ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) থেকে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবারের অনুমোদিত মামলায় মান্নানসহ ১২ জনকে আসামি করা হবে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচার দুদক কার্যালয় থেকে ওই মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন বলে জানা গেছে।
অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন—বিআইএফসি পরিচালক আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, এ এম এম জাহাঙ্গীর আলম, রইস উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দিন আহমেদ ও মিসেস রোকেয়া ফেরদৌস, প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদ মালিক, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুর রহমান, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ফকরে ফয়সাল, সাবেক এভিপি আহমেদ করিম চৌধুরি ও সাবেক সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন এবং মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. আমিনুর রহমান খান।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিকের নামে তিনটি চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে সুদ-আসলে ৮ কোটি ৩৮ লাখ ৮১ হাজার ৭০৫ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এর আগে, গত ১৫ নভেম্বর বিআইএফসি থেকে প্রায় ২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মেজর (অব.) আবদুল মান্নানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। জনৈক সিরাজুল ইসলামকে মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিক দেখিয়ে নিরাপত্তা জামানত ও মর্টগেজ ছাড়াই ১১ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে গ্রাহকের ২৩ কোটি ৮৯ লাখ ৯ হাজার ১২৩ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল ওই মামলায়। সিরাজুল বাদে সবাই আজকের অনুমোদিত মামলার আসামি। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওই মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি সিরাজুল ইসলাম অপর আসামি আহমেদ করিম চৌধুরীর ভাই, যিনি বিআইএফসির এভিপি অ্যান্ড ইউনিট হেড। ঋণগ্রহীতা আসামি সিরাজুল ইসলাম মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের প্রতিষ্ঠান সানম্যান গ্রুপের ডিজিএম। অপর আসামি কোম্পানিটির পরিচালক রইসউদ্দিন মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের শ্যালক এবং পরিচালক উম্মে কুলসুম মান্নানের (মেজর মান্নানের স্ত্রী) ভাই ।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে এর আগেও দুটি মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। মামলাগুলোতে ১৪ কোটি ৩০ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ও ২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।