ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বার্মিজ চোরাই গরু-মহিষে সয়লাব চকরিয়া, যত্রতত্র হাট

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা গরু-মহিষের হাট বসছে যত্রতত্র। উপজেলার মানিকপুর, ফাঁসিয়াখালী ও ডুলাহাজারা ইউনিয়নসহ নানা পথ দিয়ে এসব চোরাই পশু আনা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতাদের দেখভালে নিয়ে যাওয়া হয় বাজারে। চকরিয়ায় স্থরে স্থরে রীতিমতো বসছে মিয়ানমারের পশুর হাট।

চোরাই পথে আসা এসব গবাদিপশুর হাটের কারণে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। স্থানীয় গরুর খামারিরা ব্যবসায়ে সুবিধা করতে না পেরে মুনাফা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। খামারি আলাউদ্দীন বলেন; বেশি দামে খাদ্য কিনে গবাদিপশু লালন-পালন করছি। আমারা বিক্রি করতে গেলে গরুর প্রতি কেজি পাঁচশ ও পড়েনা। কসাইরা সিন্ডিকেট করে মিয়ানমারের চোরাই গরু ক্রয় করে কেজি সাতশ করে বিক্রি করছে। আমরা নিরুপায় হয়ে অর্ধেক মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে আসা গবাদিপশু বাজারে দিন দিন দেশীয় পশুর দাম আরও কমাচ্ছে। যার কারণে লাভ-লোকসান পুষাতে না পেরে এখন গবাদিপশু লালন-পালন বন্ধ করে দিয়েছি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সভা করেছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অবৈধ হাট এবং মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আসা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রাহাত উজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

সুত্রে জানা যায়, গত ঈদুল আজহার আগে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে হাজারো গরু-মহিষ আসে। পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বান্দরবানের আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে। অন্তত অর্ধশতাধিক পথে মিয়ানমারের এসব গবাদিপশু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পাচারের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও জড়িত। মিয়ানমার থেকে এসব গরু-মহিষ এনে চকরিয়ার মানিকপুর বাজার, ফাঁসিয়াখালীর হাঁসের দীঘি ও ডুলাহাজারার রংমহল এলাকায় রাখা হয়।

এসব জায়গা থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভর্তি হাজার হাজার গবাদিপশু দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বিজিবি অভিযান চালিয়ে বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও চকরিয়ার মানিকপুর থেকে শতাধিক গরু-মহিষ জব্দ করে। এ ছাড়া মানিকপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির নিয়ন্ত্রণাধীন তীরডেপা বিজিবি ক্যাম্প ২৫টি গরু জব্দ করে।

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক বলেন, প্রায়ই এপথে চোরাই গরু আসে শুনেছি। তবে একবার চোরাই গরুর একটা চালান আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ ও আমার সহযোগিতায় বিজিবি এসব চোরাই গরু আটক করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন; এবিষয়ে সীদ্ধান্ত নিতে আমরা একটি সভা করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট স্থানে অভিযান চালানো হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বার্মিজ চোরাই গরু-মহিষে সয়লাব চকরিয়া, যত্রতত্র হাট

আপডেট সময় ১০:০৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৩

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা গরু-মহিষের হাট বসছে যত্রতত্র। উপজেলার মানিকপুর, ফাঁসিয়াখালী ও ডুলাহাজারা ইউনিয়নসহ নানা পথ দিয়ে এসব চোরাই পশু আনা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতাদের দেখভালে নিয়ে যাওয়া হয় বাজারে। চকরিয়ায় স্থরে স্থরে রীতিমতো বসছে মিয়ানমারের পশুর হাট।

চোরাই পথে আসা এসব গবাদিপশুর হাটের কারণে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। স্থানীয় গরুর খামারিরা ব্যবসায়ে সুবিধা করতে না পেরে মুনাফা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। খামারি আলাউদ্দীন বলেন; বেশি দামে খাদ্য কিনে গবাদিপশু লালন-পালন করছি। আমারা বিক্রি করতে গেলে গরুর প্রতি কেজি পাঁচশ ও পড়েনা। কসাইরা সিন্ডিকেট করে মিয়ানমারের চোরাই গরু ক্রয় করে কেজি সাতশ করে বিক্রি করছে। আমরা নিরুপায় হয়ে অর্ধেক মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে আসা গবাদিপশু বাজারে দিন দিন দেশীয় পশুর দাম আরও কমাচ্ছে। যার কারণে লাভ-লোকসান পুষাতে না পেরে এখন গবাদিপশু লালন-পালন বন্ধ করে দিয়েছি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সভা করেছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অবৈধ হাট এবং মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আসা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রাহাত উজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

সুত্রে জানা যায়, গত ঈদুল আজহার আগে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে হাজারো গরু-মহিষ আসে। পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বান্দরবানের আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে। অন্তত অর্ধশতাধিক পথে মিয়ানমারের এসব গবাদিপশু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পাচারের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও জড়িত। মিয়ানমার থেকে এসব গরু-মহিষ এনে চকরিয়ার মানিকপুর বাজার, ফাঁসিয়াখালীর হাঁসের দীঘি ও ডুলাহাজারার রংমহল এলাকায় রাখা হয়।

এসব জায়গা থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভর্তি হাজার হাজার গবাদিপশু দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বিজিবি অভিযান চালিয়ে বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও চকরিয়ার মানিকপুর থেকে শতাধিক গরু-মহিষ জব্দ করে। এ ছাড়া মানিকপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির নিয়ন্ত্রণাধীন তীরডেপা বিজিবি ক্যাম্প ২৫টি গরু জব্দ করে।

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক বলেন, প্রায়ই এপথে চোরাই গরু আসে শুনেছি। তবে একবার চোরাই গরুর একটা চালান আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ ও আমার সহযোগিতায় বিজিবি এসব চোরাই গরু আটক করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন; এবিষয়ে সীদ্ধান্ত নিতে আমরা একটি সভা করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট স্থানে অভিযান চালানো হবে।