসার পড়াশোনা,অতঃপর বিদেশ গমন এসব সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৩১ নং ওয়ার্ডের আদিবাসী পল্লীর স্হায়ী বাসিন্দা রংপুর ডিসি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (অফিস সহায়ক) সুজন খাঁ খাঁ এর স্ত্রী সুজান্না হেমব্রম সুখী মা-বাবার কষ্টের সংসারে পড়াশোনা করতে না পেরে অল্প বয়সে বিয়ে করে সংসার জীবনে প্রবেশ করে।স্বামীর সংসারেও চলে টানা পড়েন।
এই অভাব অনাটনের মধ্যেও সংসার চালিয়ে, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর থেকে এইচ এস সি পাশ করে ও কারমাইকেল কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে। পাশাপাশি একটি এনজিও তে চাকুরী করে।এর মাঝেই আবার একটি কন্যা সন্তানের মাও হোন।নিজের ঘর সংসার ভালো মতন চালানোর জন্য এবং নিজের সন্তানকে ভালোমতন মানুষ করার জন্য সিদ্ধান্ত নেন বিদেশ যাওয়ার। স্বামীর স্হাবর- অস্হাবর সব সম্পত্তি বিক্রি করে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কুমিল্লা টি,টি,সি থেকে পরিবার-পরিজনকে রেখে,পাড়ি জমান হংকং নামক দেশে।
একটি বে-সরকারি ফার্মে চাকুরী শুরু করে।মাসিক বেতন ছিল বাংলাদেশী টাকায় ৪৫,০০০ হাজার।কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না। বিশ্বব্যাপী শুরু হয় মহমারী করোনা। হাল না ছেড়ে তারপরও চাকুরী করে ২বছর। ২০২১ সালের শেষের দিকে,সুখীর নিজের শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন ধরনের মরণ ব্যধি(এস,এল,ই, যক্ষা ও হৃদপিন্ডে পানি জমা)অনেক কষ্ট করে দেশে ফিরে আসেন ২০২২ সালের মার্চে। এখন সে মৃত্যুশয্যায়।জীবনের ন্যায়,মৃত্যুর সঙ্গেও লড়াই করছে প্রতিনিয়ত।খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে,দেশী বিদেশি অনেক ডাক্তার দেখেও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসেনি। এখন ডাক্তার বলছে অপারেশনের মাধ্যমে হৃদপিন্ডের পানি বের করতে হবে।
সুজান্না হেমব্রন সুখীর স্বামী,রংপুর ডিসি অফিসের অফিস সহায়ক সুজন খাঁ খাঁ এই প্রতিবেদক কে বলেন,আমার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৬জন।আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি নিজেই।অফিস থেকে যা বেতন পাই তা দিয়ে কোন রকম সংসার চালাই। আমার স্ত্রীকে বিয়ের পর থেকে,নানা রকম চড়াই-উতরাই পেরিয়ে,তাকে পড়াশোনা করিয়েছি। বিদেশেও পাঠিয়েছি, অনেক ধার দেনা করে। যাহা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি।তারপর আমার স্ত্রী যখন থেকে অসুস্থ তখন থেকে অনেক কষ্ট করে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি কাঁদো কাঁদো কন্ঠে আরো জানান,আমি এখন নিঃস্ব।আমার সম্পদ বলতে আছে শুধু আমার শোয়ার ঘরের একটি বিছানা চৌকি। ডাক্তার আমাকে বলেছে,হৃদপিন্ডের পানি বের করতে সব মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় ৭ লাখ টাকা। যাহা ব্যয় করা আমার পক্ষে একেবারেই সম্ভব না। আমি আমার স্ত্রীকে খুব ভালোবাসি ও আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। আমার স্ত্রীর সৃজনশীল শক্তি আছে। তার বেঁচে থাকা দেশের জন্য,তার সন্তানের জন্য,তার পরিবারের জন্য জুরুরী। আমি বিশ্বাস করি,সে বেঁচে থাকলে দেশের জন্য কিছু করতে পারবে।
আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,মমতাময়ী মা জননেত্রী শেখ হাসিনার শুভ দৃষ্টি কামনা করছি। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমার স্ত্রী একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা।তাকে বাঁচাতে সাহায্য করুন। ত্রুটি মার্জনীয়,যে কোন ধরনের তথ্য কিংবা সহযোগিতার জন্য, দৈনিক আমাদের মাতৃভুমি পত্রিকায়,আমার একটি ফোন নাম্বার ও ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ করলাম। ফোন নাম্বার- ০১৩০২৬২৬০০২। ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার-০১৯০০৩৩৭৭৯৮১১। আইএফআইসি ব্যাংক,মাহিগন্জ উপশাখা,রংপুর।