ঢাকা ০১:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তলব

ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েও নার্সিং ইনস্টিটিউট ব্যবসা নিলুফার ইয়াসমিনের

শর্ত পূরণ ছাড়াই ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেওয়া, সরকারি চাকরিতে থেকে নার্সিং ইনস্টিউিট ব্যবসাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার নিলুফার ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের শুনানির জন্য আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি নিলুফার ইয়াসমিনকে সচিবালয়ে তলব করেছে। মন্ত্রণালায়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শাহ নুসরাত জাহান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ‘বৈষম্যবিরোধী নার্সিং সংস্কার পরিষদ’ বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিলুফার ইয়াসমিনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের কপিসহ আরও কিছু তথ্য যুগান্তরের কাছে এসেছে।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদ পূরণে ২০১৯ সালে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীকে কোনো নার্সিং ইনস্টিটিউটে ১৫ বছর শিক্ষকতা এবং প্রশাসনিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। তবে নিলুফার ইয়াসমিন নিয়োগের শর্ত পূরণ করতে পারেননি। এমনকি ওই নিয়োগ পরীক্ষায় জান্নাতুল ফেরদৌস নামে একজন প্রার্থী প্রথম হন। রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে তাকে নিয়োগ না দিয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলুফার ইয়াসমিন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানকের সুপারিশে নিয়োগ পান।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, নিলুফার ইয়াসমিন ঢাকায় ৫টি ফ্ল্যাট, ভারতে বাড়ি এবং একাধিক গাড়ির মালিক। তিনি নিয়মবহিভূতভাবে নতুন নার্সিং কলেজ অনুমোদনের জন্য ২৫ লাখ এবং নবায়নের জন্য ৫ লাখ করে অর্থ নিয়ে থাকেন। এভাবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে ব্যাংক একাউন্টে অবৈধ টাকা জমা ভারতে পাচার করছেন। নিলুফার পদ ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেছেন। এমনকি কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন ইনস্টিটিউটকে সুবিধা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় তার এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, জুলাই অভ্যুত্থানের পর তার এ অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তবে তিনি নানাভাবে কমিটিকে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন।

এসব অভিযোগ ও শুনানির বিষয়ে নিলুফার ইয়সমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোনকল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তলব

ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েও নার্সিং ইনস্টিটিউট ব্যবসা নিলুফার ইয়াসমিনের

আপডেট সময় ১১:১৪:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শর্ত পূরণ ছাড়াই ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেওয়া, সরকারি চাকরিতে থেকে নার্সিং ইনস্টিউিট ব্যবসাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার নিলুফার ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের শুনানির জন্য আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি নিলুফার ইয়াসমিনকে সচিবালয়ে তলব করেছে। মন্ত্রণালায়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শাহ নুসরাত জাহান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ‘বৈষম্যবিরোধী নার্সিং সংস্কার পরিষদ’ বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিলুফার ইয়াসমিনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের কপিসহ আরও কিছু তথ্য যুগান্তরের কাছে এসেছে।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদ পূরণে ২০১৯ সালে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীকে কোনো নার্সিং ইনস্টিটিউটে ১৫ বছর শিক্ষকতা এবং প্রশাসনিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। তবে নিলুফার ইয়াসমিন নিয়োগের শর্ত পূরণ করতে পারেননি। এমনকি ওই নিয়োগ পরীক্ষায় জান্নাতুল ফেরদৌস নামে একজন প্রার্থী প্রথম হন। রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে তাকে নিয়োগ না দিয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলুফার ইয়াসমিন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানকের সুপারিশে নিয়োগ পান।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, নিলুফার ইয়াসমিন ঢাকায় ৫টি ফ্ল্যাট, ভারতে বাড়ি এবং একাধিক গাড়ির মালিক। তিনি নিয়মবহিভূতভাবে নতুন নার্সিং কলেজ অনুমোদনের জন্য ২৫ লাখ এবং নবায়নের জন্য ৫ লাখ করে অর্থ নিয়ে থাকেন। এভাবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে ব্যাংক একাউন্টে অবৈধ টাকা জমা ভারতে পাচার করছেন। নিলুফার পদ ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেছেন। এমনকি কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন ইনস্টিটিউটকে সুবিধা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় তার এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, জুলাই অভ্যুত্থানের পর তার এ অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তবে তিনি নানাভাবে কমিটিকে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন।

এসব অভিযোগ ও শুনানির বিষয়ে নিলুফার ইয়সমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোনকল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি।