ঢাকা ০১:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুকুর আতঙ্কে কয়রাবাসী, আহত অন্তত ১৯

খুলনার কয়রা উপজেলা সদরে এক পাগলা কুকুরের আতঙ্কে আছে কয়রাবাসী। এলাকার পাগলা কুকুরের কামড়ে একই পরিবারের তিনজন নারী শিশু সহ অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছে।

কুকুরটি ৯ মার্চ রবিবার সন্ধ্যা থেকে ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলা সদরের হাই স্কুলের মোড় এলাকা থেকে মধুর মোড় পর্যন্ত এবং আটরা, দশালিয়া, গোবিন্দপুর এলাকার নারী শিশু পথচারী সহ যাকেই পেয়েছে তাকেই হামলা করে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ সদরের বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা হলেন, কয়রা সদরের আব্দুল গফুর (৫৫) আব্দুল হান্নান (৩২), শিমুল হোসেন (৪০) আহাতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া হাই স্কুলের মোড় এলাকার বাসিন্দা একই পরিবারের মা নাসিমা বেগম (৩৫), পুত্র সজীব (১৩) ও শিশু কন্যা আছুফা (৩)। উপজেলা সদরের আব্দুর রউফ সানার পুত্র সিয়াম (১২), মদিনা-বাদ গ্রামের ভ্যানচালক নিতাই (৪০), আটরা গ্রামের শাহানূর (৫২), আবুল গাজী (৬০), শারমিন আক্তার (৩২), দশহালিয়া গ্রামের নুরুন্নাহার (৩৫), গোবিন্দপুর গ্রামের মিম আক্তার সহ ১৯জন। পাগলা কুকুরটি একই সময়ে কয়রা মদিনা বাদ সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দুটি ছাগল কামড় দিয়ে হত্যা করে।
কয়রা সদরের স্থানীয় চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন বলেন, ছয় সাত জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা সহ প্রত্যেকের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসক আমিরুল ইসলামের কাছেও কয়েকজন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে গ্রামবাসী তাৎক্ষণিক কুকুরটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের মাগফুরাজ হোসেন জানান, আমার চাচি নাসিমা বেগম ইফতারের পরপরই দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘরের ভিতরে ভাত খাচ্ছিলেন ভাত খাওয়া শেষ হতেই আচমকা একটি কুকুর ঘরের ভিতরে ঢুকে তিনজনের ওপর হামলা করে। এসময় তাদের চিৎকারে আমরা বাড়ির সকল মানুষ একত্রিত হয়ে তাড়া করলে দৌড়ে বাজারের ভিতরে ঢুকে যায় এ সময় আরো অনেককে কামড়ে দেয়।

স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী মোঃ লিটন হাওলাদার বলেন, কয়রা সদরে অন্তত এ ধরনের ১০-১৫ টি বেয়ারিশ কুকুর প্রতিনিয়ত ঘোরাফেরা করে থাকে। হঠাৎ করে কার উপরে হামলা করে বসে এই আতঙ্কে এলাকাবাসী ও অভিভাবকবৃন্দ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিশুদের নিয়ে, বাজার সংলগ্ন সদরের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্ডেন সহ বিভিন্ন বিদ্যাপীঠে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মহলে।

উপজেলার আটরা গ্রামের শাহানূর আলম বলেন, ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার আমাকে পাগলা কুকুরে কামড়ালে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ভ্যাকসিন না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নি‌য়ে সাতক্ষীরা সরকারী হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আমারা আহত ৪ ব্যক্তির চিকিৎসা দিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ দেখিনা। হঠাৎ একটি মাত্র কুকুরেই কয়েকজনকে কামড়ে দিয়েছে এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা যেতে পারে। সাধারণত ভাদ্র- আশ্বিন মাসে কুকুরের এই আচরণ দেখা দেয়। তবে কুকুরের এ ধরনের আচরণ পুনরায় দেখা গেলে আমাকে জানালে আমি উপজেলা পরিষদের সাথে সমন্বয় করে কিছু করা যেতে পারে।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন থাকেনা। ভ্যাকসিন জেলা সদরেই থাকে। প্রয়োজন হলে জেলা সদর থেকে আনাতে হয়। যদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিনের সরবরাহ করা হয় তাহলে রোগীদের কষ্ট ভোগ করতে হবেনা।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কুকুর আতঙ্কে কয়রাবাসী, আহত অন্তত ১৯

আপডেট সময় ০৭:৩৫:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

খুলনার কয়রা উপজেলা সদরে এক পাগলা কুকুরের আতঙ্কে আছে কয়রাবাসী। এলাকার পাগলা কুকুরের কামড়ে একই পরিবারের তিনজন নারী শিশু সহ অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছে।

কুকুরটি ৯ মার্চ রবিবার সন্ধ্যা থেকে ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলা সদরের হাই স্কুলের মোড় এলাকা থেকে মধুর মোড় পর্যন্ত এবং আটরা, দশালিয়া, গোবিন্দপুর এলাকার নারী শিশু পথচারী সহ যাকেই পেয়েছে তাকেই হামলা করে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ সদরের বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা হলেন, কয়রা সদরের আব্দুল গফুর (৫৫) আব্দুল হান্নান (৩২), শিমুল হোসেন (৪০) আহাতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া হাই স্কুলের মোড় এলাকার বাসিন্দা একই পরিবারের মা নাসিমা বেগম (৩৫), পুত্র সজীব (১৩) ও শিশু কন্যা আছুফা (৩)। উপজেলা সদরের আব্দুর রউফ সানার পুত্র সিয়াম (১২), মদিনা-বাদ গ্রামের ভ্যানচালক নিতাই (৪০), আটরা গ্রামের শাহানূর (৫২), আবুল গাজী (৬০), শারমিন আক্তার (৩২), দশহালিয়া গ্রামের নুরুন্নাহার (৩৫), গোবিন্দপুর গ্রামের মিম আক্তার সহ ১৯জন। পাগলা কুকুরটি একই সময়ে কয়রা মদিনা বাদ সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দুটি ছাগল কামড় দিয়ে হত্যা করে।
কয়রা সদরের স্থানীয় চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন বলেন, ছয় সাত জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা সহ প্রত্যেকের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসক আমিরুল ইসলামের কাছেও কয়েকজন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে গ্রামবাসী তাৎক্ষণিক কুকুরটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের মাগফুরাজ হোসেন জানান, আমার চাচি নাসিমা বেগম ইফতারের পরপরই দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘরের ভিতরে ভাত খাচ্ছিলেন ভাত খাওয়া শেষ হতেই আচমকা একটি কুকুর ঘরের ভিতরে ঢুকে তিনজনের ওপর হামলা করে। এসময় তাদের চিৎকারে আমরা বাড়ির সকল মানুষ একত্রিত হয়ে তাড়া করলে দৌড়ে বাজারের ভিতরে ঢুকে যায় এ সময় আরো অনেককে কামড়ে দেয়।

স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী মোঃ লিটন হাওলাদার বলেন, কয়রা সদরে অন্তত এ ধরনের ১০-১৫ টি বেয়ারিশ কুকুর প্রতিনিয়ত ঘোরাফেরা করে থাকে। হঠাৎ করে কার উপরে হামলা করে বসে এই আতঙ্কে এলাকাবাসী ও অভিভাবকবৃন্দ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিশুদের নিয়ে, বাজার সংলগ্ন সদরের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্ডেন সহ বিভিন্ন বিদ্যাপীঠে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মহলে।

উপজেলার আটরা গ্রামের শাহানূর আলম বলেন, ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার আমাকে পাগলা কুকুরে কামড়ালে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ভ্যাকসিন না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নি‌য়ে সাতক্ষীরা সরকারী হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আমারা আহত ৪ ব্যক্তির চিকিৎসা দিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ দেখিনা। হঠাৎ একটি মাত্র কুকুরেই কয়েকজনকে কামড়ে দিয়েছে এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা যেতে পারে। সাধারণত ভাদ্র- আশ্বিন মাসে কুকুরের এই আচরণ দেখা দেয়। তবে কুকুরের এ ধরনের আচরণ পুনরায় দেখা গেলে আমাকে জানালে আমি উপজেলা পরিষদের সাথে সমন্বয় করে কিছু করা যেতে পারে।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন থাকেনা। ভ্যাকসিন জেলা সদরেই থাকে। প্রয়োজন হলে জেলা সদর থেকে আনাতে হয়। যদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিনের সরবরাহ করা হয় তাহলে রোগীদের কষ্ট ভোগ করতে হবেনা।