ঢাকা ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
অবৈধ ভাবে গোয়াইনঘাট নদীর পার থেকে গড়ে তোলা হচ্ছে ভবন জুলাই অভ্যুত্থানে শাহবাগের সবচেয়ে বড় মিছিল ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের – বাকের সাদ্দাম-ইনানসহ ঢাবি থেকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১২৮ জন বহিষ্কার জাবির ৬ নং ছাত্র হল প্রশাসনের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত জবির দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করল ঢাবি কুবিতে নোয়াখালী ছাত্রকল্যাণ পরিষদের দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গফরগাঁয়ে মাটিকাটা নিয়ে যুবদলের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব, নিহত ১ একাত্তরে আমরা স্বাধীন হয়েছি, কিন্তু স্বাধীনতা পাইনি -আমির ডা. তাহের নারায়ণগঞ্জে মাদক নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা কেশবপুর খ্রিস্টান মিশন থেকে তিন পাহাড়ি মেয়েকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী 

উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতায় ফ্যাসিস্টের দোসর ববি রেজিস্ট্রার স্বপদে পুনর্বহাল

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন নিজের স্বার্থে স্বেচ্ছাচারিভাবে নিয়মের তোয়াক্কা না করে মেয়াদ শেষেও স্বপদে বহাল রেখেছে ফ্যাসিস্টের দোসর রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিলো রেজিস্ট্রারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের মুক্ত করা। কিন্তু উপাচার্য উল্টো দোসরদের বারংবার পুর্নবাসন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে এমনটা অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ৮৭ তম সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতে সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেট স্থগিতসহ আরও ৫টি দাবি জানিয়ে গতকাল বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয় তালাবদ্ধ করেন।

নৈতিক স্খলন ও নারী কেলেঙ্কারির দায়ে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল তাঁকে চাকরিচ্যুত করেছিলেন তৎকালীন উপাচার্য ইমামুল হক।

জানা গেছে, রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে এক অফিস আদেশ জারি করে স্বৈরাচারের দোসর রেজিস্ট্রারকে স্বপদে পুনর্বহাল রেখেছেন। উপাচার্যের একান্ত সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নির্বাহী আদেশে রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষেও পিআরএল বাতিল করে তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। এতে করে মেয়াদ শেষেও বহাল তবিয়তে সরকারি সুযোগ সুবিধায় ভোগ করছেন ও অফিস করছেন আওয়ামী দোসর মনিরুল ইসলাম ।

উপাচার্য তার হাতের পুতুল করে রাখতেই রেজিস্ট্রারকে এমনভাবে স্বপদে বহাল রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কয়েকজন শিক্ষক। উপচার্য রেজিস্ট্রারকে দিয়ে যা ইচ্ছা খুশি নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষক কর্মকর্তাদের হুমকি ভয়ভীতি দিয়ে একের পর এক প্রজ্ঞাপন জারি করাচ্ছেন। ননির পুতুলের মতো রেজিস্ট্রার উপাচার্যকে খুশি রাখতে সেইসব চিঠি ও অফিস আদেশ জারি করছেন বলে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বড় একটি অংশ অভিযোগ করছেন। মেয়েদ শেষেও এমন চিঠি ও অফিস আদেশে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নিয়ে পরবর্তীতে আইনি জটিতলা সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদ।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মামুন অর রশিদ বলেন, “রেজিস্ট্রার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অবসরে গেছেন। কিন্তু এখনো তিনি রেজিস্ট্রারের সকল দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা আগের মতোই ভোগ করছেন।

তিনি আরও বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে, মনিরুল ইসলামকে আবার রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালনের আদেশ দিতেই পারেন।
কিন্তু সেই আদেশের অনুলিপি প্রশাসনে পাঠাতে হবে। কিন্তু রেজিস্ট্রারের নিয়োগ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোন অফিস আদেশ পাইনি। তাই কিভাবে এখনো তিনি রেজিস্ট্রার পদে বহাল রয়েছেন, তা আমি অবগত নই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষেও এখনো কেন রাখা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক দিক বিবেচনায় তাকে রাখা হয়েছে তাকে চুক্তিভিত্তিক কোন নিয়োগ দেয়া হয়নি।”

অবসরে গ্রহনের কথা স্বীকার করে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, “উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন আমার পিআরএল স্থগিত করে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন৷ সেই আদেশ অনুযায়িই নিয়েই রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছি। সিন্ডিকেটের সভায় অনুমোদন পেলেই সকলকে অফিস আদেশ দেওয়া হবে বলে জানান মনিরুল। সিন্ডিকেটের সভায় আপনার নিয়োগ যদি বাতিল হয়, সে ক্ষেত্রে আবার স্বাক্ষরিত সকল আদেশই বাতিল হয়ে যাবে। তখন এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন উপাচার্য সেক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টির সুযোগ নেই।”

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম রাব্বানি বলেন, অবসরে যাওয়া মনিরুল ইসলামকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন অফিস আদেশ জারি করিয়ে নিচ্ছেন উপাচার্য। উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে নিজের মতো ব্যবহার করতেই তাঁর মেয়াদ শেষেও স্বপদে বহাল রেখেছেন বলে জানান উপ-উপাচার্য।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অবৈধ ভাবে গোয়াইনঘাট নদীর পার থেকে গড়ে তোলা হচ্ছে ভবন

উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতায় ফ্যাসিস্টের দোসর ববি রেজিস্ট্রার স্বপদে পুনর্বহাল

আপডেট সময় ১২:৩৯:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন নিজের স্বার্থে স্বেচ্ছাচারিভাবে নিয়মের তোয়াক্কা না করে মেয়াদ শেষেও স্বপদে বহাল রেখেছে ফ্যাসিস্টের দোসর রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিলো রেজিস্ট্রারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের মুক্ত করা। কিন্তু উপাচার্য উল্টো দোসরদের বারংবার পুর্নবাসন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে এমনটা অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ৮৭ তম সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতে সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেট স্থগিতসহ আরও ৫টি দাবি জানিয়ে গতকাল বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয় তালাবদ্ধ করেন।

নৈতিক স্খলন ও নারী কেলেঙ্কারির দায়ে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল তাঁকে চাকরিচ্যুত করেছিলেন তৎকালীন উপাচার্য ইমামুল হক।

জানা গেছে, রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে এক অফিস আদেশ জারি করে স্বৈরাচারের দোসর রেজিস্ট্রারকে স্বপদে পুনর্বহাল রেখেছেন। উপাচার্যের একান্ত সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নির্বাহী আদেশে রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষেও পিআরএল বাতিল করে তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। এতে করে মেয়াদ শেষেও বহাল তবিয়তে সরকারি সুযোগ সুবিধায় ভোগ করছেন ও অফিস করছেন আওয়ামী দোসর মনিরুল ইসলাম ।

উপাচার্য তার হাতের পুতুল করে রাখতেই রেজিস্ট্রারকে এমনভাবে স্বপদে বহাল রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও কয়েকজন শিক্ষক। উপচার্য রেজিস্ট্রারকে দিয়ে যা ইচ্ছা খুশি নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষক কর্মকর্তাদের হুমকি ভয়ভীতি দিয়ে একের পর এক প্রজ্ঞাপন জারি করাচ্ছেন। ননির পুতুলের মতো রেজিস্ট্রার উপাচার্যকে খুশি রাখতে সেইসব চিঠি ও অফিস আদেশ জারি করছেন বলে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বড় একটি অংশ অভিযোগ করছেন। মেয়েদ শেষেও এমন চিঠি ও অফিস আদেশে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নিয়ে পরবর্তীতে আইনি জটিতলা সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদ।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মামুন অর রশিদ বলেন, “রেজিস্ট্রার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অবসরে গেছেন। কিন্তু এখনো তিনি রেজিস্ট্রারের সকল দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা আগের মতোই ভোগ করছেন।

তিনি আরও বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে, মনিরুল ইসলামকে আবার রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালনের আদেশ দিতেই পারেন।
কিন্তু সেই আদেশের অনুলিপি প্রশাসনে পাঠাতে হবে। কিন্তু রেজিস্ট্রারের নিয়োগ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোন অফিস আদেশ পাইনি। তাই কিভাবে এখনো তিনি রেজিস্ট্রার পদে বহাল রয়েছেন, তা আমি অবগত নই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষেও এখনো কেন রাখা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক দিক বিবেচনায় তাকে রাখা হয়েছে তাকে চুক্তিভিত্তিক কোন নিয়োগ দেয়া হয়নি।”

অবসরে গ্রহনের কথা স্বীকার করে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, “উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন আমার পিআরএল স্থগিত করে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন৷ সেই আদেশ অনুযায়িই নিয়েই রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছি। সিন্ডিকেটের সভায় অনুমোদন পেলেই সকলকে অফিস আদেশ দেওয়া হবে বলে জানান মনিরুল। সিন্ডিকেটের সভায় আপনার নিয়োগ যদি বাতিল হয়, সে ক্ষেত্রে আবার স্বাক্ষরিত সকল আদেশই বাতিল হয়ে যাবে। তখন এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন উপাচার্য সেক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টির সুযোগ নেই।”

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম রাব্বানি বলেন, অবসরে যাওয়া মনিরুল ইসলামকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন অফিস আদেশ জারি করিয়ে নিচ্ছেন উপাচার্য। উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে নিজের মতো ব্যবহার করতেই তাঁর মেয়াদ শেষেও স্বপদে বহাল রেখেছেন বলে জানান উপ-উপাচার্য।