ঢাকা ০১:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিঠাপুকুরের আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামি সার্ভেয়ার বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে মিঠাপুকুরের বহু আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামি সার্ভেয়ার রুহুল আমিন বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
উল্লেখ্য অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ফুল সংগ্রহ করতে যাওয়া চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণকারী রুহুল আমিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারিক আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রংপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায় এ আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, শিশুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে সকালে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রুহুল আমিনের (৫৫) বাড়িতে ফুল কুড়াতে যায়। রুহুল আমিন পেশায় সার্ভেয়ার। তার পুরো পরিবার ঢাকায় থাকে। শিশুটি যখন তাদের বাড়ির বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করতে যায় তখন তাকে জোর করে ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির চিৎকারে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়িতে যাওয়া কয়েকজন মুসল্লি রুহুল আমিনের বাড়িতে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।

এদিকে শিশুটি বাসায় এসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে মিঠাপুকুর থানায় এবং পরে ওই দিন দুপুরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে যায়। এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন আছে শিশুটি। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর ২২ দিনেও আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

ধর্ষণের প্রতিবাদে মিঠাপুকুরে ও রংপুরে বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সভা সমাবেশ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। ২২ দিন পর বৃহস্পতিবার রুহুল আমিন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপনে রংপুরের জুডিশিয়াল আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর  আদেশ দেন। জনরোষ এড়াতে আসামিকে তাৎক্ষণিক কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফিরোজ কবীর নিয়ন দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে নিশ্চিত করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আত্মসমর্পণ করেছেন বিজ্ঞ বিচারিক আদালতে জামিনের আবেদন করেছে। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর  আদেশ দিয়েছেন।

অন্যদিকে সরকার পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী আফতাব উদ্দিন বলেন,এটি, একটি জঘন্য পৈশাচিক ঘটনা। ৯ বছরের শিশু অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফুল আনতে গিয়েছিল,সার্ভেয়ার রুহুল আমিন বাড়িতে শিশুটিকে একা পেয়ে জোর করে ঘরের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। শিশুটি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। চাঞ্চল্যকর মামলাটি সম্পর্কে মনিটরিং করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা করেন তিনি।

অন্যদিকে মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের নিমিত্বে আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিঠাপুকুরের আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামি সার্ভেয়ার বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ

আপডেট সময় ০৭:৫৪:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে মিঠাপুকুরের বহু আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামি সার্ভেয়ার রুহুল আমিন বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
উল্লেখ্য অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ফুল সংগ্রহ করতে যাওয়া চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণকারী রুহুল আমিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারিক আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রংপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায় এ আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, শিশুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে সকালে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রুহুল আমিনের (৫৫) বাড়িতে ফুল কুড়াতে যায়। রুহুল আমিন পেশায় সার্ভেয়ার। তার পুরো পরিবার ঢাকায় থাকে। শিশুটি যখন তাদের বাড়ির বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করতে যায় তখন তাকে জোর করে ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির চিৎকারে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়িতে যাওয়া কয়েকজন মুসল্লি রুহুল আমিনের বাড়িতে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।

এদিকে শিশুটি বাসায় এসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে মিঠাপুকুর থানায় এবং পরে ওই দিন দুপুরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে যায়। এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন আছে শিশুটি। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর ২২ দিনেও আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

ধর্ষণের প্রতিবাদে মিঠাপুকুরে ও রংপুরে বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সভা সমাবেশ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। ২২ দিন পর বৃহস্পতিবার রুহুল আমিন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপনে রংপুরের জুডিশিয়াল আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর  আদেশ দেন। জনরোষ এড়াতে আসামিকে তাৎক্ষণিক কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফিরোজ কবীর নিয়ন দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে নিশ্চিত করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আত্মসমর্পণ করেছেন বিজ্ঞ বিচারিক আদালতে জামিনের আবেদন করেছে। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর  আদেশ দিয়েছেন।

অন্যদিকে সরকার পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী আফতাব উদ্দিন বলেন,এটি, একটি জঘন্য পৈশাচিক ঘটনা। ৯ বছরের শিশু অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফুল আনতে গিয়েছিল,সার্ভেয়ার রুহুল আমিন বাড়িতে শিশুটিকে একা পেয়ে জোর করে ঘরের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। শিশুটি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। চাঞ্চল্যকর মামলাটি সম্পর্কে মনিটরিং করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা করেন তিনি।

অন্যদিকে মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের নিমিত্বে আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।