ঢাকা ০৯:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়া স্মৃতি পদক পেলেন জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজশাহী জেলার সদস্য সচিব গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন জরুরি : যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না তাঁতীলীগের সভাপতি ইকবালের যত কান্ড, জনমনে প্রশ্ন কে এই ইকবাল? সিএমপির পাহাড়তলী থানার মাদক বিরোধী অভিযানে ভুয়া সাংবাদিক ফারুক মাদকসহ গ্রেফতার অন্তর্বতী সরকারের ১শ দিন পার হলেও সচিবালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরের এখনও আওয়ামী লীগের দোসরা বহাল পূর্বাচলে দুর্নীতির রাজত্ব গড়েছেন নায়েব আলী শরীফ ডঃ মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ নবীনবরণ উৎসব ২০২৪ পালিত। মুগদায় ১০ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

সব ভালো কাজে ডানের প্রাধান্য

ইসলামে যাবতীয় উত্তম কাজ ও স্থানে ডানকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবং সব নিম্নমানের কাজ ও স্থানে বামকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর এই সংস্কৃতি মহানবী (সা.)-এর সুন্নত তথা সুমহান আদর্শ। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ডান হাত ছিল পবিত্রতা অর্জন ও খাদ্য গ্রহণের জন্য। আর তাঁর বাম হাত ছিল শৌচ ও অন্য নিকৃষ্ট বা কষ্টদায়ক কাজের জন্য। (আবু দাউদ, আয়াত : ৩৩)

ঘরে কিংবা মজলিসে খাদ্য বিতরণ ও সভা-সমাবেশে কোনো কিছু বিতরণের ক্ষেত্রে ডান দিক থেকে শুরু করতে হবে। কারণ ডান দিক থেকে শুরু করা সুন্নত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ডান দিকের ব্যক্তিদের (অগ্রাধিকার), ডান দিকের ব্যক্তিদের (অগ্রাধিকার)। শোনো! ডান দিক থেকেই শুরু করবে। ’ (বুখারি, হাদিস : ২৫৭১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি খাবার গ্রহণ করতে চায় সে যেন ডান হাতে খায়। পান করতে চাইলে যেন ডান হাতে পান করে। কারণ শয়তান বাম হাতে খায়, বাম হাতে পান করে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২০২০)

নবী (সা.) সব কিছুতে ডান পছন্দ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) জুতা-সেন্ডেল পরা, চুল আঁচড়ানো, পবিত্রতা অর্জন করা এবং প্রত্যেক কাজই ডান দিক থেকে করতে পছন্দ করতেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৬৯)

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘এটি ইসলামের একটি চলমান মূলনীতি যে সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে ডান (হাত ও পা) ব্যবহার করা মুস্তাহাব। যেমন জামা, পায়জামা ও জুতা পরিধান করা, মসজিদে প্রবেশ করা, মিসওয়াক ব্যবহার করা, খাওয়াদাওয়া করা, মুসাফাহা করা, হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা ইত্যাদি। আর এর বিপরীত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে বাম (হাত বা পা) ব্যবহার করা মুস্তাহাব। যেমন টয়লেটে প্রবেশ করা, মসজিদ থেকে বের হওয়া, নাক পরিষ্কার করা, শৌচকার্য করা, জামা-কাপড়, পায়জামা, মোজা ইত্যাদি খোলা। এটি ডানের মর্যাদা ও সম্মানের স্বার্থে। ’

ইসলামী সংস্কৃতিতে সব ভালো কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়ার হিকমত হলো :

১. পানাহারে ডান হাত ব্যবহার করার দ্বারা শয়তানের বিরোধিতা করা হয়। কেননা শয়তান বাম হাতে পানাহার করে।

২. ইসলামে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়ার মাধ্যমে বাম হাতের চেয়ে ডান হাতের মর্যাদা প্রমাণিত হয়।

৩. ডান দিকের ব্যবহার আদব ও শিষ্টাচারের অন্তর্ভুক্ত। কেননা, সাধারণভাবে হাত মেলানো এবং কাউকে কোনো কিছু দেওয়ার ক্ষেত্রে ডান হাতের ব্যবহার ভদ্রতা ও শিষ্টাচার বলে স্বীকৃত।

৪. সব কাজে ডান দিকের ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে এই শুভকামনা করা হয় যে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ ডানপন্থী হিসেবে কবুল করবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

‘ডান দিকের দল; কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল! এবং বাম দিকের দল; কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! আর অগ্রবর্তীরাই তো অগ্রবর্তী, তারাই নৈকট্যপ্রাপ্ত—নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে। ’ (সুরা : ওয়াকিয়া, আয়াত : ৮-১২)

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল

সব ভালো কাজে ডানের প্রাধান্য

আপডেট সময় ১১:২৩:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

ইসলামে যাবতীয় উত্তম কাজ ও স্থানে ডানকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবং সব নিম্নমানের কাজ ও স্থানে বামকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর এই সংস্কৃতি মহানবী (সা.)-এর সুন্নত তথা সুমহান আদর্শ। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ডান হাত ছিল পবিত্রতা অর্জন ও খাদ্য গ্রহণের জন্য। আর তাঁর বাম হাত ছিল শৌচ ও অন্য নিকৃষ্ট বা কষ্টদায়ক কাজের জন্য। (আবু দাউদ, আয়াত : ৩৩)

ঘরে কিংবা মজলিসে খাদ্য বিতরণ ও সভা-সমাবেশে কোনো কিছু বিতরণের ক্ষেত্রে ডান দিক থেকে শুরু করতে হবে। কারণ ডান দিক থেকে শুরু করা সুন্নত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ডান দিকের ব্যক্তিদের (অগ্রাধিকার), ডান দিকের ব্যক্তিদের (অগ্রাধিকার)। শোনো! ডান দিক থেকেই শুরু করবে। ’ (বুখারি, হাদিস : ২৫৭১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি খাবার গ্রহণ করতে চায় সে যেন ডান হাতে খায়। পান করতে চাইলে যেন ডান হাতে পান করে। কারণ শয়তান বাম হাতে খায়, বাম হাতে পান করে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২০২০)

নবী (সা.) সব কিছুতে ডান পছন্দ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) জুতা-সেন্ডেল পরা, চুল আঁচড়ানো, পবিত্রতা অর্জন করা এবং প্রত্যেক কাজই ডান দিক থেকে করতে পছন্দ করতেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৬৯)

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘এটি ইসলামের একটি চলমান মূলনীতি যে সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে ডান (হাত ও পা) ব্যবহার করা মুস্তাহাব। যেমন জামা, পায়জামা ও জুতা পরিধান করা, মসজিদে প্রবেশ করা, মিসওয়াক ব্যবহার করা, খাওয়াদাওয়া করা, মুসাফাহা করা, হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা ইত্যাদি। আর এর বিপরীত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে বাম (হাত বা পা) ব্যবহার করা মুস্তাহাব। যেমন টয়লেটে প্রবেশ করা, মসজিদ থেকে বের হওয়া, নাক পরিষ্কার করা, শৌচকার্য করা, জামা-কাপড়, পায়জামা, মোজা ইত্যাদি খোলা। এটি ডানের মর্যাদা ও সম্মানের স্বার্থে। ’

ইসলামী সংস্কৃতিতে সব ভালো কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়ার হিকমত হলো :

১. পানাহারে ডান হাত ব্যবহার করার দ্বারা শয়তানের বিরোধিতা করা হয়। কেননা শয়তান বাম হাতে পানাহার করে।

২. ইসলামে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়ার মাধ্যমে বাম হাতের চেয়ে ডান হাতের মর্যাদা প্রমাণিত হয়।

৩. ডান দিকের ব্যবহার আদব ও শিষ্টাচারের অন্তর্ভুক্ত। কেননা, সাধারণভাবে হাত মেলানো এবং কাউকে কোনো কিছু দেওয়ার ক্ষেত্রে ডান হাতের ব্যবহার ভদ্রতা ও শিষ্টাচার বলে স্বীকৃত।

৪. সব কাজে ডান দিকের ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে এই শুভকামনা করা হয় যে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ ডানপন্থী হিসেবে কবুল করবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

‘ডান দিকের দল; কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল! এবং বাম দিকের দল; কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! আর অগ্রবর্তীরাই তো অগ্রবর্তী, তারাই নৈকট্যপ্রাপ্ত—নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে। ’ (সুরা : ওয়াকিয়া, আয়াত : ৮-১২)