ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

কুমিল্লা জেলার ঐতিহ্যর সাথে জড়িয়ে আছে ৫৫৩ বছরের নানুয়া দীঘি

শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা প্রাচীন ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে উপমহাদেশে সুপরিচিত। শিক্ষা বিস্তারে প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক-বাহক কুমিল্লা। কুমিল্লা জেলার ঐতিহ্যর সাথে জড়িয়ে আছে ৫৫৩ বছরের নানুয়ার দীঘি। শহরের মুরাদপুরে অবস্থিত এ বিশাল আকারের দীঘিটি। নানুয়া দীঘিকে নগরীর ঐতিহ্যের বাহক বলা হয়ে থাকে।

এ দীঘি ধারণ করে চলেছে কুমিল্লাসহ দেশের অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্য। নানুয়া দীঘির পাড়ে একসময় বসবাস ছিল দেশের বিশিষ্টজনদের। কেউ দীঘিতে গোসল করে, সাঁতার কাটে, পাড়ে হাঁটে, বসে আড্ডা দেয়। দীঘির উত্তর পাড়ে দাঁড়ালে বাতাস দেহমনে দোল দিয়ে যায়। রাতে দীঘির পাড়ের রঙিন আলোয় বর্ণিল পরিবেশের সৃষ্টি করে। কুমিল্লা ত্রিপুরা রাজ্যের অধীনে ছিল। রাজা ধর্মমাণিক্য বাহাদুর তার স্ত্রী নানুয়া দেবীর নামে নানুয়া দীঘি খনন করেন। নানুয়া দীঘির আয়তন ১৬ একর।

এ দীঘির পাড়ের বাসিন্দা জেলার প্রথম গ্রাজুয়েট মোহিনী মোহন দত্ত। তিনিই প্রথম বাংলা ভাষায় আদালতে শুনানির আবেদন জানান। নবীনগরের জমিদার অনঙ্গ নাহারের বাড়ি এখানেই। বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ইকবাল আহমেদ বাচ্চু, প্রয়াত সমবায়ী জাহানারা বেগম, কুমিল্লা জেলা পরিষদের ৩০ বছরের চেয়ারম্যান খান বাহাদুর আবিদুর রেজা চৌধুরীর বাড়ি এখানে। দীঘির পাড়ে বাড়ি লেখক সুলতান মাহমুদ মজুদারের। তার সঙ্গে কবি নজরুলের সম্পর্ক ছিল।

এ পরিবারের সন্তান সাবেক মুখ্য সচিব আলী ইমাম মজুমদার। এর পাড়ের বাসিন্দা প্রয়াত নৌ-পরিবহনমন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেন ও কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। দীঘির পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দা সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফরের পরিবারের সদস্য কাজী ফখরুল আলম।

তিনি জানান, এ দীঘির পাড়ে ১৯৫১ সাল থেকে তার পরিবারের বসবাস। এ দীঘির স্বচ্ছ জলে মিশে আছে তাদের আনন্দঘন শৈশব। সেসব দিন তিনি খুব মিস করেন। বর্তমানে নানুয়া দীঘির পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে ও সকাল বিকেলে হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে করে দেওয়া হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরহানউদ্দিনে খাল পরিস্কার – পরিচ্ছন্নতার অভিযানের উদ্বোধন

কুমিল্লা জেলার ঐতিহ্যর সাথে জড়িয়ে আছে ৫৫৩ বছরের নানুয়া দীঘি

আপডেট সময় ১০:০৭:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৩

শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা প্রাচীন ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে উপমহাদেশে সুপরিচিত। শিক্ষা বিস্তারে প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক-বাহক কুমিল্লা। কুমিল্লা জেলার ঐতিহ্যর সাথে জড়িয়ে আছে ৫৫৩ বছরের নানুয়ার দীঘি। শহরের মুরাদপুরে অবস্থিত এ বিশাল আকারের দীঘিটি। নানুয়া দীঘিকে নগরীর ঐতিহ্যের বাহক বলা হয়ে থাকে।

এ দীঘি ধারণ করে চলেছে কুমিল্লাসহ দেশের অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্য। নানুয়া দীঘির পাড়ে একসময় বসবাস ছিল দেশের বিশিষ্টজনদের। কেউ দীঘিতে গোসল করে, সাঁতার কাটে, পাড়ে হাঁটে, বসে আড্ডা দেয়। দীঘির উত্তর পাড়ে দাঁড়ালে বাতাস দেহমনে দোল দিয়ে যায়। রাতে দীঘির পাড়ের রঙিন আলোয় বর্ণিল পরিবেশের সৃষ্টি করে। কুমিল্লা ত্রিপুরা রাজ্যের অধীনে ছিল। রাজা ধর্মমাণিক্য বাহাদুর তার স্ত্রী নানুয়া দেবীর নামে নানুয়া দীঘি খনন করেন। নানুয়া দীঘির আয়তন ১৬ একর।

এ দীঘির পাড়ের বাসিন্দা জেলার প্রথম গ্রাজুয়েট মোহিনী মোহন দত্ত। তিনিই প্রথম বাংলা ভাষায় আদালতে শুনানির আবেদন জানান। নবীনগরের জমিদার অনঙ্গ নাহারের বাড়ি এখানেই। বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ইকবাল আহমেদ বাচ্চু, প্রয়াত সমবায়ী জাহানারা বেগম, কুমিল্লা জেলা পরিষদের ৩০ বছরের চেয়ারম্যান খান বাহাদুর আবিদুর রেজা চৌধুরীর বাড়ি এখানে। দীঘির পাড়ে বাড়ি লেখক সুলতান মাহমুদ মজুদারের। তার সঙ্গে কবি নজরুলের সম্পর্ক ছিল।

এ পরিবারের সন্তান সাবেক মুখ্য সচিব আলী ইমাম মজুমদার। এর পাড়ের বাসিন্দা প্রয়াত নৌ-পরিবহনমন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেন ও কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। দীঘির পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দা সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফরের পরিবারের সদস্য কাজী ফখরুল আলম।

তিনি জানান, এ দীঘির পাড়ে ১৯৫১ সাল থেকে তার পরিবারের বসবাস। এ দীঘির স্বচ্ছ জলে মিশে আছে তাদের আনন্দঘন শৈশব। সেসব দিন তিনি খুব মিস করেন। বর্তমানে নানুয়া দীঘির পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে ও সকাল বিকেলে হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে করে দেওয়া হয়েছে।