ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে উন্নত দেশগুলোকে দায়িত্বশীল হতে হবে

বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোকে দায়িত্বশীল এবং আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। একইসঙ্গে, খাদ্য ও কৃষি উপকরণকে যুদ্ধ ও অবরোধের বাইরে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।  

শনিবার (২১ জানুয়ারি) জার্মানির বার্লিনে ‘১৫তম বার্লিন কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে’ মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (বিএমইএল) আয়োজনে ৪ দিনব্যাপী (১৮-২১ জানুয়ারি) ‘১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (জিএফএফএ) শেষ দিনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশের কৃষিমন্ত্রী ও ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নির্দোষ ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। এ যুদ্ধের ফলে সারের দাম চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, খাদ্যশস্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ও খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলেছে। এ নেতিবাচক প্রভাব নিরসনের জন্য আমি উন্নত বিশ্বকে নমনীয়, সহজ ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

আগামীতে খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে ড. রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার একটি উন্নত, টেকসই ও জলবায়ুসহনশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে, যার মাধ্যমে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই হবে, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত হবে, কৃষকেরা উন্নত জীবন পাবেন। কিন্তু জমি হ্রাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে, কপ২৬, কপ২৭ ও অন্যান্য বৈশ্বিক ফোরামে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উন্নত দেশগুলোকে আমি অনুরোধ করছি।

১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ও কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে জানান হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) অনুযায়ী বৈশ্বিক ক্ষুধা নিরসন (জিরো হাঙ্গার) করার কথা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ক্ষুধায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালে ৭০ কোটি ২০ লাখ থেকে ৮২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়েছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৪ কোটি ৬০ লাখ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ১৫ কোটি বেশি। বর্তমানে বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে খারাপ খাদ্য সংকট পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। প্রজাতি বিলুপ্তি, কোভিড ১৯ আর যুদ্ধ খাদ্যসংকটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে কীভাবে ক্রাইসিস-প্রুফ খাদ্য ব্যবস্থা, জলবায়ুসহনশীল খাদ্য ব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং টেকসই বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহযোগিতা বাড়ান যায়- এই চারটি বিষয়কে সম্মেলনে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ‘ফুড সিস্টেম ট্রান্সফর্মেশন : এ ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেসপন্স টু মাল্টিপল ক্রাইসেস’ শিরোনামে এ সম্মেলনে বিগত চার দিনে অংশগ্রহণকারী দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ও কৃষিমন্ত্রীরা আলোচনা করে একটি ‘যৌথ ইশতেহার’ (কমিউনিক) ঘোষণা করেছেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গুলশান-বাড্ডা এলাকায় তিনজনকে কুপিয়ে বিপুল টাকা-ডলার-ইউরো ছিনতাই

খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে উন্নত দেশগুলোকে দায়িত্বশীল হতে হবে

আপডেট সময় ১২:২৫:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৩

বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোকে দায়িত্বশীল এবং আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। একইসঙ্গে, খাদ্য ও কৃষি উপকরণকে যুদ্ধ ও অবরোধের বাইরে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।  

শনিবার (২১ জানুয়ারি) জার্মানির বার্লিনে ‘১৫তম বার্লিন কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে’ মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (বিএমইএল) আয়োজনে ৪ দিনব্যাপী (১৮-২১ জানুয়ারি) ‘১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (জিএফএফএ) শেষ দিনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশের কৃষিমন্ত্রী ও ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নির্দোষ ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। এ যুদ্ধের ফলে সারের দাম চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, খাদ্যশস্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ও খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলেছে। এ নেতিবাচক প্রভাব নিরসনের জন্য আমি উন্নত বিশ্বকে নমনীয়, সহজ ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

আগামীতে খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে ড. রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার একটি উন্নত, টেকসই ও জলবায়ুসহনশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে, যার মাধ্যমে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই হবে, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত হবে, কৃষকেরা উন্নত জীবন পাবেন। কিন্তু জমি হ্রাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে, কপ২৬, কপ২৭ ও অন্যান্য বৈশ্বিক ফোরামে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উন্নত দেশগুলোকে আমি অনুরোধ করছি।

১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ও কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে জানান হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) অনুযায়ী বৈশ্বিক ক্ষুধা নিরসন (জিরো হাঙ্গার) করার কথা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ক্ষুধায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালে ৭০ কোটি ২০ লাখ থেকে ৮২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়েছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৪ কোটি ৬০ লাখ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ১৫ কোটি বেশি। বর্তমানে বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে খারাপ খাদ্য সংকট পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। প্রজাতি বিলুপ্তি, কোভিড ১৯ আর যুদ্ধ খাদ্যসংকটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে কীভাবে ক্রাইসিস-প্রুফ খাদ্য ব্যবস্থা, জলবায়ুসহনশীল খাদ্য ব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং টেকসই বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহযোগিতা বাড়ান যায়- এই চারটি বিষয়কে সম্মেলনে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ‘ফুড সিস্টেম ট্রান্সফর্মেশন : এ ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেসপন্স টু মাল্টিপল ক্রাইসেস’ শিরোনামে এ সম্মেলনে বিগত চার দিনে অংশগ্রহণকারী দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ও কৃষিমন্ত্রীরা আলোচনা করে একটি ‘যৌথ ইশতেহার’ (কমিউনিক) ঘোষণা করেছেন।