বিএনপি-জামায়াতকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যায়িত করে দল দুটির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। বুধবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর সবুজবাগ বালুর মাঠে দেশব্যাপী ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এ দাবি জানান পরশ।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের আহ্বানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচএম রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘আপনারা এদেশের জনগণকে ভিকটিম বানানোর স্পর্ধা দেখাবেন না। আপনাদের হীন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য এদেশের জনগণ আর ভিকটিম হবে না। জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার যদি ব্যাঘাত ঘটান, তাহলে এদেশের আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা এখনো মাঠে আছে এবং এদেশের জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা তারা রক্ষা করতে জানে। আমাদের সৃষ্টি রাজপথে। মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে করতেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং যুবলীগের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা জানি আপনাদের মতো কুচক্রী মহলকে কীভাবে রাজপথে মোকাবিলা করতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমাদের পুলিশ বাহিনীর ওপর আক্রমণ করেন, তাহলে সেই আক্রমণেরও জবাব দেওয়া হবে। আপনারা এদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন, এই পুলিশ বাহিনীর দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশে আজ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও নির্বাসনে। সুতরাং পুলিশের ওপর আক্রমণ করলে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ও দেশের জনগণ সেটা মেনে নেবে না।’
পরশ আরও বলেন, ‘আপনাদের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করলে থানা আক্রমণের হুমকি দেন। কোনো সভ্য সমাজে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো নাগরিক এ কথা বলতে পারে না। আপনারা কতটা ফ্যাসিস্ট এই ধরনের কথায় তাই প্রমাণ করে। এই উক্তির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন। তার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইন্টারপোলের মোস্ট ওয়ানটেড তালিকাভুক্ত, আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং মামলার আসামি, দুর্নীতির বরপুত্র, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে বলতে চাই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা আপনাদের মতো আদর্শহীন রাজনীতি করে না, আমাদের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী।’ তিনি উপস্থিত যুবলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দশে বলেন, ‘আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন, ধৈর্যশীল থাকবেন। বিএনপি-জামায়াতের কৌশল আমাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে উপস্থাপন করা, ওরা পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করতে চাইবে, আপনারা ওদের ফাঁদে পা দেবেন না। কিন্তু রাজপথে আমরা ছেড়ে দেব না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারিও সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে ঠিক সেই সময় জামায়াত-বিএনপি উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আজকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা সারা দেশে স্বোচ্চার, যুবসমাজ আজ ঐক্যবদ্ধ। জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকে প্রতিহত করতে রাজপথে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে যুবলীগ।’
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান পবন, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী এমপি, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফজেল রাব্বী স্মরণ, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, সহসম্পাদক আবির মাহমুদ ইমরান, মো. আব্দুর রজমান জীবন, ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান, মো. আলমগীর হোসেন শাহ জয়, আহতাসামুল হাসান ভূইয়া রুমি, মো. মনিরুল ইসলাম আকাশ, অ্যাডভোকেট মো. জয়নাল আবেদীন চৌধুরী রিগ্যান, কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর মো. জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট মো. গোলাম কিবরিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মো. শহিদুল ইসলাম লাকি, মো. মুজিবুর রহমান, মো. তারিক আল মামুন, এবিএম আরিফ হোসেন, মো. আরিফুল ইসলাম উজ্জলসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।