ধারের টাকা পরিশোধ করতে দেরী হওয়ায় বগুড়া শাজাহানপুরে দাদন ব্যবসায়ী কর্তৃক সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর সহ লুটপাটের ঘটনায় গোলাম হোসেন (৪৫) ও নুর হোসেন (৫৭) নামের দুই দাদন ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনার বিবরণ ও থানাসূত্রে জানাগেছে, উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের পালাহার গ্রামের নিবারণ কর্মকারের পুত্র দিলীপ কর্মকার ব্যবসায়ীক কাজের জন্য একই গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী মৃত ইয়াকুব আলীর পুত্র গোলাম হোসেনের নিকট থেকে কয়েক মাস পূর্বে চড়া সুদে কিছু টাকা ধার নেয়। প্রতিমাসে কিস্তি হিসেবে লভ্যাংশের টাকা পরিশোধ করার পর আসল টাকা দিতে দেরী হওয়ায় সুদ ব্যবসায়ী গোলাম ও তার সহযোগী অপর দাদন ব্যবসায়ী নুর হোসেন টাকা পরিশোধের জন্য তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। সুদ-আসলে টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়ায় পরিশোধ করতে না পারায় দিলীপ ভয়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়।
সে সুযোগে বৃহস্পতিবার সকালে গোলাম ও নুর হোসেন এবং তাদের লোকজন দিলীপের বাড়িঘরের তালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, শোকেচ, আলনা, ড্রেসিং টেবিল, খাট, চেয়ার-টেবিল, লেপ-তোষক, হাড়ি-পাতিল, কাপড়-চোপড় সহ সকল আসবাবপত্র বের করে নিয়ে যায়। দিলীপের প্রতিবেশী পরিমলের স্ত্রী যশোদা রাণী জানান, খবর পেয়ে তিনি এগিয়ে গেলে এবং লুটপাটের কারণ জানতে চাইলে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং একথা কাউকে বললে পরিস্থিতি খারাপ হবে বলে হুমকী দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দাদন ব্যবসায়ী গোলাম হোসেন ও তার সহযোগী নুর হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংখ্যালঘু পরিবারের কয়েকজন সদস্য সহ স্থানীয়রা জানান, গোলাম ও নুর হোসেন এলাকার গরীব অসহায় লোকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে টাকা ধার দিয়ে বেকায়দায় ফেলে। পরে নানা কৌশলে ভয়ভীতি দেখিয়ে চড়সুদে তা আদায় করে। কেউ সময়মত টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বাড়ি ভাংচুর করে আসবাবপত্র বের করে নিয়ে আসে। তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ বা মুখ খুলতে সাহস পায় না।
এ বিষয়ে গোহাইল ইউপি’র সাবেক সদস্য শাহীন আলম জানান, তিনি এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। বিষয়টি সম্পর্কে শাজাহানপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা জানার পর গোলাম হোসেন ও নুর হোসেনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।